গ্রিসের মানচিত্রে স্পার্টার অবস্থান। স্পার্টা লাসিদেমন নামেও পরিচিত ছিল সেকালে । বর্তমানে এর অবস্থান দক্ষিণ গ্রিসের লাকোনিয়া প্রদেশে। স্পার্টা ছিল প্রাচীন গ্রিসের একটি নগররাষ্ট্র; চারিদিকে পাহাড় ছিল- যা বর্হিশক্রর হাত থেকে নগরীটিকে রক্ষা করত। খ্রিস্টপূর্ব ১১৫০ অব্দে উত্তর দিক থেকে ডোরিয়ান জাতি দক্ষিণে নেমে এসেছিল। এরাই ছিল স্পার্টার পূর্বপুরুষ। স্পার্টার নাগরিকরা অবশ্য মনে করত যে তারা হারকিউসের বংশধর।
স্পার্টা সম্বন্ধে এথেন্সের তুলনায় আমাদের কাছে তথ্য কম। তার এক কারণ তারা চাইত না অন্যরা তাদের ব্যাপারে কৌতূহল দেখাক, তারাও অন্যদের বিষয়ে কৌতূহলী দেখাত না। সে যাই হোক। আসলে এক যুদ্ধ স্পার্টাকে বদলে দিয়েছিল। স্পার্টার পশ্চিমে ছিল উর্বর জমি আর লৌহ সমৃদ্ধ মেসিনিয়া । যা অস্ত্রশস্ত্র নির্মাণে লাগে। খ্রিস্টপূর্ব ৭ম শতকে স্পার্টা মেসিনিয়া আক্রমন করে। স্পার্টার জনসংখ্যা দশ হাজার, মেসিনিয়ার ২০৫০। তুমুল যুদ্ধ হয়। যুদ্ধে স্পার্টা জিতে যায় এবং মেসিনিয়ার ভুখন্ড দখল করে নেয়। যুদ্ধবন্দিরা পরিণত হল দাসে। এতে স্পার্টার সমাজে বিশাল এক পরিবর্তন আসে। প্রয়োজন হয় নতুন আইনকানুনের। সময়ের দাবিতে আবিভূর্ত হন প্রাচীন বিশ্বের অন্যতম এক আইন প্রনেতা লাইকারগাস ।
স্পার্টায় আইন প্রণেতা ও যোদ্ধাসংস্কৃতির প্রবর্তক লাইকারগাস (৮২০-৭৩০ খ্রিস্টপূর্ব)।
স্পার্তায় যে মৃৎপাত্র পাওয়া গেছে তা সবই খ্রিস্টপূর্ব ৭ম শতকের আগের। এর পরে আর শিল্পকর্ম পাওয়া যায়নি। তার মানে স্পার্টান সমাজে বড় ধরণের কোনও পরিবর্তন এসেছিল। সেই পরিবর্তন এসেছিল মেসিনিয়া যুদ্ধের পর । যুদ্ধের পর স্পার্টানদের বাস্তববাদী হতে হয়েছিল। প্রতিরক্ষার জন্য ব্যয় কমাতে হয়েছিল, ভূমি বন্টন করতে হয়েছিল, এতে নতুন শ্রেণির উদ্ভব ঘটল। এতসব পরিবর্তনকে আইনের আওতায় এনেছিলেন লাইকারগাস। তিনি ভূমধ্য সাগরের ক্রিটদ্বীপ, মিশর এবং আওনিয় (এশিয়া মাইনর) সমাজের আইনকানুন সম্বন্ধে গভীর জ্ঞান অর্জন করেছিলেন। তারপর তিনি যে আইন প্রণয়ণ করেছিলেন তার ভিত্তি ছিল স্পার্টার নাগরিকদের মধ্যে একতা, সামরিক সামর্থ অর্জন এবং আত্মসংযম। লাইকারগাস এর বিধানে অবশ্য ধর্মীয় ছোঁওয়া রয়েছে। কেননা স্পার্টাবাসী বিশ্বাস করত তাদের রাষ্ট্রকে টিকিয়ে রাখার জন্য লাইকারগাস এর বিধান ডেলফাই মন্দিরের দেবতার অ্যাপোলোর দৈব আর্শীবাদ। লাইকারগাস- এর আইন অনুযায়ী স্পার্টার অধিবাসীদের তিন শ্রেণিতে বিভক্ত করা হল। (১) নাগরিক: এরা কর