somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

হে পরিমল তোমাকে স্যালুট দিতে পারলাম না, কারন সাইদের মত তুমিও যায়গামত ভুল যায়গায় হাত দিয়েছ।

১৪ ই জুলাই, ২০১১ বিকাল ৫:৫৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

হে পরিমল, তুমি কে? কোথা হতে তোমার আগমন? এতদিন কোথায় ছিলে? কার গর্ভ হতে জন্মেছ ? কোন আলো-বাতাস খেয়ে মানুষ তুমি? না হলে আমার থেকে তোমার এত পার্থক্য কেন? তুমি কেন এতই উচু দরের মানুষ(!) আর আমার বাস সমাজের এত নীচে?

ওহ, কি করেছ তুমি যা আমাকে এমন বিমোহিত করেছে জানতে চাও? না না তোমার ওই ধর্ষন ধর্ষন খেলা আমাকে বিন্দু মাত্র আকর্ষন করেনি। আমি অমানুষ নই পরিমল। তাহলে? আসলে তোমার ওই ধর্ষন যে কত জনের মুখোশ খুলে দিয়েছে, আমাকে আকর্ষন করছে সেই সব মুখের সৌন্দর্যকে।

হে পরিমল তোমার আগে কি কোন শিক্ষক তার ছাত্রীকে যৌন নির্যাতন করেনি? করেছে। এর আগেকি তোমার মত পশু ছিল না? ছিল। তাহলে তখন কেন মানুষ নিশ্চুপ ছিল? কয়টা পত্রিকা, কয়টা ব্লগ এসব নিয়ে সোচ্চার ছিল? একজন কি দুজন। তাহলে আর সবার বিবেক কই ছিল? উত্তরটা হচ্ছে ভ্রাত তুমি যায়গা মত ভুল যায়গায় হাত দিয়েছ। যেমনটা দিয়েছিল তোমারি আরেক ভ্রাতা সাইদ, রুমানার গায়ে হাত তুলে। এর আগে শত শত রুমানা একাকি নির্যাতিত হয়ে যুদ্ধে পরাজিত হলেও শুধুমাত্র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রুমানার যুদ্ধটি ছিল শুধু রুমানার একার নয় আর “সবার”। ঠিক তেমনি তোমার এই হাত যদি পরত গ্রামের কোন কৃষকের অসহায় মেয়ের প্রতি তাহলে হয়ত পত্রিকার ভিতরের কোন পাতায় সেটার স্থান হত। মুল খবর হত মেয়েটির পরিচয় আর তোমার কুকর্মের বিষদ বিবরন। সাথে বোনাস হিসেবে থাকত পুলিশের তোমাকে খুজে না পাওয়ার ব্যার্থতার বয়ান।

ভ্রাত তুমি এই কর্মটি করেছে বলেই জানতে পারলাম শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে কেমন দূর্নীতি হয় আর কেমন অমানুষরাই আজকে আমাদের শিক্ষক হয়। জানতে পারলাম একজন শিক্ষিকা ও নারীর কাছে ধর্ষন কতটা আকর্ষনীয় হয়, আর তাই তার নাম তিনি দেন মিউচুয়াল সেক্স! দেখতে পাই ন্যায় নীতি ঝান্ডাধারি রাজনীতিবিদদের অন্যায় দূর করার চাইতে অন্যায়কে প্রতিষ্ঠিত করতে কত কষ্টসাধ্য প্রয়াস।

সবচেয়ে বেশী দেখতে পাই মুখোশধারি শয়তানদের যাদের ন্যায় অন্যায় বোধ সময় ও সুযোগের সাথে সাথে পরিবর্তন হয়। কি রাজনীতির মাঠ, কি সুশীল সমাজ কিংবা ব্লগ সবখানেই ওই শয়তানদের পদচারনা। তোমার কারনেই মুখোশ খুলে যায় বুদ্ধিজীবিদের, যারা একবারের জন্যেও শিক্ষাঙ্গনে রাজনীতি, ক্ষমতানীতির প্রবেশের নিন্দা না জানিয়ে চুপ থাকেন, মুখোশ খুলে যায় মৌলবাদিদের যারা এর মধ্যে শুধুই সাম্প্রদায়িকতার গন্ধ পায়, মুখোশ খুলে যায় ভন্ড নাস্তিকদের যাদের কাছে তুমি কোন স্কুল শিক্ষক নও, শুধুই এক ব্যাক্তি পরিমল কিন্তু অন্য ধর্ষকেরা হয় কোন মাদ্রাসার শিক্ষক কিংবা কোন মুসলমান।

তোমার কারনেই দেশপ্রেমের ও গণতন্ত্রের সংজ্ঞা শিখতে পেরেছি।দেশপ্রেম হচ্ছে কারো বাবার সম্পত্তি যেখানে তার সন্তানেরা উত্তরাধিকার সূত্রে তার মালিক হয় আর তার সহচরেরা যা খুশি তাই করার স্বাধীনতা রাখে। গনতন্ত্রের সংজ্ঞা হচ্ছে জনগন কি চায় তার চেয়ে ক্ষমতাবানের কি ইচ্ছা তার প্রতিফলন। হোসনে আরার প্রত্যাবর্তন কি তা চোখে আঙ্গুল দিয়ে আমাদের দেখাতে পারত যদি না তুমি ধর্ষন করতে?

