somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পনের আগস্টের শোক দিবস বনাম জন্মদিন

২৭ শে আগস্ট, ২০১৫ সকাল ১১:২৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পনের আগস্ট জাতীয় শোক দিবসের পাশাপাশি জন্মদিন পালনের প্রতি বছরের ধারাবাহিক নাটকের দৃশ্য অবলোকনে জনমনে ক্ষোভ রয়েছে। আর তাতে দোষ কী? মিথ্যাচার শ্রবণে এমন ক্ষোভ অস্বাভাবিক নয়। বাংলার মেহনতী অগনিত নিষ্পেষিত নর -নারী,শ্রমিক -মুজুর বিভিন্ন শাসনামলে কম -বেশি এদেশের বৈধ - অবৈধ শাষকদের পেশীশক্তির নিষ্ঠুর পদাঘাতে দলিত হয়ে আজও স্মৃতিবিভ্রম। তারা জানে না তাদের জন্ম কখন - কোথায় কিভাবে হয়েছিল কিংবা তা জানার আগ্রহ বা ইচ্ছা কোনটাই নেই তাদের! কিন্তূ স্বার্থান্বেষী কোন ব্যক্তি বা গোষ্ঠী বিতর্কিত বিষয়গুলো নিয়ে নির্লজ্জের ন্যায় মিথ্যাচার করতে কুন্ঠাবোধ করে না! সময় দ্রুত এগুচ্ছে ,পাল্টে যাচ্ছে বিশ্বের দৃশ্যপট ,অন্য দিকে প্রতিযোগিতামূলক রাজনীতিতে পশ্চাদপদ পদাঙ্ক অনুস্মরণের হীনমন্যতার আবর্তে আমরা এখনো যেন ঘূর্ণায়মান। যদি এটিই সত্যি ধরে নেওয়া যায় যে -সাবেক মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী ম্যাডাম খালেদা জিয়া পনের আগস্ট জন্ম নিয়েছিলেন এবং সেই সূত্রে তিনি ও তার দল তা ঘটা করে পালন করেন -তাতে দোষ কি? সেদিনতো জন্ম নেওয়া নিষেধ ছিল না। হয়তো হাজার লোক সেদিন জন্ম নিয়েছে। ঐদিন হাজার পরিবার কেক কাটবে আর মোমবাতি জ্বালাবে। আর সেই আনন্দ ব্যাহত করার অধিকার কারো আছে কি ? তবে এটা বলা বাঞ্চনীয় যে -সাধারন মানুষ আর দু -তিন বারের প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার কর্মকান্ড সকল ক্ষেত্রেই সমান ভাবে অবশ্যই বিবেচ্য নয়। নির্দ্বিধায় বলা যায় তিনি (খালেদা) এদেশের একটি বড় রাজনৈতিক দলের প্রধান কর্ণধার। তাঁর আচরণ জনমনে সভ্যতার কিংবা অশোভনীয়তার প্রভাব অবশ্যই সংক্রমিত হবে! এক্ষেত্রে নিজের জন্ম দিন পালনের পাশাপাশি পনের আগস্টে জাতীর জনকের নির্মম হত্যা যজ্ঞকে ধিক্কার জানাতে পারলে ম্যাডাম খালেদা জিয়া উদার পন্থীদের কাছে সমাদৃত হতে পারতেন এবংসভ্যতা প্রদর্শিত হওয়ায় রাজনৈতিক উদ্দেশ্যও সাধিত হয়ে বিষয়টি নিরবদ্য হতে পারতো। অন্য দিকে সমলোচকরা বিতর্কিত কোন ইস্যুর সাথে জড়িয়ে মজা লুটতে নিরুৎসাহিত হতো! অন্যদিকে আওয়ামীলীগ যদি নিশ্চিত ভাবেই ম্যাডাম খালেদার জন্ম দিনটিকে মিথ্যা বলে জেনে থাকে, তাহলে রাজনৈতিক হিসাব -নিকাশে আওয়ামীলীগের ব্যথিত হওয়ার কারণ থেকে যায়। তবে আওয়ামিলীগের মত এতবড় প্রতিষ্ঠিত একটি দলের - ম্যাডাম খালেদা জিয়ার জন্ম দিন নিয়ে এত গাত্রদাহ অনবদ্য সত্য প্রেমের পরিচায়ক নয় বরং কদর্যপূ্র্ণ মানসিকতার প্রকাশ হিসেবে বিবেচনা করার সুযোগ জনগণের থেকে যায়! এক্ষেত্রে উদার গনতান্ত্রিক দলের পরিচয় দিয়ে আওয়ামিলীগ জাতীয় শোক দিবস পালনের পাশাপাশি জন্মদিনের শুভেচ্ছা পাঠালে নিন্দিত না হয়ে নন্দিত হতে পারতো! জন্ম দিন কেন্দ্রিক অপরাজনৈতিক খেলায় জয় কিংবা পরাজয়ে কোন দলের আকাশ -পাতাল লাভ লোকসানের সম্ভাবনা একেবারেই ক্ষীণ। একটা সময় রাজনৈতিক মাঠে নোংরা ভাবে বলা হতো -এদেশে নাকি উলুধ্বনি হবে, মসজিদ মন্দির হবে কিংবা এদেশ ভারত হবে ....? এদেশের সরলপ্রাণা ধর্মীয় জনগণ কিছুদিন আমলে নিলেও তা এখন তারা আর বিশ্বাস করে না। যাহউক- জাতীয় শোক দিবস ও জন্ম দিনকে এক করে ও রাজনৈতিক দল সমূহের মধ্যে সাম্যতা বিনিময়ের মতামত এ লেখায় বিবৃত হওয়ায় হয়তো অনেকেই পাগলের প্রলাপ বলে হাস্যরসে মেতে উঠছেন! অন্তত কৌশলগত সৌহার্দতা বিনিময়ে ক্ষতি কোথায়? পাঁচই জানুয়ারীর পূর্বে জননেত্রী হাসিনার দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে টেলিফোন করা কিংবা কোকোর অকাল মৃত্যুতে সমবেদনার উদ্যোগ বিফলে যায়নি বরং শিষ্টাচার প্রদর্শিত হওয়ায় প্রশংসিত হয়েছে। এছাড়াও সাহসী বাঙালির সদিচ্ছা সব অসম্ভবকে পিছে ফেলে মাথা উঁচু করে দাড়ানোর অনেক দৃষ্টান্ত আমাদেরকে বলবান করে রেখেছে। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার, জাতির জনকের হত্যার বিচার, সমুদ্র বিজয়, হিমালয় বিজয়, পার্বত্য চট্রগ্রামে শান্তি চুক্তি, পদ্মা সেতু নির্মাণের সফল উদ্যোগ, বিভিন্ন সীমান্ত চুক্তি, জঙ্গিবাদ দমন,ক্রিকেট বিশ্বে টাইগারদের হুংকার, প্রযুক্তির উন্নয়ন ...ইত্যাদি আমাদের অভয় দেয় -আমরা পেরেছি, আমরা পারছি এবং ভবিষ্যতেও আমরা পারবো। আমরা বীর বাঙালি, কাপুরুষ নই। বিশ্বাস করি ভাঁওতাবাজি ক্ষনস্থায়ী। দেশের মানুষ শিক্ষিত হচ্ছে -দেশ ডিজিটালের পথে এগিয়ে যাচ্ছে। আগামি নির্বাচনে ক্ষমতায় যাওয়ার গণতান্ত্রিক সভ্য হাতিয়ার হওয়া উচিৎ- দেশের জন্য আসলেই কে কি করলো, গণতন্ত্র রক্ষা করে উন্নতি কাকে দিয়ে হবে ইত্যাদি বিবেচনায় প্রাধান্য দেওয়া।আর প্রতিযোগিতার এ সভ্য সংস্কৃতি সংযোজনে যিনি বা যারা সফল হবেন সোনার বাংলায় স্বর্ণাক্ষরে লিখিত হয়ে সেই দল বা নেতা-নেত্রী ইতিহাস হয়ে থাকবেন। দেশ সেবায় স্বার্থক হলেই লজ্জিত হবে যারা বা যে দল জাতির পিতার শোক দিবসে মিথ্যা জন্ম দিন পালন করেন অথবা সঠিক জন্ম দিন পালনকে কটাক্ষ করেন।নূতন প্রজন্ম এই বিশ্বায়নের যুগে প্রবীণদের কার্যকলাপে আশান্বিত হতে চায়। অন্যথায় দেশের উন্নতি হলেও বিজ্ঞরা টিপ্পনি কেটে বলবেন -গোবরে পদ্ম ফুল ফুঁটেছে বটে তবে গন্ধ যায়নি!
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে আগস্ট, ২০১৫ সকাল ১১:২৮
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পিরিতের সংস্কৃতিওয়ালা তুমি মুলা’র দিনে আইলা না

