somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

সোহানী
হাজার হাজার অসাধারন লেখক+ব্লগারের মাঝে আমি এক ক্ষুদ্র ব্লগার। পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া লেখালেখির গুণটা চালিয়ে যাচ্ছি ব্লগ লিখে। যখন যা দেখি, যা মনে দাগ কাটে তা লিখি এই ব্লগে। আমার ফেসবুক এড্রেস: https://www.facebook.com/sohani2018/

জীবন যেখানে যেমন...................আমার প্রবাসী ঈদ :(

২৪ শে জুন, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৩৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
পথ্থম আমার নায়কের ছবি দেইখা দেন পোস্ট পড়া শুরু করেন.......



প্রথমবার যখন কানাডায় ঈদ পালন করি তখন অনেকটা ভড়কে যাই কারন আমরা বাংলাদেশীরা একেকদিন একেকজন ঈদ পালন করে। কারন কেউ বাংলাদেশী ঈদ ফলো করে, কেউবা সৈাদী ফলো করে।এবং ঈদের জামাত একক এরিয়ায় হয় আর তার সাথে সে মসজিদে বা সে এরিয়ার লোকজন তা ফলো করে। এ দেখে কানাডিয়ান অন্যান্য ধর্মের লোকজন হাসতে হাসতে খুন। ওরা কিছুতেই বুঝতে পারে না একই ধর্মের ধর্মীয় উৎসব কেন ভিন্ন হবে। তারা না বুঝলেও আমরা জানি যে আমরা কি চীজ... হিসেবটা খুব সহজ হাজার হাজার ডলারের লেনদের.. ঈদ জাকাত, ফিতরা, দান..... যতবেশী মুসল্লী ততবেশী টাকা...... আর মসজিদ ফোরামের আধিপত্য। সবাই চায় সব কিছু একাই খেতে..... যাক শুনলে খুব খারাপ লাগলে ও এটাই সত্য এবং আমরা সবার হাসির পাত্র হচ্ছি দিনের পর দিন। এতো বড় ইস্যুতে এখনো আমরা একটু সহনশীল হতে পারলাম না... সবাই ঐক্যবদ্ধ হতে পারলাম না.. ।

যাকগা কি বলতে কি শুরু করলাম....প্রবাসী ঈদ ও রোজা পালন!!! যারা দেশে পুরান ঢাকায় ঈদ ও রোজা পালন করেছে তারা যদি কানাডায় ঈদে বা রোজায় আসে তাহলে পরের রোজায় নির্ঘাত ঢাকার টিকেট কাটবে। এর চেয়ে বোরিং এবং বিরক্তিকর যে কোন উৎসব হতে পারে তা না আসলে বোঝা যাবে না। কারনটা খুব সহজ... এখানে একটাই ধর্মীয় উৎসব ক্রিসমাস। সারা দেশ মেতে উঠে এ উৎসবে। স্কুল কলেজ থেকে শুরু করে সব বন্ধ থাকে... মার্কেটগুলো নতুন করে সাজে। সারা দেশে সাজ সাজ রব... ভালো না লেগে যাবে কোথায়? সে তুলনায় আমরা.... কোন সরকারী বন্ধ নেই। আর এখানে মোটামুটি সবই আওয়ারলী জব, তাই কাজ বন্ধ রাখা মানে টাকা বন্ধ। তাই অনেকেই ছুটি নিতে চায় না। এমন কি বাচ্চারা ও স্কুল বন্ধ করতে চায় না কারন তারা বলে বাসায় বসে থেকে বোরিং হয়ে যাই, এরচেয়ে স্কুল অনেক ভালো।...। মনে পড়ে ছোটবেলায় ঈদের সকালে সালামী নিয়ে চলতো কঠিন যুদ্ধ... কার থেকে কত টাকা আদায় করা যাবে তার প্রতিযোগীতা। সেজো কাকা বলতো যত সালাম ততটাকা.. আর আমরা দৈাড়াতাম তার পিছনে, আরেক কাকা খুচরা পয়সা সালামী দিত.....। এখানে ঈদের দিন মানে একরাশ দু:খ, দেশের আনন্দময় ঈদের কথা মনে করা, কিছু রান্না করা বা বড়জোর কারো বাসায় যাওয়া আর উইকএন্ডে বাংগালী কমিউনিটিতে একটা ঈদ পরবর্তী পূর্নমিলনী নামে গেট টুগেদার। তাই এবার ঈদে আমি কিছু খেলনা ও পুতুল কিনেছি। আশেপাশের পোলাপানগুলারে খবর দিসি যদি ঈদের নামাজ পড়ে আমার বাসাই সেমাই খেতে আসে তাহলে তাদের জন্য গিফট আছে ;) .... দেখি কমপিউটার ছাইরা কয়টা আসে..... B:-/