দিত, সৈন্যবাহিনীতে যোগ দিত এবং স্পার্টার আইন মেনে চলত। এদের সংখ্যা ছিল দশ হাজার। এদের সম্পদ ছিল সমান; অর্থাৎ এদের ভূমি মেপে দেওয়া হত। এ কারণে স্পার্টায় বাজার অর্থনীতি বা বৈদেশিক বানিজ্য বিকাশ লাভ করেনি (২) কারিগর শ্রেণি। এরা মূলত কারুশিল্পী; অস্ত্রশস্ত্রও বানাতো। তবে অল্পস্বল্প ব্যাবসা-বানিজ্য করত। এদের সংখ্যা ছিল প্রায় পঞ্চাশ হাজারের কাছাকাছি। (৩) দাস: এরা মূলত যুদ্ধবন্দি। এদের কোনওই নাগরিক অধিকার ছিল না। এরা কায়িক পরিশ্রম করত। এদের সংখ্যা ছিল প্রায় এক লক্ষ।
স্পার্টান সৈন্য। রাষ্ট্র সব শিশুকে সৈন্য বানাতে চাইত।
বাস্তব কারণেই স্পার্টা হয়ে উঠেছিল যুদ্ধ-কেন্দ্রিক সামরিক রাষ্ট্র। প্রতিটি নাগরিক পরিবারের শিশুকে যোদ্ধা হিসেবে গড়ে তোলা হত। যোদ্ধার ট্রেনিং শিশুবয়েসেই শুরু হত। ৭ বছর বয়েসে শিশুকে সৈন্যরা নিয়ে যেত সামরিক বিদ্যালয়ে। তার আগে মা-ই শিশুদের দেখাশোনা করত। তবে শিশুর খুব একটা যতœ নিত না । মায়ের আদর যতœকে লাইকারগাস একটি শিশুর দৃঢ় মাননিক গঠনের অন্তরায় মনে করতেন। স্পার্টার মায়েরা তাদের সন্তানদের হাতে ঢাল তুলে দিয়ে নাকি বলত:Come back with your shield, or on it. সে যাই হোক। বালকদের রাখা হত সামরিক ব্যারাকে । অন্য বালকদের সঙ্গে সৈন্য হিসেবে গড়ে তোলার ট্রেনিং শুরু হত।
সামরিক ব্যারাকে স্পার্টান বালক।
মিলিটারি ব্যারাকে বালকের জীবনে চারটে বিষয়ের অত্যন্ত গুরুত্ব ছিল। (১) আত্মত্যাগ; (২) বাহুল্যবর্জিত জীবন; (৩) যোদ্ধারনীতি এবং (৪) নগররাষ্ট্রের প্রতি নিরঙ্কুশ আনুগত্য। বালকরা কঠিন শারীরিক অনুশীলন করত; মার্চ করানো হত জুতা ছাড়াই, উপোস করতে হত দিনের পর দিন, শিখত যুদ্ধ করতে, অসহ্য যন্ত্রণা সহ্য করত, প্রায়ই ফাঁদে ফেলা হত, তখন বুদ্ধির জোরে বাঁচতে হত। পুরো শিক্ষাজীবনে পরার জন্য একটাই ইউনিফরম, হাঁটতে হত খালি পায়ে; শীতে কি গ্রীষ্মে! বয়েসে যারা বড়, তারা ছোটদের মারত নির্দয়ভাবে । এভাবে ছোটদের মধ্যে অন্যকেও আঘাত করার প্রতিহিংসা সৃষ্টি হয়। বালকদের খাবার চুরি করতে শিখতে হত। একবার একটা বালক খাবার জন্য একটি শেয়াল ধরে । যদিও ধরা পড়লে কঠিন শান্তি হত। বালক দেখল যে কয়েকজন স্পার্টান সৈন্য আসছে। সে শার্টের নীচে শেয়াল লুকিয়ে ফেলে। তারপর ধরা পড়ে যাবে ভেবে শিয়ালটা কাঁচাই খেয়ে ফেলল! তবু সৈন্যদের কাছে স্বীকার করল না; বা যন্ত্রণার কোনও অভিব্যক্তি প্রকাশ করল না। অসহ্য যন্ত্রণা সহ্য করে বালক মারা গেল। একেই বলে: ’দ্য স্পার্টান ওয়ে’!
