somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শিশুতোষ মনস্তত্ব: বিজ্ঞানবাক্স, কিছু ভাবনা

২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ৮:১৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

"প্রজন্মের ভবিষ্যৎ নিশ্চয়তায় চাই সুষ্ঠূ শিক্ষাব্যবস্থা"। আমাদের সামহোয়ার ইনের এ বছরের প্রতিপাদ্য- সময়ের বাস্তবতাকেই যেন প্রতিফলিত করেছে। শিক্ষা ব্যবস্থার ঢালাও ক্রমাবনতি, মানহীন পাসের হার বৃদ্ধি এবং এই প্রজন্মের ভবিষ্যত নিয়ে শংকিত সকল সুধিজন। মুখস্ত বিদ্যার বদলে সৃজনশলিতার প্রকৃত বিকাশে জ্ঞান শুধু পুথিগত বিদ্যায় নেই। চাই আনন্দময় শেখার মাধ্যম। অথচ চলমান সময়ে স্কুল, কোচিং আর একগাদা বইয়ের ভীরে শিশুর মেধা যেন ক্রমশ চাপা পড়ে যাচ্ছে।
শহুরে শিশুরা আছে আরো ব্যাপক মাত্রার কষ্টে! না আছে খোলা মাঠ! না আছে প্রকৃতির পাঠশালা! না বিদ্যায়তনগুলোর যুগোপযোগী শিক্ষা!ফ্লাট, স্কুল, কোচিং এর আটপৌড়ে ঘেরাটোপে বন্দী জীবন, জীবনবোধ। সৃজনশীলতা যেন জানালা দিয়ে দেখা একটুকরো অধরা খোলা আকাশ!



এমন ক্রান্তিকালে আবার আশার আলোও দেখতে পাই ভিন্ন দৃষ্টিতে। একটা প্রজন্ম প্রচন্ড রকম বিজ্ঞানুরাগী এবং প্রকৃত জ্ঞানানুসন্ধানী।একদল শিশুকে দেখেছি অনলাইনে ভিডিও দেখে দেখে আপনমনেই তারা “অরিগামী” চর্চা করে চলেছে। কাগজ দিয়ে গড়ে তুলছে মনের আনন্দে নানা শিল্পকর্ম। তাদের ক্ষুদ্র সাহস আর সামর্থে তারা এগিয়ে চলছে নিরন্তর। তাদের শুধু পরিচর্যার প্রয়োজন। শিক্ষা ব্যবস্থার পরিবর্তন যথেষ্ট সময় সাপেক্ষ এবং দীর্ঘমেয়াদী বিষয় হলেও তাদের মানসিকতাকে উপযুক্ত করে গড়ে তোলার এখনই সময়। শিশুকালে যে শিক্ষা লাভ করে তার ছায়া, প্রভাব সারাজীবন রয়ে যায়। তাই শৈশবেই যদি প্রকৃত জিগিষা জাগিয়ে তোলা যায় তারাই হবে ভবিষ্যতের জ্ঞানের কান্ডারী।



শিশুরা অনুকরণ প্রিয়। শিশুরা প্রচন্ড কৌতুহলী। তাদের চারপাশ থেকেই তারা তাদের জ্ঞান তৃষ্ণা নিবারনের চেষ্টা করে। তাই তাদের জন্য চাই সেইরকম অনুকুল পরিবেশ। যাতে তারা সত্য, সঠিক এবং প্রকৃত জ্ঞানন্বষনের সুযোগ পায়। তৃষ্ণার্ত এইরকমই এক কিশোরের অনুরোধে অনলাইনে খুঁজতে লাগলাম আনন্দময় বিজ্ঞান শেখার কোন আয়োজন আছে কিনা?
গুগল সন্ধান দিল বিজ্ঞান বক্সের। রকমারী, ফেসবুক, ইউটিউব মিলে অনুসন্ধানের পর মনে হল এক সোনালী ভবিষ্যত যেন দেখতে পেলাম বিজ্ঞান বক্সে। দারুন ইনোভেটিভ শিশুতোষ আয়োজনে শিশুদের বিজ্ঞান মনস্ক করে গড়ে তোলার এক গুপ্ত খনির সন্ধান পেলাম যেন। খেলতে খেলতে বিজ্ঞানের চেতনা নিয়ে বেড়ে ওঠার এক দারুন শুভারম্ভ। ক্লিকের পর ক্লিক! যেন নিজেই শিশু হয়ে গেছি! সত্যি মনে হল এ যেন শিশু-কিশোরদের বিজ্ঞান শিক্ষায় আগ্রহী করে তোলার এক পরশপাথর! দারুন কৌতুহলে খুঁজে পেলাম এ পর্যন্ত মোট ৫টি অন্যরকম বিজ্ঞান বাক্স বের হয়েছে। যেন জ্ঞানের পাঁচ মহাজগত!