আমি গত বছর থেকেই আশে পাশের বাংগালী কমিউনিটিতে চেস্টা চালিয়েছি ঈদের দিন বাচ্চাদের আনন্দ দেয়ার মতো কিছু করতে, যাতে বাচ্চারা বুঝতে পারে ক্রিসমাস এর সাথে ঈদও একটা আনন্দময় উৎসব। এখনো সফল হয়নি ভবিষ্যতে পারবো কিনা জানি না। কারন সরকারী বন্ধ না থাকার কারনে কিছু করা কঠিন। অথচ পাশাপাশি পূজা কিন্তু অসাধারনভাবে পালন করা হয়। পুরো পূজার সময় সমস্ত মন্দিরগুলো এক হয়ে একসাথে উৎসবে মেতে উঠে। তাই সাধারন কানাডিয়ানরাও জানে ভারতীয় উৎসব কি অথচ ঈদ কি খুব ভালো করে জানেই না। সাধারনত মুসলিম বলতে ওরা বোঝে বোমা, আই এস, মারামারি, কাটাকাটি........এখন যদি বলি ওরা কিন্তু কাজ ফেলে দিনের পর দিন সময় দেয় নিজেদের কালচার ফোকাস করার জন্য আর আমরা এখনো ব্যাক্তি থেকে রাস্ট্র পর্যায়ে উঠতেই পারলাম না বা এক হতে পারলাম না। স্বয়ং কানাডিয়ান প্রধানমন্ত্রী ওদের পূজাতে এ্যাটেন্ড করে আর বড় কথা ট্রুডোর মন্ত্রীসভায় দুইজন মন্ত্রী এখন ভারতীয়। যদিও এখানে ভারতীয় বিশাল কমিউনিটি কিন্তু মুসলিম কমিউনিটি ও ছোট নয় তারপর ও আমরা এখনো কোন আকর্ষন তৈরী করতে পারিনি বা তৈরী করার চেস্টা ও করিনি। শুধু আমরা নয় কোন মুসলিম রাস্ট্রই মনে হয় তা তৈরী করতে পারেনি বা চেস্টা করেনি।

এবার আসি আমরা কি করি এখানে.... প্রথমেই কেনাকাটা!! দেশে থাকতেতো ঢাকা শহরের সব মার্কেট চষে বেড়াতাম.. এই বসুন্ধরাতো ... ওই যমুনাসিটি.. আবার আড়ং ... বিকালে আজিজ সুপার... পরেরদিন নিউমার্কেট , ডিসিসি কিংবা অন্য কোথাও। কারন পাড়া প্রতিবেশী আত্বীয় অনাআত্বীয় সবাইকে ঈদ গিফ্ট দিতাম। বাবার বাড়ি শশুড় বাড়ির সব বাচ্চাগুলা বসে থাকতো আমার গিফট এর জন্য কারন একটা কম্পিটিশান চলেতো কারটা সবচেয়ে ভালো হবে। সারা শহর চষে অামি সেরাটাই কিনার চেস্টা করতাম... আর পোলাপানরা আমারটাই বেশি পছন্দ করতো। আর এখানে কেউ বসে থাকে না আমার গিফট এর জন্য তাই ঈদের কেনাকাটা বলতে কিছুই নেই কোন আনন্দ নেই... । ছেলে মেয়ে মাথা ঘামায় না ঈদ নিয়ে, তারা ঈদ বলতে বোরিং ডে বোঝায়। এখানে ঈদের কেনাকাটা মান ২/৩ টা ইন্ডিয়ান শাড়ি/সেলোয়ার কামিজের দোকান আর ইউকএন্ডে ঈদ মেলার আয়োজন কোন কমিউনিটিসেন্টারে বা স্টেডিয়ামে। সেখানে কিছু বাংলাদেশী, ইন্ডিয়ান ও পাকিস্তানী স্টল বসে। কিছু ঝকর মকর কাপড় আর কিছু ইমিটেশানের গয়না নিয়ে বসে। আর বাংলাদেশী কিছু গ্রোসারী আছে তারা যাবতীয় পচাঁ মেয়াদহীন জিনিস, শুকনা তরকারী আর বছর দশেক পুরোনো মাছ বিক্রি করে (৪ বছরের পুরোনো মাছ কিনে ফেরত দিয়েছি, ট্যাগ চেইন্জ করে করে দিনের পর দিন বিক্রি করে তারা) .. সে গল্প আরেকদিন।। সারা বছর সেখানে না কিনলেও ঈদের সময় ঢু মারি, দেশী সেমাই চাল কিনি।

