১. ১৯৯৬ সাল। প্রায় ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ জাতির কাছে অতীতের সব কিছুর(বাকশাল, রক্ষী বাহিনী ইত্যাদি) জন্য ক্ষমা চেয়ে, ইসলামী লেবাস নিয়ে নির্বাচনে জয়লাভ করে। আওয়ামী লীগ পায় ১৪৬ সিট, বি এন পি পায় ১১৬ সিট। ৫ বছর পরই ২০০১ সালে আবার হেরে যায় বিএনপি জোটের কাছে। এবার বিএনপি পায় ১৯৩ সিট, আওয়ামী লীগ পায় ৬২ সিট। ২১ বছর পর তারা ভালো কাজ করে জনগণের সমর্থন নিতে পারত। কিন্তু নানা ব্যর্থতায় জনগণ আবার বি এন পি-কে বেছে নেয়...
২. বি এন পি মাত্র ৫ বছরের মাথায় ক্ষমতা পেয়ে নিজেদের অজেয় ভাবতে শুরু করে। সংখ্যা গরিষ্ঠ ইসলামী ভোট, বি এন পি ভোট, আওয়ামী গডফাদার(হাজারি, হাজী সেলিম, মকবুল, আবু তাহের), আওয়ামী লীগের সামান্য সিট - সবকিছু বিবেচনায় রেখে বিএনপি নেতারা মনে করতে থাকে এই জোটকে আর সহজে আওয়ামী লীগ হারাতে পারবে না। খালেদা জিয়া জনসভায় বলেন, ১৫ বছরেও আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসতে পারবে না। নাজমুল হুদা (বর্তমানে বি এন পি বিরোধী) বলেছিলেন, ৪ দলীয় জোটকে ৪০ বছরেও হারানো যাবে না। কিন্তু তারা মাত্র ৫ বছর পরেই ক্ষমতা হারায়। অবশ্য ২০০৬ সালের আন্দোলন না হলে বিএনপি আবারও ক্ষমতায় আসতো(সেটা ভিন্ন প্রসঙ্গ)।
৩. আওয়ামী লীগ কি জিনিস তা ১৯৯৬-এর অসহযোগ আন্দোলনের মাধ্যমে বিএনপি'র বোঝার কথা। তবুও মওদুদের বেকুবি-তে খামাখা নিজেদের মতাদর্শের প্রধান বিচারপতি কে.এম. হাসানকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান বানানোর জন্য বিচারপতিদের অবসরের বয়স ২ বছর বাড়িয়ে দেয়। বি এন পি এত এত ইস্যু পেয়েও আওয়ামী লীগকে নামাতে পারছে না। কিন্তু আওয়ামী লীগ এই একটা ইস্যুতেই বিএনপিকে হারিয়ে দেয়। আওয়ামী লীগ জানে ভোটের রাজনীতিতে বিএনপি জোটকে হারানো কঠিন। তাই প্রথম সুযোগেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল করে দেয়...
৪. আওয়ামী লীগ বুঝে গিয়েছে প্রশাসন, আর্মি, পুলিশ নিজেদের থাকলে কেউ তাদের হারাতে পারবে না। তাই এখন বিএনপি-কে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে বক্তব্য দিচ্ছে। সৎ সাহস না থাকার কারণে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতেও ভয় পাচ্ছে। তবে দিন সব সময় এক যায় না। কয়েকদিনের ব্যবধানে আনিসুল হক, মহিউদ্দিন চৌধুরী, সায়েদুল হক মারা গিয়েছেন। কেউ অমর নয়। খালেদা জিয়া যেমন ভেবেছিলেন, আওয়ামী লীগ আর আসবে না সহজে, এখন শেখ হাসিনা ভাবছেন বিএনপি আর আসতে পারবে না। সময়ই সব বলে দিবে...
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ৮:১৯