২৫ শে মার্চ কালোরাত ও অপারেশন সার্চলাইট
২৫ শে মার্চ ১৯৭১,অপারেশনে নেমেছে পাকিস্তান সেনাবাহিনী।আনুষ্ঠানিক নাম- অপারেশন সার্চলাইট। বাস্তবে নির্বিচার হত্যা, জ্বালাও-পোড়াও স্বাধীনতাকামী বাঙালীর কণ্ঠ বুলেট দিয়ে চিরতরে স্তব্ধ করার আনুষ্ঠানিক যাত্রা।জ্বলছে ঢাকা, মরছে বাঙালী। একইসঙ্গে শুরু হয়ে গেছে মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতার প্রথম প্রহর।
এই অপারেশনের মূল লক্ষ্য ছিলো ইপিআর (ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস, বর্তমানে বিজিবি ) ও পুলিশসহ বাঙালী সেনা সদস্যদের নিরস্ত্র করা, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানসহ আওয়ামীলীগ এর নেতা এবং গুরুত্বপূর্ণ ১৬ জন ব্যক্তির বাসায় হানা দিয়ে তাদের গ্রেপ্তার। ২৫ মার্চ রাত ঠিক সাড়ে ১১টায় রেডিও ট্রান্সমিটারগুলো জীবন্ত হয়ে ওঠে। মূল অপারেশনের সময়সীমা ছিলো রাত একটা (ক্যালেন্ডারের পাতায় ২৬ মার্চ শুরু), তার আগেই টার্গেটের আশেপাশে ইউনিটগুলোর অবস্থান নেওয়ার কথা। তার মধ্যেই প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়ার পশ্চিম পাকিস্তানে পৌঁছে যাবেন। কিন্তু স্বাধীনতাকামী বাঙালী ছাত্র-জনতা তার আগে থেকেই রাস্তায় প্রতিরোধ গড়ে তুলছিলো, গুরুত্বপূর্ণ সড়ক থেকে শুরু করে বিভিন্ন জায়গায় গাছের গুড়ি ও নানা কিছু দিয়ে রোডব্লক তৈরি করেছিলো তারা।
ঢাকার এই অপারেশনে বিভিন্ন দায়িত্বে ছিলো :
১৩ ফ্রন্টিয়ার ফোর্স : ঢাকা সেনানিবাস আক্রান্ত হলে সেটা সামাল দিতে রিজার্ভ হিসেবে রাখা হয়েছিলো তাদের।
৪৩ লাইট অ্যান্টি এয়ারক্রাফট রেজিমেন্ট : তেজগাঁ বিমানবন্দরের দায়িত্বে
২২ বেলুচ : পিলখানায় ইপিআরদের নিরস্ত্রিকরণ ও তাদের ওয়ারলেস এক্সচেঞ্জ দখলের দায়িত্বে।
৩২ পাঞ্জাব : রাজারবাগ পুলিশ লাইনের দায়িত্বে
১৮ পাঞ্জাব : নবাবপুরসহ পুরান ঢাকার হিন্দু অধ্যুষিত এলাকাগুলোর দায়িত্বে
১৮ পাঞ্জাব, ২২ বেলুচ ও ৩২ পাঞ্জাবের একটি করে কোম্পানির সমন্বয়ে যৌথ ইউনিট ইকবাল হল ও জগন্নাথ হলসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ব পেয়েছিল
স্পেশাল সার্ভিস গ্রুপ একদল কমান্ডোর দায়িত্ব ছিলো বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে জীবিত গ্রেপ্তার করা। এক স্কোয়াড্রন এম-২৪ ট্যাঙ্ক ভোরের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গে যোগ দেওয়ার অপেক্ষায় ছিলো।
