somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রকৃত সিয়ামকে অনুধাবন, পালন ও প্রতিষ্ঠাই হোক এ রমজানের শপথ

২৭ শে মে, ২০১৭ সকাল ১০:৫৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
সবাইকে মাহে রমজানের শুভেচ্ছা।



‘হে মুমিনগণ! তোমাদের উপর সিয়াম ফরজ করা হয়েছে, যেমনি ফরজ করা হয়েছে তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর—যাতে তোমরা মুত্তাকি হতে পার।” ( সূরা বাকারা, আয়াত ১৮৩)

রমজান মাস, এতে নাযিল করা হয়েছে আল-কুরআন, যা মানুষের দিশারী এবং ষ্পষ্ট নিদর্শন ও সত্যাসত্যের পার্থক্যকারী। ( সূরা বাকারা, আয়াত ১৮৫)

রমযান (আরবি ভাষায়: رمضان‎ রমদ্বান, হল ইসলামিক বর্ষপঞ্জিকা অনুসারে নবম মাস, যে মাসে বিশ্বব্যাপী মুসলিমগণ ইসলামিক উপবাস সাওম পালন করে থাকে। রমজান মাসে রোজাপালন ইসলামের পঞ্চস্তম্ভের মধ্যে তৃতীয়তম। রমজান মাস চাঁদ দেখার উপর নির্ভর করে ২৯ অথবা ত্রিশ দিনে হয়ে ।

'সওম'-এর শাব্দিক অর্থ বিরত থাকা। ইসলামী শরীয়তে পানাহার ও সহবাস থেকে বিরত থাকার নাম 'সওম'। সওম-এর বহুবচন হচ্ছে সিয়াম, যাকে আমরা রোযা বলে থাকি। এ মাসে প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক মুসলিম ব্যক্তির উপর সাওম পালন ফরয, কিন্তু অসুস্থ, গর্ভবতী, রোগী, ঋতুবর্তী নারীদের ক্ষেত্রে তা শিথিল করা হয়েছে। রোজা বা সাওম হল সুবহে সাদিক থেকে সুর্যাস্ত পর্যন্ত সকল প্রকার পানাহার, পঞ্চইন্দ্রিয়ের দ্বারা গুনাহের কাজ এবং (স্বামী-স্ত্রীর ক্ষেত্রে) যৌনসংগম থেকে বিরত থাকা।

আবার কোরআনের ভাষায় চুপ থাকা, নিরবতা পালন, সংযম অবলম্বন, নিস্তব্ধতাকেও সিয়াম বলা হয়েছে ।

“ (সন্তান ভূমিষ্ঠ করার পর ) যদি তুমি কাউকে (কোন প্রশ্ন বা কৈফিয়ত করতে ) দেখ, তবে তুমি বল, ' আমি দয়াময়
আল্লাহ্র জন্য (কথা বলা থেকে ) ""বিরত " থাকার নজর মেনেছি । সুতরাং আজ আমি কিছুতেই কোন মানুষের সাথে কথা বলব না ।
(সূরা মারইয়াম / 26 )
এখানে ''সওম" এর অর্থ হচ্ছে কথা বলা থেকে বিরত থাকা ।

পবিত্র রমজানে সকল বিশ্বাসী, মুসলিম, মুমিন, মুত্তাকী সকলেই যার যার মুক্তি ও কল্যানের জন্য সামর্থ অনুযাীয় আমল করার চেষ্টা করে থাকেন।
কিন্তু দু:খজনক সত্য হলো কিছু ভুল, কিছু প্রক্ষেপন, কিছু ধারনায় আমরা মূল সত্য থেকে অনেক দূরে সরে গেছি। আত্মিক এবং বাহ্যিক উভয় মিলেই যেখানে পূর্ণতা সেখানে আমরা কেবলই বাহ্যিক আচার অনুষ্ঠানেই আটকে আছি। তা যেমন সালাম বা নামাজে, ফিতরা বা দানে, তেমনি সিয়াম বা রোজায়!
যে সংযম, যে বিরত থাকার, যে নিয়ন্ত্রনের জন্য মাসব্যাপী সাধনার হুকুম- তাই ব্যার্থতায় পরিণত হয় সেই সব ভুলে।

