somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জনসংখ্যা বিস্ফোরণে মুসলিম সমাজের অবদান- প্রসংগ জম্মনিয়ন্ত্রণ ও পরিবার পরিকল্পনা (একটি ফলোআপ পোস্ট)

১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ রাত ৯:৫২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমার গত পোস্টের রেশ ধরেই আজকের পোস্টের অবতারণা। আজকাল বেশ অহংকারের সাথেই অনেককে বলতে শোনা যায়, মুসলিম সমাজের বাড়-বাড়ন্ত নিয়ে অহংকারী কথা-বার্তা। একে অনেকেই ইসলাম সমাজের মহিমার বহিঃপ্রকাশ হিসেবে ভেবে ভুল করে থাকেন। সাম্প্রতিক বিশ্বে মুসলিম জনসংখ্যা বাড়ার হার, ইসলাম ধর্মে বিশ্বাসে বিশ্বাসীত হয়ে না যতটা, তার চেয়েও [http://www.christiantoday.com/article/muslims.could.overtake.western.world.with.high.birth.rates/9393.htm|বিপদজনকরকম উচ্চ জম্মহার]। আর, এই জন্য দায়ী করা হয়, পরিবার পরিকল্পনা বা জম্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি অবলম্বন না করা।

Marry the one who is loving and fertile, for I will be proud of your great numbers before the nations.” (Narrated by Abu Dawood, 2050; classed as saheeh by al-Albaani in Saheeh Abi Dawood, 1805)- প্রথমেই মুসলিম পুরুষদের সরাসরি আদেশ করা হয় উর্বর নারীকে বিয়ে করার জন্য। আসলে, বিয়ের মাধ্যমে পরিবারে নারীদের কামোত্তজনা প্রশমক ও সন্তান জম্মদানের মেশিন হিসেবে অধিকতর ভাবা হয়।

প্রধানত দুটি কারণে জম্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহারে মুসলিমদের উতসাহিত হতে দেখা যায়না।

১. সরাসরি ও ঝামেলাবিহীন যোনি ভোগের ইচ্ছা
আমার এক বন্ধু বেশ কয়েকবছর আগে সিফিলিসে ভুগেছিলো। পতিতার সাথে অনিরাপদ সেক্স থেকেই সংক্রমিত হয়। বর্তমানে বেশ সুস্থ। কিন্তু, উনি এখনোও ঝামেলা ব্যবহার করেন না। পরে বলেছিলো, " মানা আছে, জানিস না নাকি ?!!!"

বীর্যক্ষলনের পূর্বে যোনি থেকে পুরুষাংগ বাইরে বের করে আনা নিয়ে একটি পদ্ধতি হলো coitus interruptus(‘azl)। এর মারফতে, শুক্রাণু ও ডিম্বাণুর মিলন হয় না বলে একটি মোটামুটি জম্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি দাড়িয়ে যায়। যদিও, নিশ্চিতভাবে কখনোই বলা যায় যে, এতে একশ শতাংশ জম্মনিয়ন্ত্রণ সম্ভব। এই কনসেপ্টটি বহু আগে থেকেই প্রাক ইসলাম বিশ্বে আরব সমাজে ব্যবহৃত হতো।

“We used to practise ‘azl at the time when the Qur’aan was being revealed” – Hadeeth of Jaabir

তবে, মোহাম্মদ এই পদ্ধতিকে হারাম ঘোষণা করেন। এই সিদ্ধান্ত যে ঠিক ছিল তার জাস্টিফিকেশনের জন্য অনেক ইসলামিক পন্ডিতের দেওয়া যেসব খোঁড়া যুক্তি দেখানো হয় তা হলো,

১.১.১. একজন মুক্ত নারীর বাচ্চা নেবার অধিকার রয়েছে - এক্ষেত্রে যদিও কোনভাবেই প্রমাণ করা যায় না, নারীরা স্বাধীন। একজন নারী যদি তখন গর্ভধারণ করতে নাও চান, তাহলে কিছুই করার নেই। ভাবখানা এইভাবে প্রকাশ হয় যেন, নারীরা না চাইলে আমরা কখনো ইয়ে পর্যন্ত করতাম না।

১.১.১. পুরুষাংগ বের করে দিলে নারীদের যৌন তৃপ্তি আসেনা। নারীর পূর্ণাংগ ও সঠিক রাগমোচনের জন্য যোনিতে বীর্যক্ষলন করতেই হবে - দুটি শরীর আলাদা হাওয়া সত্ত্বেও একজনের সরাসরি রাগমোচনে আরেকজনের শারীরিক রাগমোচনের হাইপোথিসিসটি যথারীতি বিজ্ঞানভিত্তিক নয়।

সিফিলিসে আক্রান্ত সেই বন্ধুটি যা বোঝাতে চেয়েছিল, তা এখন বলি।

ইসলামের সাহাবারা তাদের নারীদের (বিশেষত দাসী অথবা যৌনদাসীদের) সাথে এই প্রক্রিয়া ব্যবহার করতেন, যাতে সেই সব নারীরা গর্ভবতী না হয়। এতে করে সাহাবাদের রতি বিলাসে বাঁধা পড়তো না এবং সেইসব নারীরা তাদের দাসসুলভ স্বাভাবিক কাজও করতে পারতো।