উল্লেখ্য রাও ফরমান আলীর তত্বাবধানে ব্রিগেডিয়ার জাহানজেব আরবাবের নেতৃত্বাধীন ৫৭ ব্রিগেড ঢাকা ও আশপাশে অপারেশন চালায়, মেজর জেনারেল খাদিম রাজা।
সেই কালোরাতে যেভাবে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল বঙ্গবন্ধু কে
বঙ্গবন্ধু কে গ্রেপ্তারের অপারেশনটির নাম ছিল “অপারেশন বিগ বার্ড “। পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে এ ঘটনার নায়ক ছিল ব্রিগেডিয়ার (অব.) জহির আলম খান। একাত্তরে কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট থার্ড কমান্ডো ব্যাটেলিয়নের দায়িত্বে ছিলেন জহির। ২৩ মার্চ তিনি ঢাকায় আসেন চীফ অব স্টাফ অফিসে দেখা করে কমান্ড সংক্রান্ত একটা ঝামেলার সুরাহা করতে। বিমানবন্দরে তার অপেক্ষায় ছিলেন মেজর বিল্লাল। জহিরকে জানানো হয় প্রধান সামরিক প্রশাসকের কার্যালয়ে নিয়ে যেতে এসেছেন তিনি। সেখানে কর্ণেল এসডি আহমেদের সঙ্গে দেখা করতে হবে। দুপুর গড়িয়ে বিকাল হয়ে যাওয়ায় কর্ণেলের বাসভবনে যান দুজন। সেখানে জহির জানতে পারেন ২৪ কিংবা ২৫ মার্চ শেখ মুজিবর রহমানকে গ্রেপ্তার করতে হবে তাকে। প্লেন থেকে নেমে ঢাকার উত্তপ্ত অবস্থাটার আঁচ পেয়েছিলেন জহির। সেই রাতে মেজর বিল্লাল, ক্যাপ্টেন সাঈদ ও ক্যাপ্টেন হুমায়ুনকে নিয়ে ধানমণ্ডিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের বাড়ি রেকি করতে যান তিনি। পরদিন সকালে আশেপাশের রাস্তাঘাটগুলো চেনার জন্য আবারও দলবল নিয়ে ধানমণ্ডি তে গিয়েছিলেন জহির।
তার পরেরদিন সকাল বেলা মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলীর সঙ্গে দেখা করার নির্দেশ পান জহির। সকাল ১১টায় এই সাক্ষাতকারে চীফ অব জেনারেল স্টাফ তাকে নিশ্চিত করেন ২৫ মার্চ রাতেই মুজিবকে গ্রেপ্তার করতে হবে। নির্দেশনা নিয়ে বেরিয়ে আসার আগে ফরমান তাকে থামান। জিজ্ঞেস করেন,কিভাবে করবে জানতে চাইলে না? বলেন যে বেসামরিক গাড়িতে একজন অফিসারকে সঙ্গে নিয়ে মুজিবকে গ্রেপ্তার করতে হবে। আগের দিনই মুজিবের বাড়ীর আশপাশে বিশাল জনতার সমাবেশ চোখে পড়েছিলো জহিরের। তাই এই নির্দেশ মানতে অস্বীকৃতি জানিয়ে কমপক্ষে এক প্লাটুন সৈন্য দাবি করেন তিনি।ব্যাপারটা যে বাড়াবাড়ি হয়ে গেছে বুঝেছিলেন জহির। ফরমানের রোষ থেকে বাঁচতে তাই সাময়িক আত্মগোপন করলেন। সন্ধ্যায় গেলেন বিমানবন্দরে পিআইএর একটি ফ্লাইটে ঢাকা নামলেন মেজর জেনারেল মিঠা। কমান্ডিং অফিসারকে সব কিছু খুলে বললেন জহির।