তোমার কারনেই শিখতে পারছি সংবিধানে বিসমিল্লাহ থাকাকেই ইসলাম ধর্ম বলে। বোরকা পরা নারী, মাথায় টুপি মুখে দাড়িওয়ালা পুরুষকে সাচ্চা মুসলমান বলে। হরতালের দিন কারো গাড়ি ভাঙ্গাকে, পুলিশের উপর চরাও হওয়াকে জিহাদ বলে। কিন্তু অন্যায়কে অন্যায় বলা, যেকোন অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া ও তা রুখে দাড়ানো সম্ভবত জিহাদের কোন ক্যাটাগরিতে পরে না।তেমনি সত্য কথা বলা, মানুষের প্রতি সন্মান, ভালবাসা, দয়া ওইসব ভন্ডদের ইসলামের কোন ক্যাটাগরিতে পরে না। ইসলাম শুধু তাদের স্বার্থমত, সুযোগমত, ইসলাম আর যেন কিছুই নয়।

তোমার জন্যেই শিখতে পারছি মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রয়োগ শুধু মুক্তিযোদ্ধার নাতী-নাতনীদের কোটা পর্যন্তই। কিংবা বাহাত্তরের সংবিধান নিয়ে হাউকাউ পর্যন্তই। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সম্ভবত দুই লক্ষ্য মা-বোনের ইজ্জতের কোন দাম নেই। ধর্ষনকে যারা মিউচুয়াল সেক্স বলে তারা কি করে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষ শক্তির ক্ষমতাকালে স্বপদে বহাল থাকে। ধর্ষকের প্রথম পরিচয় কিভাবে হয় যে সে দলীয় আনুগত্যের লোক। অসাম্প্রদায়ক রাস্ট্রগঠনে যারা দিনরাত অঘুমা থাকে, ধর্ষনহীন একটি রাস্ট্র প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন কি এতই তাদের স্বার্থের পরিপন্থি।

সবশেষে পরিমল হতাশ হইয় না। তুমি হয়ত জান তোমার আগে ধর্ষনের সেঞ্চুরি করেও এক গুরুর কিছুই হয় নি।তুমি হয়ত উৎসাহটা সেখান থেকেই পেয়েছ কে জানে। আগেই বলেছি তুমি যায়গামত ভুল যায়গায় হাত দিয়েছে। এখনো সময় আছে। এখন মুজিবের আদর্শ দিয়ে পার না হতে পারলেও কে জানে একসময় জিয়ার আদর্শ দিয়ে পার হলে হয়েও যেতে পার। অপেক্ষায় রইলাম সেই দিনের। আমার স্যালুটটা সেই দিনের জন্যই তোলা রইল।

(অফটপিকঃ এক পরিমলকে শাস্তি দেয়ার চাইতেও জরুরি শত পরিমলের উত্থান ঠেকানো। কারো ঘরে যেন আর পরিমল জন্মাতে না পারে সেই ব্যাবস্থা নেয়া। কারন বাংলাদেশের আনাচে কানাচে কয়জন পরিমলকে আপনি ধরবেন আর কয়জন পরিমলের শাস্তি নিশ্চিত করবেন, সবারইতো কোন না কোন হোসনে আরা আছেই। আর যাই করি আমার জীবনটা উৎসর্গ করলাম এইসব ভন্ড,মুনাফেকদের বিরদ্ধে যুদ্ধের মাধ্যমে)
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই জুলাই, ২০১১ সন্ধ্যা ৬:০০
২২টি মন্তব্য ২২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮



স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দুই টাকার জ্ঞানী বনাম তিনশো মিলিয়নের জ্ঞানী!

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ২:৫৯

বিশ্বের নামীদামী অমুসলিমদের মুসলিম হয়ে যাওয়াটা আমার কাছে তেমন কোন বিষয় মনে হত না বা বলা চলে এদের নিয়ে আমার কোন আগ্রহ ছিল না। কিন্তু আজ অষ্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ডিজাইনার মিঃ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×