"O Messenger of Allaah, I have a slave woman and I engage in ‘azl with her, because I do not want her to get pregnant, but I want what men want. But the Jews say that ‘azl is a lesser form of infanticide.”- Abu Dawood

কিন্তু, এখানে মোহাম্মদ সাহাবাদের বাড়া ভাতে ছাই ফেলে দেন।

"The Jews are lying. If Allaah wants to create (a child) you cannot prevent that.” (Narrated by Abu Dawood, Kitaab al-Nikaah, 1856; classed as saheeh by al-Albaani in Saheeh Abi Dawood, 1903).

আমাদের এখনো ধন্যবাদ দেওয়া উচিত যে, শিশু হত্যার ভয়ে যৌনতা মানা করা হয়নি। কেউ আসলে বলার ছিলো না যে, শিশুহত্যা (গর্ভাবস্থায় বা স্বাভাবিক জম্ম নেওয়া শিশু) এক জিনিস আর জম্মনিয়ন্ত্রণ আরেক জিনিস। জম্মনিয়ন্ত্রণ মানে শুক্রাণু আর ডিম্বাণুর মিলনই না হওয়া। যেখানে, জাইগোট হবে না, সেখানে গর্ভধারণও সম্ভব নয়।

সরাসরি মানা থাকলেও কিছু কিছু আধুনিক ইসলামি পন্ডিতেরা নিজেদের মত করে কিছু ফতোয়া দিয়ে থাকেন। নিষিদ্ধ করা নিয়মও তারা নিজেদের মত করে হারাম থেকে মাকরু'তে নিয়ে এসেছেন।

১.২.১. coitus interruptus অথবা কনডম হালাল না হারাম নিয়ে কমেডি
১.২.২. coitus interruptus অথবা জম্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি হালাল না হারাম নিয়ে কমেডি
১.২.৩. পরিবার পরিকল্পনা ও জম্মনিয়ন্ত্রণ নিয়ে আরেক পন্ডিতের কমেডি

২. মুসলিম উম্মাহর সংখ্যা বাড়ানো
“and made you more numerous in man-power” [al-Isra’ 15:6]
“And remember when you were but few, and He multiplied you” [al-A’raaf 7:86]

এটি আসলে প্রথম পদ্ধতির লাগাম ছাড়া ব্যবহারের সরাসরি ফসল। যতবেশি অনিরাপদ যৌন বিলাস, তত বেশি সন্তান। আর যদি বেশি সন্তান, তত বেশি দারিদ্রতা। এটা অনস্বীকার্য। প্রায় প্রতিবছর একজন সাধারণ পরিবারে একটি নতুন মুখের আগমন, অভাবের সামনে কতখানি নারকীয়, যার ব্যাথা শুধু সেই বুঝে। তাছাড়া, এই নতুন শিশুর মৌলিক চাহিদা মেটানোর জন্য বাধা ধরা নিয়মিত আয়ে সম্পন্ন করা প্রায় অসম্ভব। আর, একটু বাড়তি আয়টুকু মানে, আরেকজনের মাথায় হয়ত কাঁঠাল ভাংগা।

এই অবস্থায় বলা হয়,
“And no moving (living) creature is there on earth but its provision is due from Allaah” [Hood 11:6]

এই কথা যে কতখানি অপরিপক্ক তা আবারো প্রামাণিত হয়। আল্লাহ যদি সব প্রাণীর সব সন্তানেরই জন্য জায়গা করে রাখেন, তবে জম্মানোর আগে বা পড়ে, অনাকাংখিত শিশু মৃত্যু হয় কেন?

সর্বোপরি, নারীদের সম্পর্কে এই জাতীয় উক্তি করা হলে, উৎসাহ বাড়ে বৈকি কমে না।

“Your wives are a tilth for you, so go into your tilth when you like, and do good beforehand for yourselves, and be careful (of your duty) to God, and know that you will meet Him, and give good news to the believers.” (Quran 2:223)

পৃথিবীতে আরোও কয়েক শ্রেণীর মাঝেও এই একই ধরণের অতি উচ্চহারে বৃদ্ধি পদ্ধতি দেখা যায়। ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ দুপুর ২:৫৫
২৮টি মন্তব্য ২২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দাদার দাদা।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৫৫

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী।

আমার দাদার জন্মসাল আনুমানিক ১৯৫৮ সাল। যদি তার জন্মতারিখ ০১-০১-১৯৫৮ সাল হয় তাহলে আজ তার বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

জেনে নিন আপনি স্বাভাবিক মানুষ নাকি সাইকো?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১৮


আপনার কি কারো ভালো সহ্য হয়না? আপনার পোস্ট কেউ পড়েনা কিন্তু আরিফ আর হুসাইন এর পোস্ট সবাই পড়ে তাই বলে আরিফ ভাইকে হিংসা হয়?কেউ একজন মানুষকে হাসাতে পারে, মানুষ তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×