১. যে কোন খুন/হত্যাকান্ড হলেই গোয়েন্দা/পুলিশের কর্ম পদ্ধতি অনেকটা এরকম(যতটুকু গল্প/উপন্যাস বা ক্রাইম সিরিজ দেখে বুঝেছি) -
* খুনের মোটিভ(কারণ) কী?
* কেউ সন্দেহের বাইরে নয়।
* মৃতের শত্রুদের প্রাথমিক তদন্তে রাখা।
* ইমিডিয়েট বেনিফিশারি কে?
* যাকে জোরালো ভাবে খুনী বলা হচ্ছে সে ধরা পড়ার মত কোন ক্লু রাখবে কিনা বা কাজ করবে কিনা।
২. শেখ হাসিনাকে কারা হত্যা করতে চাইবে? প্রথমেই সন্দেহের তালিকায় আসবে যারা তার পিতাকে হত্যা করেছে তারা। কারণ, শেখ হাসিনা যে বাবার খুনীদের বিচার করবেন সেটা ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসেই জানিয়ে দিয়েছেন ইনডেমনিটি বাতিল আর খুনীদের গ্রেফতারের মাধ্যমে। তারও অনেক আগে ফ্রিডম পার্টি(বঙ্গবন্ধু হত্যার ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্ত ফারুকের দল) এরকম একটা চেষ্টাও করেছিল। উগ্র মৌলবাদীরাও শেখ হাসিনাকে(উল্লেখ্য ইসলামিক দৃষ্টিতে এপিয়ারেন্সের ক্ষেত্রে খালেদা জিয়া শেখ হাসিনার চেয়ে নিম্নমানের হলেও মৌলবাদীরা শেখ হাসিনাকে অপছন্দ করে) দেখতে পারে না। কারণ, আওয়ামী লীগের ধর্ম নিরপেক্ষতা ও হিন্দু সখ্যতা অনেক সময় ইসলামের ক্ষতি করে। ২০০০ সালে কোটালীপাড়াতে বোমাও পুঁতে রাখা হয়েছিল শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে। যা পরে প্রমাণিত হয়েছে হরকাতুল জিহাদ করেছিল...
৩. ২০০৪ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ছিল না। ঐ বছর আবদুল জলিলের ৩০শে এপ্রিলের ট্রাম্পকার্ড তারেক আর কোকো ক্রিকেট খেলে উপভোগ করেছেন। বিএনপি-ও ক্ষমতা থেকে সরেনি। জামায়াতের বড় নেতারা তখনও জীবিত ও মন্ত্রীও বটে। বিএনপি তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে আওয়ামী লীগের নেতাদের নিয়ে কথা বলে(তবে এখনকার হাসান, হানিফ, ইনুদের মত না)। তারেক রহমান সিএনজি আর কোকো সিম্যান্স নিয়ে ব্যস্ত। ইন্টারনেট, প্রাইভেট চ্যানেল ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গিয়েছে। এখনকার মত তখনও প্রিন্ট ও ভিজ্যুয়াল মিডিয়াতে আওয়ামীদের দাপট। এখনকার মত তখনও সংখ্যাগরিষ্ঠ বুদ্ধিজীবি আওয়ামী পন্থী। আর এখনকার আওয়ামী লীগের মত বিএনপি-ও ভাবত ১৫ বছর তারা ক্ষমতায় থাকবে...
৪. তাই শেখ হাসিনাকে হত্যা করার মত কোন মোটিভই নেই বিএনপি'র জন্য। আর তারেক জিয়া হাওয়া ভবনে বসে শেখ হাসিনাকে হত্যার প্ল্যান করবেন, তার সাথে আরো অনেক সংসদ সদস্য - সিনারিওটা শুধুমাত্র অন্ধ আওয়ামী লীগার রাই ভাবতে পারে। এখন যদি শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়(আল্লাহ না করুক) তাহলে প্রথমেই সন্দেহ যাবে জামায়াতের উপর কারণ, তাদের শীর্ষ নেতাদের ফাঁসি দেয়া হয়েছে অথবা হেফাজতে ইসলামের উপর, কারণ, তাদের অনেক কর্মীকে শাপলা চত্বরে হত্যা করা হয়েছে। ২০০৪ সালে বিএনপি'র জন্য শেখ হাসিনা কোন থ্রেটই ছিল না...
৫. নিকট অতীতে এমপি হওয়ার জন্য প্রতিদ্বন্দ্বীকে খুন করার ঘটনা ঘটিয়েছেন জাতীয় পার্টির কাদের খান, মঞ্জুরুল ইসলাম লিটনকে হত্যা করিয়ে। কিন্তু একজন সিটিং প্রধানমন্ত্রীর পুত্র সম্ভাব্য প্রধানমন্ত্রীকে হত্যা করাবেন বা প্ল্যান করবেন এতটা বোকা তারেক রহমান নন(পড়ালেখায় যতই দুর্বল হন না কেন)। শেখ হাসিনাকে হত্যা করে বাবর, কায়কোবাদের কী লাভ জানি না। হাইপোথেটিক্যালি মাওলানা তাজউদ্দিন না হয় তার ভাই আবদুস সালাম পিন্টুর সহযোগীতা পেলেও পেতে পারেন। হারিস চৌধুরী ছিলেন খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব তিনি তারেক রহমানের সাথে এত মিশতেনও না। তবে জিয়াউর রহমানের(বঙ্গবন্ধু উৎখাতের ব্যপারে) মত এদের কেউ কেউ মুফতি হান্নানের প্ল্যান জেনেও চুপ থাকলেও থাকতে পারেন(হাইপোথেটিক্যালি)...
৬. এটা বাংলাদেশ। এখানে ক্ষমতায় থাকলে দুর্নীতির মামলার সাজা পেয়েও মন্ত্রীত্ব যায় না বরং খালাস দেয়া হয়। আবার খুনীকে রাষ্ট্রপতির ক্ষমা দেয়া হয়। অন্যদিকে চূড়ান্ত রায়ের আগে ক্ষমতার বাইরে থাকা জনপ্রিয় নেতাকে জামিন না দিয়ে জেলে রাখা হয় মাসের পর মাস।
পুনঃশ্চ - এর আগে চাঁদগাজীর এক পোস্টে লিখেছিলাম, জজ মিয়া নাটকের জন্য তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, পুলিশ, ডিজিএফ আই-এর বিচার হোক এটা আমি চাই। আর ফেসবুকে বিএনপি পন্থী গ্রুপগুলোতে যে প্রশ্ন গুলো করা হয়েছে সেগুলো এখানে আর দিলাম না...