এরপর জেনারেল হামিদের মধ্যস্ততায় নিষ্পত্তি হয় এই ঝামেলার। হামিদ তাকে বলেন মুজিবকে জীবিত গ্রেপ্তার করতে হবে এবং কোনো কারণে মুজিব মারা গেলে এজন্য ব্যক্তিগতভাবে জহিরকেই দায়ী করা হবে। সেখান থেকে আবার ফরমানের কাছে গেলেন জহির জানালেন তার কি কি লাগবে, আমি সেনাবহনের জন্য তিনটা ট্রাক আর বাড়ির নকশা চাইলেন। ফরমান জহিরকে বাড়ীর প্ল্যানটা দিয়ে বলেন গাড়ী সময়মতো পাওয়া যাবে। জহির জানতে চাইলেন শেখ মুজিবর রহমানের পেছনের বাসাটাই জাপানী রাষ্ট্রদূতের। যদি উনি সেখান আশ্রয় নেন তাহল আমার কী করণীয়। জেনারেল ফরমান বললেন জহিরকে বিচারবুদ্ধি প্রয়োগ করে সিদ্ধান্ত নিতে।
সন্ধ্যার পর কোম্পানীকে অভিযানের নির্দেশনা বুঝিয়ে দেন জহির। কোম্পানিকে তিনভাগে ভাগ করা হয়। নেতৃত্ব দেওয়া হয় যথাক্রমে ক্যাপ্টেন সাঈদ, ক্যাপ্টেন হুমায়ুন ও মেজর বিল্লালের ওপর। তিনটি দলের মিলিত হওয়ার স্থান হিসেবে নির্ধারন করা হয় এমপি হোস্টেলের দিকে মুখ করে থাকা তেজগা বিমানবন্দরের গেট। ঠিক হয় বিমানবন্দর থেকে সংসদ ভবন ও মোহাম্মদপুর হয়ে ধানমণ্ডি যাবেন তারা। রাত ৯ টার দিকে জহির এয়ারফিল্ডে পৌছলেন।
২৫ মার্চ রাত ১১টায় জহির নেতৃতে এয়ারফিল্ড থেকে হেডলাইট জ্বালিয়ে জিপ নিয়ে সাথে ৩ টি ট্রাক বের হলো শেখ মুজিবকে গ্রেপ্তার করতে।সাংসদদের হোস্টেল থেকে মোহাম্মদপুরের রাস্তায় কোনো বাতি নেই।
ক্যাপ্টেন হুমায়ুনের দল পাশের একটি বাসায় ঢুকে দেয়াল টপকে নামলো মুজিবের আঙ্গিনায়। এসময় গোলাগুলিতে একজন নিহত হয়। বাড়ির বাইরে পুর্ব পাকিস্তান পুলিশের সদস্যরা তাদের ১৮০ পাউন্ড ওজনের তাবুতে ঢোকে, সেগুলো খুটিসহ তুলে নিয়ে ঝাপ দেয় ধানমণ্ডির লেকে। সংলগ্ন এলাকার নিরাপদ দখল শেষ। ঘন কালো আধার চারদিকে। মুজিব ও তার প্রতিবেশী কারো বাসাতেই বাতি নেই।তল্লাশী চালানোর জন্য এরপর একটি দল ঢুকলো। প্রহরীদের একজনকে বলা হলো রাস্তা দেখাতে। কিছুদূর যাওয়ার পর তার পাশে থাকা সৈন্যকে দা দিয়ে আক্রমণ করতে গিয়েছিলো সে, কিন্তু জানতো না তার উপর নজর রাখা হচ্ছে। তাকে গুলি করে আহত করা হয়। এরপর সিড়ি বেয়ে ওপরে উঠলো সার্চপার্টি। একের পর এক দরজা খুলে কাউকে পাওয়া গেলো না। একটা রুম ভেতর থেকে আটকানো ছিলো।
এরপর গ্রেনেড বিস্ফোরন ও তার সাথে সাব-মেশিনগানের ব্রাশফায়ার। তারা ভেবেছিল কেউ হয়তো শেখ মুজিবকে মেরে ফেলেছে। বাধা দেয়ার আগেই বারান্দার যেদিক থেকে গুলি এসেছিলো সেদিকে গ্রেনেড ছোড়ে একজন সৈনিক। এরপর সাবমেশিনগান চালায়। গ্রেনেডের প্রচণ্ড বিস্ফোরণ ও স্বয়ংক্রিয় অস্ত্রের গুলির আওয়াজে বদ্ধ সে রুমের ভেতর থেকে চিৎকার করে সাড়া দেন শেখ মুজিব এবং বলেন তাকে না মারার প্রতিশ্রুতি দিলে তিনি বেরিয়ে আসবেন। নিশ্চয়তা পেয়ে বেরিয়ে আসেন তিনি। বেরুনোর পর হাবিলদার মেজর খান ওয়াজির (পরে সুবেদার) তার গালে চড় মারেন।