আর রোজা.... কোন আনন্দ নেই, সাদামাটা রোজকার দিনের মতো। কেউ রাখে কেউ রাখে না.... তারপরও মসজিদগুলোতে তারাবির নামাজ হয়, এমন কি ছোট ছোট কমিউনিটিতে ও তারাবির নামাজ হয়। এখানে যেমন সাধারন মুসলিম আছে তেমন কট্টর মুসলিম ও আছে যারা হাফেজী পড়ে ও তাদের বাচ্চাদেরও পড়ান। তবে ধর্মীয় সহনশীলতা পৃথিবীর যেকোন স্থান থেকে অনেক অনেক বেশী। যা সত্যিই মুগ্ধ করার মতো... কোথা্ও কোন ধর্মীয় রেসিজম নেই, যদিও সামান্যতম ও আভাস মেলে সাথে সাথে এ্যাকশানে। সেটার ডালপালা হবার কোন সুযোগই দেয় না।

যাউগ্গা বহুব বকর বকর গইলো, এবার আমার নায়কের ছবি দেখেন। আমিতো প্রেমে বহুত আগেই পড়ছি তাই বাকীদেরও আহবান জানাই..... হেহেহেহে। (দেখেন আমি একা না যাবতীয় সুন্দরীরাও কাইত.... ট্রাম্প কইন্যাতো ওরে দেইখা তিনখান কবিতা লিখছে)

কানাডিয়ান প্রাইম মিনিস্টার জাস্টিন ট্রুডো। এ পৃথিবীতে যদি একজন ও জীবিত যোগ্য নেতা থেকে থাকে তাহলে সেই হচ্ছে ট্রুডো। এমন অসাধারন একজনকেই বেছে নিয়েছে কানাডিয়ানবাসী। তাই আমরা কোন কিছু নিয়েই চিন্তা করি না কারন ট্রুডো বলে ... ম্যা হু না!!!


একমাত্র প্রধানমন্ত্রী যার শরীরে ট্যাটু একেঁছেন।


ট্রাম্প কইণ্যা ট্রুডোরে দেইখা এমনই মুগ্ধ.... উইমেন্স পাওয়ার মিটিং ই ভন্ডুল।


প্রিন্সকে বিয়ে কইরা ও ট্রুডোর সামনে কাইত....





পরিশেষে ট্রুডোর একটা নাচ দেখেন ইন্ডিয়ান কমিউনিটি প্রোগ্রামে.........
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই মে, ২০২১ সকাল ৭:০১
৩২টি মন্তব্য ৩৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা ও পদ্মশ্রী পুরস্কার

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৬



এ বছরের পদ্মশ্রী (ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মাননা) পদকে ভূষিত করা হয়েছে, বাংলাদেশের রবীন্দ্র সংগীত এর কিংবদন্তি শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যাকে।

আমরা গর্বিত বন্যাকে নিয়ে । ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×