১. আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তা অনেক কম। শেয়ার বাজার, ব্যাংক লুটপাট, গুম, খুনের কারণে এবং ১০ বছর টানা ক্ষমতায় থাকার কারণে স্বাভাবিক ভাবে সবাই পরিবর্তন চাইছে। আওয়ামী লীগের সমর্থকরা কখনোই চাইবে না হারতে। কিন্তু এর বাইরে জনগণের বিশাল একটা অংশ চায় আওয়ামী লীগ থেকে যাক। ফেসবুক, ব্লগ, পত্রিকায় বিভিন্ন মন্তব্য পড়ে এটা জানা যায়। তাদের একটাই কথা - শান্তি চাই, হরতাল-অবরোধ, জ্বালাও-পোড়াও, ভাঙচুর চাই না। তাদের মতে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাতে এসব এখন আর নেই। বিরোধী দলে গেলে এসব আবার শুরু হবে। তাদের আরও একটা যুক্তি হল, বিএনপি ক্ষমতায় এসেই প্রতিশোধের রাজনীতি শুরু করবে। মোট কথা, সরকার বদল হলে ক্ষতি হবে সাধারণ মানুষেরই...
২. আমি নিজেও হরতাল-অবরোধ, জ্বালাও-পোড়াও, ভাঙচুরের বিরোধী। আগেও এক লেখায় বলেছি - ২০১৪ সালের অবরোধের আমি একজন প্রত্যক্ষ ভূক্তভোগী। আমিও শান্তি চাই। আমার প্রশ্ন ঐ গ্রুপের কাছে - শান্তি চাইলে একই ভাবে বিএনপি আসলে কী ক্ষতি? বিএনপি এসেও না হয় আওয়ামী লীগের মত জেল, হত্যা, গুম, মামলা দিয়ে পুলিশ, আর্মি, বিচার বিভাগ নিয়ন্ত্রণ করে বিরোধী মতকে দমন করবে। আফটার অল, শান্তিই তো চাই আমরা!
৩. তাহলে সমাধান কী? সমাধান কিন্তু ২০০১ সালেই বিএনপি ক্ষমতায়(দুই তৃতীয়াংশ আসন) এসে দিয়েছিল। গোল্ড ফিস মেমোরির জনতা তো মনে রাখবে না। তাই মনে করিয়ে দেই আরেকবার -
* বিজয়ী হওয়ার পর জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষণে খালেদা জিয়া সব নেতা-কর্মী, সমর্থকদের মানা করেছিলেন বিজয় মিছিল করতে। কারণ, এসব বিজয় মিছিলে প্রতিপক্ষের সাথে ঝামেলা হওয়ার আশংকা থাকে। এই সিদ্ধান্ত নিয়ে বিএনপি পন্থী প্রিন্ট মিডিয়াগুলো সমালোচনা করেছিল খালেদা জিয়ার। এখন কেউ কেউ বলবেন, ঐ সময়ের বিজয়ের পর পর সংখ্যালঘু নির্যাতনের কথা। এগুলো এলাকাভিত্তিক বিচ্ছিন্ন ঘটনা মাত্র...
*জাতির উদ্দেশ্যে খালেদা জিয়া একটা ভাষণে(সম্ভবত প্রথম ভাষণে) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে শ্রদ্ধা জানিয়েছিলেন...
* পরের বছর সম্ভবত স্বাধীনতা পুরস্কার(মরণোত্তর) দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু ও জিয়াউর রহমান কে। তাদের প্রতি সম্মান জানিয়ে সে বছর আর কাউকে পুরস্কার দেয়া হয়নি...
(বিএনপি অন্তত চেষ্টা করেছিল বিভাজন কমিয়ে আনার)
৪. এবার আসি বিএনপি'র ক্যাডার, সন্ত্রাসীদের প্রসঙ্গে। ২০০১ সালে ক্ষমতায় আসার কিছুদিনের মধ্যেই বিএনপি শুরু করে 'অপারেশন ক্লিন হার্ট'-এর। যেখানে অনেক শীর্ষস্থানীয় সন্ত্রাসী 'হার্ট এ্যাটাক'-এ মারা যায়। বিএনপি'র অনেক কর্মী হতাশ হয়েছিল তখন, কারণ বেশ কয়েকজন বিএনপি নিবেদিত(!) সন্ত্রাসীও ঐ অপারেশনে মারা যায়। বিএনপি আমলেই প্রথম ক্রসফায়ারে মৃত্যু হয় পিচ্চি হান্নানের। RAB, দ্রুত বিচার ট্রাইবুনাল - ও বিএনপি'র করা...
৫. কাজেই, আমাদের ফোকাস করতে হবে আইনের দিকে। আইন সবার জন্য সমান আছে কিনা। বিএনপি বা অন্য দল এসে অন্যায় করলে আমাদের এখনকার মতই প্রতিবাদ করতে হবে। তার আগ পর্যন্ত জোর করে কোন দলকে ক্ষমতায় রাখার সমর্থন জানানো যায় না...
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই নভেম্বর, ২০১৮ রাত ৯:১৩