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ১৬ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:৫৬


---- আমাদের দেশে ভাষা, সংস্কৃতি এবং সামাজিক সমুন্নয়ন তলানিতে। তেমন কোন সংস্কৃতিবান নেই, শিরদাঁড়া সোজা তেমন মানুষ নেই। সংস্কৃতির বড় দান হলো ভয়শূন্য ও বিশুদ্ধ আত্মা। যিনি মানবের স্খলনে, যেকোন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইসরায়েল

লিখেছেন সাইফুলসাইফসাই, ১৬ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৪৮

ইসরায়েল
সাইফুল ইসলাম সাঈফ

এ মাকে হত্যা করেছে ইসরায়েল
এ বাবাকে হত্যা করেছে ইসরায়েল
নিরীহ শিশুদের হত্যা করেছে ইসরায়েল
এই বৃ্দ্ধ-বৃদ্ধাদের হত্যা করেছে ইসরায়েল
এ ভাইক হত্যা করেছে ইসরায়েল
এ বোনকে হত্যা করেছে ইসরায়েল
তারা মানুষ, এরাও মানুষ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

গ্রামের রঙিন চাঁদ

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৬ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১২


গ্রামের ছায়া মায়া আদর সোহাগ
এক কুয়া জল বির্সজন দিয়ে আবার
ফিরলাম ইট পাথর শহরে কিন্তু দূরত্বের
চাঁদটা সঙ্গেই রইল- যত স্মৃতি অমলিন;
সোনালি সূর্যের সাথে শুধু কথাকোপন
গ্রাম আর শহরের ধূলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ১৬ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১৭



পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহারের ধ্বংসাবশেষঃ
পালবংশের দ্বিতীয় রাজা শ্রী ধর্মপালদেব অষ্টম শতকের শেষের দিকে বা নবম শতকে এই বিহার তৈরি করছিলেন।১৮৭৯ সালে স্যার কানিংহাম এই বিশাল কীর্তি আবিষ্কার করেন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

পরবাসী ঈদ

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৬ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:২৩

আমার বাচ্চারা সকাল থেকেই আনন্দে আত্মহারা। আজ "ঈদ!" ঈদের আনন্দের চাইতে বড় আনন্দ হচ্ছে ওদেরকে স্কুলে যেতে হচ্ছে না। সপ্তাহের মাঝে ঈদ হলে এই একটা সুবিধা ওরা পায়, বাড়তি ছুটি!... ...বাকিটুকু পড়ুন

×