স্পার্টার সৈন্যদের অস্ত্র।
বালকদের বয়স ২০ হলে তাদের এক কঠিন পরীক্ষার সম্মূখীন হতে হত। সে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেই কেবল তারা পূর্ণ নাগরিকত্ব অর্জন করত তারা। কেবলমাত্র উত্তীর্ণরাই প্রথম শ্রেণির অভিজাত নাগরিকত্বের সম্মান পেত। পরীক্ষায় অকৃতকার্য হলে নাগরিকত্ব পাওয়া যেত না। তারা মধ্যবিত্ত কারিগন শ্রেনির অন্তর্ভূক্ত হত। কাজেই প্রাচীন স্পার্তায় জন্ম নয় কর্মই নির্ধারণ করত শ্রেণি।
স্পার্টার দাস; জমিছাড়াও গৃহস্থালীর কাজও করত। এদের বলা হত: helots; মানে বন্দি; এরাও গ্রিক। বিশেষ করে পার্শ্ববর্তী মেসিনিয়া এবং লাকোনিয়ার অধিবাসী। এদের ওপর নিমর্ম আচরণ করা হত। কোনও দাসকে বেয়াড়া মনে হলে নির্দ্ধিধায় হত্যা করত। এদের মালিকরা এদের মদ খাইয়ে মাতাল করে প্রকাশ্যে রাস্তায় ঘুরিয়ে মজা লুটত।
পাস করার পর আবার তারা ব্যারাকে ফিরে যেত। এবার তারা সৈন্য। তবে ট্রেনিংয়ের নতুন স্তর আরম্ভ হত। এর একটা হল: ‘নৈশকালীন যুদ্ধ’। রাতের অন্ধকারে পাহাড়ে কিংবা বনাঞ্চলে গেরিলা পদ্ধতিতে দাসদের ধরে ধরে হত্যা করত। তবে তারা এ সময় বিয়ে করত। রাষ্ট্র তাদের জমি দিত। জমিতে খাটত দাস। দাসরা ফসলের অর্ধেক তাদের দিত। কাজেই ফসল ফলানোর দুশ্চিন্তা ছিল না। তাছাড়া তাদের স্ত্রীরাও জমিজমা দেখাশোনা করত। কাজেই তারা ছিল সার্বক্ষণিক সৈন্য। আসলে দাসশ্রমের ওপরই টিকে ছিল স্পার্টান সমাজ। জীবনের কেন্দ্রে ছিল যুদ্ধ। অবশ্য ৩০ বছর হলে পর পরিবারের সঙ্গে থাকা যেত। তবে সামরিক জীবন ছিল ষাট বছর অবধি । তারপরে অবসর জীবন।
স্পার্টান মেয়েদের দৌড়।
লাইকারগাস বিশ্বাস করতেন যে শক্তিশালী মায়েরা শক্তসমর্থ শিশুর জন্ম দেয়। কাজেই মেয়েদেরও সাত বছর বয়েস থেকে কঠোর শরীরচর্চা অনুশীলন করতে হত । মেয়েরা শিখত কুস্তি, জিমন্যাস্টিক এবং খালি হাতে আত্মরক্ষা। আরও অনেক যন্ত্রণাদায়ক শারীরিক কসরৎ। মেয়েরা অ্যাথলেটিক ইভেন্টেও প্রতিযোগিতা অবতীর্ণ হত। তারপর নাগরিকত্ব পরীক্ষায় টিকলে তবেই কপালে স্বামী জুটত। বয়স তখন প্রায় কুড়ির কাছাকাছি। বাসরঘরে ঢোকার আগে বিচিত্র সব প্রস্তুতি নিতে হত মেয়েদের। এই যেমন- মাথার চুল ছোট ছোট করে কেটে ফেলত, পুরুষের পোশাক পড়ত। বাসররাতের যৌনমিলনও ছিল এক ধরনের পাশবিক কৃত্য (রিচুয়াল) ধর্ষনে উদ্যত স্বামীর আক্রমনের মুখে স্ত্রীর ক্ষিপ্র প্রতিরোধ চেষ্টা। পরদিন স্বামী ব্যারাকে ফিরে যেত।
স্পার্টার সৈন্যদের মুখোশ।
