somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

সোহানী
হাজার হাজার অসাধারন লেখক+ব্লগারের মাঝে আমি এক ক্ষুদ্র ব্লগার। পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া লেখালেখির গুণটা চালিয়ে যাচ্ছি ব্লগ লিখে। যখন যা দেখি, যা মনে দাগ কাটে তা লিখি এই ব্লগে। আমার ফেসবুক এড্রেস: https://www.facebook.com/sohani2018/

আমার নিকটতম প্রতিবেশীরা..................... পর্ব-৩

০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১০:৪৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

দু:খিত এটি ডিস্ক্লেইমার পর্ব.... মানে মােটামুটি সকল পাঠক আমার এ পর্বগুলোকে পজিটিভলি নিলেও কিছু পাঠক অভিযোগ করেছেন যে আমি বিদেশের মাটির ভাত খেয়েও কোমরে গামছা বেধেঁ তাদের বদনাম করতে বসেছি। তাই আজকের পর্ব শুধু পজিটিভ বিষয় নিয়ে লিখছি... নো নেগেটিভ বকবকানী। ভাইরে সাধে কি আর এতো কথা বলি .... এমনিতেই আমরা বিদেশর নাম শুনলেই জমি-জমা বেচেঁ, তেলের ব্যারেলের ভীতর, দিনে পর দিন না খেয়ে না দেয়ে, মরুভুমি, সাগর, গুলি, সাপ, বাঘ কিছুই ভয় না পেয়ে ঝাঁপিয়ে পরি। তার উপর যদি রাত দিন নিজের দেশের বদনাম আর পরের দেশের সুনাম করতে থাকি তাহলেতো যারা একটু আকটু দেশে ভালো আছে তারাও থাকতে চাইবে না.......... কাঁথা কম্বল বেচেঁ চলে আসতে চাইবে............

ইউরোপ আমেরিকা মানেই সবকিছু ভালো তা কি ঠিক....... মিলিয়ন ডলার কোয়েশ্চান......... আসলে উন্নত বিশ্ব অনেক পরীক্ষা নীরিক্ষার পর আজকে তারা এ পর্যায়ে এসেছে আর তারা। আর এ পরীক্ষা নীরিক্ষার করতে পেরেছে কারন তাদের আছে অগাধ সম্পদ, অল্প কিছু জন-সাধারন আর নি:স্বার্থ, নির্লোভ কিছু জ্ঞানী মানুষ। আর অপর দিকে আমাদের আছে অল্প কিছু সম্পদ, অসংখ্য জন-সাধারন, অনেক অনেক লোভী, দূর্নীতিবাজ, স্বার্থপর নেতা আর নি:স্বার্থ, নির্লোভ অল্প কিছু জ্ঞানী মানুষ যারা বাকিদের চাপায় মৃত প্রায়। ওওওওওওওওওও সরি কি লিখতে বসলাম আর কি লিখছি.... নাহ্ নো নেগেটিভ বকরবকর !!!!!!!!!!!!

বিদেশের মাটিতে কি ভালো লাগে তার সত্যিকারের হিসেব দিতে গেলে রাত দিন পার করতে পারবো কিন্তু তার ভিতর ও আমার সবচেয়ে ভালো লেগেছে শিশুর সাথে বিহেব বা আচার আচরন। আমি বরাবরই বাচ্চাদের ব্যাপারে খুঁতখুতে (আমার আগের লিখা পড়লে বুঝতে পারবেন)।


ইউরোপ আমেরিকায় শিশুরা ফার্স্ট প্রায়োরিটি মানে যেকোন কিছুর উর্ধে তারা.......... উর্ধে মানে উর্ধেই ..... সবার এবং সব কিছুর উপরে বাচ্চাদের অধিকার ও প্রয়োজন। কারন তারা জানে এরাই ভবিষ্যত.... পড়াশোনা, মেডিকেল, খেলাধুলা, এক্স্ট্রা টেলেন্ট.......... প্রতিটি জায়গায় এদেরকে এতােটা প্রায়রিটি দেয় যা আমাদের জন্য কল্পনা। শিশুদের সাথে অন্যায় জিরো টলারেন্স... সেটা স্কুল, রাস্তা এমন কি বাসায় ও। মা-বাবা যদি অন্যায়ভাবে শাসন করে সেখানে ও মাপ নেই। ২৪ আওয়ার্স তাদের জন্য হট লাইন। সত্যিকারের মানুষ বানানোর জন্য তারা প্রানপন চেস্টা করে ...... আমাদের মতো মিছিলের সামনে বাচ্চাদের দাড়ঁ করানোর কথা চিন্তা ও করতে পারে না তারা :(( :(( :(( :(( । স্কুলে এদের শিক্ষার ধরন দেখে তাজ্জব হই। বইয়ের শিক্ষা নয় সত্যিকারের শিক্ষাই দেয় তাদের, যেমন প্লেন নিয়ে পড়াচ্ছে তো সরাসরি প্লেনে বসেই পড়ে... বইয়ে চোখ রেখে আমাদের মতো কল্পনার প্লেনে চড়ে নয়... । ল্যাবে ইলেকট্রিসিটি উতপন্ন থেকে বাজার করা, বাসন মাজা, স্কুল পরিস্কার সবই শিখায়.... প্রাক্টিকেল এডুকেশান বলতে যা বোঝায়। ফিল্ড ট্রিপ, কমিউনিটি সার্ভিস, ক্যাম্প, স্যোসাল ওয়ার্ক, লাইব্রেরী, ভলান্টিয়ার ওয়ার্ক...... একটি শিশু চৈাকশ হতে বাধ্য..... তারপরও এ সবের বাইরে যদি তার ট্যালেন্ট থাকে তাহলে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিবে সে বিষয়ে।