এতে রয়েছে এমন কিছু দারুণ যন্ত্রপাতি এবং ভিডিও টিউটোরিয়াল, যা ব্যবহার করে শিশুরা নিজেদেরকে ভাবতে পারবে ক্ষুদে বিজ্ঞানী, অনুভব করতে পারবে বিজ্ঞানের সৌন্দর্য। বিজ্ঞানবক্স ব্যবহারের ভিডিও দেখতে দেখতে মনে হয়- আহ যদি আমাদের সময় এমন পেতাম!



কি কি করা যায় এই বিজ্ঞান বাক্স দিয়ে ? আরো ক্লিক, আরো ক্লিক! যে ৫টি বক্স আছে তাতে ইনোভেটিভ বিজ্ঞান চর্চায় যে বিষয়গুলো খূঁজে পেলাম যা নিয়ে প্রাথমিক আয়োজন সাজানো হয়েছে তা হলো, আলোর ঝলক, তড়িৎ তান্ডব আর চুম্বকের চমক, রসায়ন রহস্য, অদ্ভুত মাপজোখ। আলোর ঝলকে পেরিস্কোপ দিয়ে দৃষ্টিসীমার বাইরের জিনিস দেখা, ফানি চশমার মাধ্যমে নতুন আলো দেখার নতুন উপায়! ঘরের ভেতর বা ছাদে রঙধনু তৈরী করা, ইত্যাদি দারুন মজার সব পরীক্ষা! ছবি দিয়ে খূব সহজেই বোঝানোর চেষ্টাও ভাল লাগল!
তড়িৎ তাণ্ডবে ফল-সব্জি দিয়ে ব্যাটারি বানানো, তাপ দিয়ে আলো জ্বালানো, ম্যাজিক মোটর প্রভৃতি। এমনই চমৎকার সব এক্সপেরিমেন্ট নিয়েই তৈরি বিজ্ঞানবাক্সের এক্সপেরিমেন্ট বক্সগুলো। ব্লগে কেউ যদি বাচ্চাদের জন্য এটি কিনে ব্যবহার করে থাকেন-তারা এ বিষয়ে প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা শেয়ার করলে সকলেই জানতে পারব।

শিশুদের মন কাদামাটির মতো। এই সময়ে সে যা শিখবে সেটাই ভবিষ্যতে তার চিন্তার স্ট্রাকচার হয়ে রবে। একটি বিজ্ঞানমনস্ক এবং কৌতুহলী প্রজন্ম গড়তে অন্যরকম বিজ্ঞানবাক্স অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে বলেই দৃঢ় ভাবে মনে হল।এছাড়াও শিশু কিশোরদের আনন্দময় বিজ্ঞান শেখার কোন অনলাইন অফলাইন মাধ্যম কারো জানা থাকলে জানানোর অনুরোধ রইল

ভাবছি সামনে কারো জন্মদিনের দাওয়াত পেলে উপহার হিসেবে অন্যরকম বিজ্ঞানবাক্সই গিফট দেব। যাতে আনন্দের সাথে থাকবে জ্ঞানের উৎস।আশা করি সবচে সুন্দর বিস্ময়কর হাসিটা আমার জন্যেই তোলা থাকবে।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ সকাল ১০:২১
১৬টি মন্তব্য ১৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ডালাসবাসীর নিউ ইয়র্ক ভ্রমণ

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:৪৪

গত পাঁচ ছয় বছর ধরেই নানান কারণে প্রতিবছর আমার নিউইয়র্ক যাওয়া হয়। বিশ্ব অর্থনীতির রাজধানী, ব্রডওয়ে থিয়েটারের রাজধানী ইত্যাদি নানান পরিচয় থাকলেও আমার কাছে নিউইয়র্ককে আমার মত করেই ভাল ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×