নাগরিক স্বামী-স্ত্রী একসঙ্গে বাস করত না। কেবলমাত্র যৌনমিলনের জন্য মিলিত হত। সে যাই হোক। খ্রিস্টপূর্ব চতুর্থ শতকে যুদ্ধবিগ্রহের কারণে স্পার্টায় পুরুষের সংখ্যা কমে গিয়েছিল। সে সময়টায় রাষ্ট্রীয় অনুমোদনেই এক নারী একাধিক পুরুষের সঙ্গে মিলিত হতে পারত। তবে রক্ষিতা পোষা রাষ্ট্র থেকেই নিরুৎসাহিত করত। তবে রাষ্ট্র নারীপুরুষের চিরন্তন অনুভূতি যে প্রেম সে প্রেমকে মনে হয় একেবারে ধ্বংস করতে পারেনি। সর্ম্পকে স্বামীস্ত্রী হলেও নারীপুরুষ বলেই তাদের হৃদয়ে প্রেমভালোবাসা ছিল। যদিও সেটি গোপনই রাখত। কেননা রাষ্ট্র একে দূর্বলতাই ভাবত।
স্পার্টার সৈন্যদের ওপর নির্মিত হলিউডের ‘থ্রি হানড্রেড’ ছবির দৃশ্য।
তো, এরকম একটি যুদ্ধবাজ রাষ্ট্রের সেরা যুদ্ধ কোনটি?
৪৮০ খ্রিস্টপূর্বে যখন পারস্য ৩ লক্ষ সৈন্য নিয়ে আক্রমন করল গ্রিস। এজিয়ান সমুদ্রের পাড়ে থার্মোফাইল গিরিপথে ৩০০ জন স্পার্টান সৈন্য স্পার্টার রাজা লিওনাইদেস এর নেতৃত্বে প্রবল প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল। যুদ্ধ চলেছিল তিন দিন। মানে এই তিন দিন মাত্র ৩০০ জন স্পার্টান সৈন্য পারস্যবাহিনীকে আটকে রেখেছিল! (পারসিকরা সংখ্যায় ৩ লাখ হলেও সরু গিরিপথের কারণে স্পার্টানদের একত্রে পারসিকদের মোকাবেলা করতে হয়নি) স্পার্টানরা পরাজিত হয়েছিল বটে কিন্তু তার আগে তারা তরবারি ভেঙে গেলে খালি হাতে যুদ্ধ করেছিল। পারসিক সৈন্যরা তারপর এথেন্সের অভিমুখে মার্চ করে এগিয়ে গিয়েছিল। তবে শেষ পর্যন্ত সংখ্যালঘু গ্রিকদের হাতে বিশাল পারসিক বাহিনী পরাজিত হয়েছিল।
যুদ্ধের আগে একজন স্পার্টান নারী তার স্বামীর হাতে ঢাল তুলে দিচ্ছে।
স্পার্টান নারী অন্যান্য গ্রিক নারীদের তুলনায় স্বাধীন ছিল। তাদের শিশু লালনপালন করতে হত না। কাজেই অন্য গ্রিক নারীদের মত ঘরে আটকে থাকতে হত না। মেয়েদের জীবনে স্বামীর ভূমিকা ছিল সামান্য । মেয়েরা ঘরের বাইরে গিয়ে কাজ করতে পারত। তাতে রাষ্ট্রীয় অনুমোদন ছিল। স্পার্টান নারীদের সম্পদে অধিকার ছিল। স্পার্টার মেয়েদের সর্র্ম্পকে একজন গ্রিক ঐতিহাসিকের উক্তি-
Only in Sparta did girls receive public education - in other city-states most women were completely illiterate. Only in Sparta were girls allowed to engage in sport.Only in Sparta did women possess economic power and influence. Scandalized observers from other Greek cities commented that not only did Spartan women have opinions they were not afraid to voice in public, but their husbands actually listened to them!