মৌ-লোভী মোল্লারা ছোটকালে শুনেছি বলেছে- রোজার মাসে যত খাও কোন হিসাব নেই!!!!!!!!!!!!
কি বৈপ্যরীত্তের আহবান!!! ভাবা যায়! এখন হুজুর বলেছে এবং নিজেদের্ও খাবারের প্রতি দুর্বলতা সব মিলে সমাজে ক্যান্সারের চেয়ে ভয়াবহ ভাবে ছড়িয়ে গেছে রমজানের ভোগ! অথচ মাসটাই ত্যাগের! সংযমের। আর তাই দেখা যায় সারাদিন উপোসের ভাব ধরে রেখে সন্ধ্যা না হলেই ঝাপিয়ে পড়ি -খাবারের উপর!!!!!! এই অধিক ভোগ মানসিকতায়ই বাজার মূল্য বেড়ে যাচ্ছে লাগামহীন! দরিদ্ররা পড়ছে আরো বেশি কষ্টে!

অথচ উল্টোটা হয়েছে আগে। নবী সা: ্এর সময়, খেলাফতের সময়, ইসলামের মূল শিক্ষার সময়। রমজান এলে সকল দ্রব্যের মূল্য কমে যেত। মানুষের চাহিদা কমে যেত! সংযমের মানসিকতায় খাদ্য অন্য মাসের চেয়ে কম লাগত। ফলে বাজারে তার প্রভাব পড়ত। আর দরিদ্র মানুষেরা তাতে উপকার ভোগী হতো।

যে সংযম আবশ্যিক করা হয়েছে, আসুন তা যথাযথ পালন করি। ইফতারে সেহরীতে বাহুল্য বর্জন করি। স্বাভাবিক পানাহারের মাঝে কেবল এক বেলা বর্জন । মহান আল্লাহর হুকুম এবং সিয়ামের প্রকৃত অর্থ বাস্তবায়ন করতে, নিজেদের উপোসী না করে সিয়ামকারী হিসিবে প্রতিষ্ঠিত করতে- বদলে ফেলুন নিজেদের ভুল গুলো। ভোগের যে প্রচলিত বিলাস ব্যসন তা বর্জ ন করুন। কাড়ি কাড়ি ইফতারী নয়, সেহরীতে মাছ, মাংস দুধ, দই উন্নতমানের সব বাড়তি আইটেম নয়- স্বাভাবিক পানাহারের থেকেও কম গ্রহণই কিন্তু আল্লাহর আদেশ। সর্ব প্রকার ত্যাগেরই কিন্তু আদেশ দেয়া আছে।

ভাবুন আল্লাহর আদেশ মানবেন না প্রচলিত ধারনা!????

মহান আল্লাহ পাক আমাদের প্রকৃত সিয়ামকে অনুধাবন, পালন ও প্রতিষ্ঠা করার জ্ঞান, সক্ষমতা এবং মন মানসিকতা দান করুন।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে মে, ২০১৭ সকাল ১০:৫৯
১৭টি মন্তব্য ১৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় রাজাকাররা বাংলাদেশর উৎসব গুলোকে সনাতানাইজেশনের চেষ্টা করছে কেন?

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সম্প্রতি প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন? শিরোনামে মোহাম্মদ গোফরানের একটি লেখা চোখে পড়েছে, যে পোস্টে তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি করাটা প্রফেসরদেরই ভালো মানায়

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৩


অত্র অঞ্চলে প্রতিটা সিভিতে আপনারা একটা কথা লেখা দেখবেন, যে আবেদনকারী ব্যক্তির বিশেষ গুণ হলো “সততা ও কঠোর পরিশ্রম”। এর মানে তারা বুঝাতে চায় যে তারা টাকা পয়সা চুরি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরান-ইজরায়েল দ্বৈরথঃ পানি কতোদূর গড়াবে??

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:২৬



সারা বিশ্বের খবরাখবর যারা রাখে, তাদের সবাই মোটামুটি জানে যে গত পহেলা এপ্রিল ইজরায়েল ইরানকে ''এপ্রিল ফুল'' দিবসের উপহার দেয়ার নিমিত্তে সিরিয়ায় অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেট ভবনে বিমান হামলা চালায়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×