১. লা লীগায় যখন রিয়াল মাদ্রিদ বা বার্সেলোনার বিপক্ষে কোন নতুন বা দুর্বল দল খেলে তখন একটা জিনিস দেখা যায় যে দুর্বল দলের সমর্থকরাও নিজ দলকে সমর্থন দিয়ে যায়। দুর্বল দল অনেক গোল খেলেও যদি সবল দলের জালে একটা গোলও দেয় তখন তাদের উল্লাস করতে দেখা যায়। বিপক্ষ দলে মেসি বা রোনালদোর মত খেলোয়াড় থাকার পরও তারা সেসব দলকে সমর্থন করে না ঐদিন। নিজ দলের জার্সি পতাকা নিয়ে হাজির হয় মাঠে...
২. বাংলাদেশে প্রতি চার বছর পর পর বিশ্বকাপ নিয়ে যা হয় তা এক ধরনের মাতলামি। যদিও মিডিয়া এটাকে উন্মাদনা বলে থাকে। কিন্তু এই উন্মাদনা এক সময় মৃত্যু, আত্মহত্যা পর্যন্তও গড়ায়। পাড়ায় পাড়ায়, বন্ধুতে বন্ধুতে মারামারি একদমই অগ্রহণযোগ্য। মিডিয়ার উচিত এই উন্মাদনার খবরের পাশাপাশি মনস্তাত্বিকভাবে সবাইকে সঠিক পথে রাখা। কেউ যেন উসকানিতে পা না দেয়। তারকাদের উচিত ম্যাসেজ দেয়া যাতে কেউ বাড়াবাড়ি না করে। সামাজিকভাবেও সিনিয়রদের দায়িত্ব আছে। এটা স্রেফ একটা খেলা মাত্র - এটা সবার বোঝা উচিত। আল্লাহ বাঁচাইছে শেষ মুহূর্তে আর্জেন্টিনা চান্স পেয়েছে এবার। না হলে ব্রাজিলিয়ান সমর্থকদের উসকানিতে কতই না মারামারি হত!
৩. প্রাইমারী বইতে কালো মানিক পেলের কথা থাকলেও সম্ভবত বড় মামার প্রভাবে ম্যারাডোনার কারণে আর্জেন্টিনার প্রতি সমর্থন শুরু হয়। তার উপর ১৯৯০ থেকেই(যেবার বিশ্বকাপ বুঝতে শিখি) বিশ্বকাপ বিটিভির পর্দায়(এর আগে বিটিভিতে দেখিয়ে থাকলে আমার ভুল শুধরে দেবেন কেউ) দেখানো শুরু হওয়ায় সবার মনে ধরে যায় ম্যারাডোনার কীর্তি আর কান্নার গল্প। এক ম্যারাডোনার কারণেই বাংলাদেশের মানুষ আর্জেন্টিনার ভক্ত। সেই যে শুরু হল আর কমেনি বরং বেড়েছে। তার উপর আরেক জাদুকর মেসির কারণে আর্জেন্টিনার ভক্তকূল ভালোভাবেই প্রতিষ্ঠিত হয়ে গিয়েছে এবং থাকবে মনে হয় আরো অনেক বছর(সাফল্য না থাকলেও)...
৪. খেলোয়াড়রা দল বদলায়, রাজনীতিবিদরা দল বদলায় কিন্তু সত্যিকারের সমর্থকরা মন বদলায় না। ১৯৯০ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত বিশ্বকাপ ও কোপা-তে আর্জেন্টিনার বারবার ব্যর্থতার পর মন কয়েকদিন খারাপ থাকত। কিন্তু এখন আর মন খারাপ হয় না। এটা একটা খেলাই। মনকে বেশী জড়ালে নিজেরই ক্ষতি। তাই এবারও যদি আর্জেন্টিনা বা মেসি ব্যর্থ হয় তবুও সমর্থন করে যাব আর্জেন্টিনা ও মেসিকে...
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে মে, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৩৮