যুদ্ধক্ষেত্রে। যুদ্ধ এমনই আচ্ছন্ন করে রেখেছিল সেই য্দ্ধুবাজ সমাজকে যে পারস্য গ্রিস আক্রমন করার সময় থার্মোফাইল গিরিপথে ভয়ঙ্কর যুদ্ধ বেঁধেছিল দু’পক্ষের, সে সময় র্স্পাটার এক সৈন্যের নাম ছিল ইউরিথুস; তো সে চোখে দেখত কম। এই উছিলায় সে পালিয়ে যায়নি। বরং দাসদের বলেছিল আমায় যুদ্ধক্ষেত্রে নিয়ে চল।
লাইকারগাস-এর আইনের ওপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠা প্রাচীন সেই স্পার্টা ঘিরে দূর্গ-প্রাচীর ছিল না, অন্যান্য গ্রিক নগররাষ্ট্রে যেমনটা ছিল-এমন কী এথেন্সএও। কেন? কারণ- আমাদের নগর আমরাই রক্ষা করব? এমন একটা দৃঢ় বিশ্বাস ছিল স্পার্টার নাগরিকদের। যে নাগরিকরা তাদের লম্বা চুল নিয়ে গর্ব করত, চুল আবার আঁচরাত যুদ্ধের আগে । পরত লাল পোশাক। কেন? তাতে ক্ষতের রক্তের চিহ্ন চোখে পড়ত না। যে নাগরিকরা ব্যবসাবানিজ্যে আগ্রহী ছিল না, ধনীও হতে চাইত না। তারা কেবল সুস্থ সবল থাকতে চাইত। যে নাগরিকরা গ্রিকদের মতন মুদ্রা ব্যবহার করত না; বরং আয়রন বার ব্যবহার করত। সেনা ছাউনিতে যারা টয়লেট বানানোর ঝামেলায় যেত না। সময়মতো একটু দূরে সরে যেত কেবল। যারা ভাবত প্রত্যেক পুরুষেরই উচিত বিয়ে-টিয়ে করে বাচ্চ-কাচ্চার জন্ম দেওয়া। অবশ্য বয়স্ক পুরুষের বিয়ে না হলে তাকে বছরে একবার নগরের রাস্তায় নগ্ন হয়ে হাঁটতে হত!
লাইকারগাস-এর আইনের ওপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠা এ ধরণের বিচিত্র এক সভ্যতা পরবর্তীকালে প্লেটো থেকে কার্ল মাকর্সকে পর্যন্ত বিস্মিত করেছিল।
স্পার্টা বলতে আজও যুদ্ধই বোঝে মানুষ।
এথেন্স স্পার্টার অনেক পার্থক্য ছিল। এথেন্সে যেখানে গনতন্ত্রের চর্চা ছিল, স্পার্টায় সেখানে রাজা ছিল দুই জন। একজন অভ্যন্তরে দায়িত্ব পালন করতেন অন্যজন যুদ্ধবিগ্রহে স্পার্টার বাইরে থাকতেন। তাছাড়া এথেনীয় সমাজে বিলাস-ব্যসন ছিল বলে স্পার্টানরা তাদের অবজ্ঞাই করত। এসব কারণেই এথেন্সের সঙ্গে স্পার্টার সংঘাত অনিবার্য হয়ে উঠেছিল। স্পার্টা এবং এথেন্সের মধ্যে ৪৩১ থেকে ৪০৪ খ্রিস্টপূর্বের মধ্যে এক যুদ্ধ সংঘটিত হয়। ইতিহাসে এই যুদ্ধ পেলোপনেশিয় যুদ্ধ নামে পরিচিত। যুদ্ধে অবশ্য স্পার্টা জিতে যায়। তবে গ্রিকবিশ্বে স্পার্টার নিয়ন্ত্রণ ছিল স্বল্পকালীন। স্পার্টা ৩৭১ খ্রিস্টপূর্বে লিউকট্রার যুদ্ধে থিবসের কাছে পরাজিত হয়। এরপর দীর্ঘকালীন পতনের গভীর স্তব্দতা বিরাজ করে বিরান স্পার্টার দরদালানের ওপর ।
এক পর্যটক ঘুরে ঘুরে প্রাচীন স্পার্তার ধ্বংসস্তূপ দেখছে।
ছবি। ইন্টারনেট।
তথ্যসূত্র:
Click This Link
Click This Link
Click This Link
Click This Link
Click This Link
Click This Link
Click This Link
Click This Link
Click This Link