দ্বিতীয় যে বিষয়ে ভালো লাগে তা হলো, সকলের সহনশীলতা বা ধৈর্য্য। গুলিস্তান, মিরপুর, বাড্ডা অথবা গুলশান চৈারাস্তার চিল্লাচিল্লিতে অভ্যস্ত আমরা ভুলেও চিন্তা করতে পারিনা নিরব গুলিস্তান। হরতালে একটু কম প্যান প্যান হলেই আমরা কোথায় যেন এসেছি মনে হয। অথচ ইউরোপ আমেরিকা সহ অনেক দেশেই গেছি বাট কোথাও একটু জোরে আওয়াজ পেলাম না...... না বাসে, হাটে, ট্রেনে, স্টেশনে... কোথাও না.... কোথাও কোন শব্দ নেই, কোন মাইকের আওয়াজ নেই, হিন্দি সুরের মোবাইল রিং টোন নেই, মারামারি নেই, কথা কাটাকাটি নেই, ভাড়া নিয়ে ঝগড়া নেই। মনে পড়ে বছর তিনেক পুরান ঢাকায় ছিলাম.... কোরবানীর ঈদ, ২৬ মার্চ, ১৬ ডিসেম্বর, ইলেকশান বা নিদেনপক্ষে কোন বিয়ের অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে সারারাত উচ্চ সুরে ওয়াজ বা হিন্দি গানের সুর অথবা দু'টোই একসাথে। এক ফোটা ঘুমাতে পারতাম না রাতে বা দিনে। পড়াশোনাতো দূরে থাক, মাঝে মাঝে মনে হতো রোগীরা বাচেঁ কিভাবে এ শব্দে। যাহোক যা বলছিলাম.... তো তাই বলে কি ওরা সব বোবা কালা !!!!!!! কোন কথা বলে না ?? হাঁ, ওরা অনেক কথা বলে তবে আপনাকে ডিস্টার্ব করে নয়, খুবই আস্তে যাতে যাকে বলছে সে ছাড়া অন্য কেউ ডিস্টার্ব ফিল না করে। আর রিং টোন.... অবশ্যই আছে তবে তা আস্তে অথবা সাইলেন্ট মুডে। আমাদের সমস্যা আমরা শুধু বলার চেস্টা করি শোনার না। এখানে আগে শােনে তবেই বলে..... সব কিছু সিস্টেমে চলে.... আপনি মানবেন না!!! তার ও ব্যবস্থা আছে তবে চেচিঁয়ে গলা ফাটিয়ে নয়। সবার সহনশীলতা বা ধৈর্য্য দেখে তাজ্জব হই। আর এটি তারা স্কুল থেকেই শিখে আসে, অন্যের মতামতকে সন্মান জানানো, কারো কথা ধৈর্য্য নিয়ে শোনা, সিম্পেথি.......... অসাধারন। কোথাও পথ খুজে পাচ্ছি না, জিগ্ঞেস করতেই নিজের জিপিএস খুলে পারলে সেখানে দিয়ে আসে।


তৃতীয় যেটা ভালো লেগেছে তা হলো ট্রান্সপোর্ট সিস্টেম। অসাধারন.... মিনিট নয় সেকেন্ড হিসেব করে বাস, ট্রেন সহ সব পাবলিক ট্রান্সপোর্ট চলে। ইউরোপ, আমেরিকা কোথাও আমি এক সেকেন্ডের জন্য লেইট হতে দেখিনি। যদি কোথাও সমস্যা হয় তাহলে আগে থাকতেই ইনফোর্ম করে ও বিকল্প ব্যাবস্থা করে। সময়ের মূল্য এখানে অনেক অনেক বেশী। তুমি মাসিক, সাপ্তাহিক বা ডেইলি পাস কিনে চলো....বা মেশিনে পয়সা ঢালো, টিকেট নাও আর চলে যাও। ওটা মোটেও সস্তা না, কিন্তু যে সার্ভিস আপনি পাচ্ছেন তা অসাধারন। এবং একটি ট্রান্সপোর্ট কোম্পানীই সকল ট্রান্সপোর্ট এর নিয়ন্ত্রন করে... আমাদের মতো হাজারটা কোম্পানী নয়। যার দরুন নিয়ন্ত্রন সহজ। কোন ধাক্কাধাক্কি নেই, কম্পিটিশান নেই... শুধু সার্ভিস। তবে পাবলিক কম্লেইন বুথ আছে, তুমি কমপ্লেইন করবা সরকার নড়ে বসবে। তোমার নেক্সট টাইম রিনিউ না ও হতে পারে। ওয়াল্ড ওয়াইড বিজনেস... অন্য কোম্পানী আসবে। আর সরকারী আমলারাতো ঘুষ খায় না তাই তুমি ঠিকভাবে চলতে বাধ্য।..................

আর কি বলবো কিছু.... থাক অন্যদিন।

আগের লিখা পড়তে চাইলে......

আমার নিকটতম প্রতিবেশীরা - পর্ব-২
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা অক্টোবর, ২০২১ রাত ২:২৯
২২টি মন্তব্য ২৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হালহকিকত

লিখেছেন স্প্যানকড, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:১২

ছবি নেট ।

মগজে বাস করে অস্পষ্ট কিছু শব্দ
কুয়াসায় ঢাকা ভোর
মাফলারে চায়ের সদ্য লেগে থাকা লালচে দাগ
দু:খ একদম কাছের
অনেকটা রক্তের সম্পর্কের আত্মীয় ।

প্রেম... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×