শেখ মুজিবকে জহির বলেছিল সঙ্গে আসতে। শেখ মুজিব জানতে চাইলেন পরিবারের কাছ থেকে বিদায় নিতে পারবেন কিনা। জহির তাকে তা জলদি সারতে বলেছিল। এরপর তারা বঙ্গবন্ধু কে নিয়ে গাড়ির দিকে হাটতে শুরু করল। এরমধ্যে সদরে রেডিও বার্তা পাঠিয়ে দিয়েছিল জহির যে আমরা শেখ মুজিবকে গ্রেপ্তার করেছি।
মাঝের ট্রাকে মুজিবকে বসিয়ে ক্যান্টনমেন্টের পথ ধরলো জহিরের দল। এসময় তার মনে হলো মুজিবকে গ্রেপ্তার করার পর কোথায় রাখতে হবে, কার কাছে হস্তান্তর করতে হবে তা তাকে বলা হয়নি। তাই সংসদ ভবনে মুজিবকে আটকে রেখে পরবর্তী নির্দেশনা জানতে ক্যান্টনমেন্ট রওয়ানা দিলেন। সংসদের সিড়িতে বসিয়ে রাখা হয় মুজিবকে।
লে. জেনারেল টিক্কা খানের সদর দপ্তরে গেলেন মেজর জহির। সেখানে চীফ অব স্টাফ ব্রিগেডিয়ার জিলানীর সঙ্গে দেখা করে তাকে জানালেন মুজিবকে গ্রেপ্তারের কথা। জিলানী তাকে টিক্কার অফিসে নিয়ে গেলেন এবং বললেন রিপোর্ট করতে। টিক্কা সম্ভবত আগেই খবর জেনেছেন, তাই তাকে বেশ খোশমেজাজে পাওয়া গেলো। আনুষ্ঠানিকভাবে শোনার অপেক্ষা করছেন শুধু। সিদ্ধান্ত হলো আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় যে কক্ষটিতে ছিলেন, সেখানেই রাখা হবে মুজিবকে। এরপর ১৪ ডিভিশন অফিসার্স মেসে স্থানান্তরিত হলেন তিনি। একটি সিঙ্গল বেডরুমে তাকে রেখে বাইরে প্রহরার ব্যবস্থা করা হলো।
পরদিন মেজর জেনারেল মিঠা শেখ মুজিবকে কোথায় আটকে রাখা হয়েছে জানতে চাইলেন। শোনার পর উদ্বিগ্ন হয়ে বললেন পরিস্থিতি সম্পর্কে একদমই ধারণা নেই সংশ্লিষ্টদের। অফিসার্স মেস থেকে তাকে উদ্ধারের চেষ্টা খুব সহজেই নিতে পারবে কেউ। এরপর একটি স্কুল ভবনের (আদমজী ক্যান্টনমেন্ট) চারতলায় মুজিবকে সরিয়ে নেওয়া হলো। সেখান থেকে কয়েক দিন পর করাচি।
তথ্যসুত্র ও ছবি : ইন্টারনেট ও মুক্তিযুদ্ধের বই।
২৫শে মার্চ কালোরাত “অপারেশন সার্চলাইট” ও “অপারেশন বিগ বার্ড”! ইতিহাসের পাতা থেকে
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
৪০টি মন্তব্য ০টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা
মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন
ভারতীয় রাজাকাররা বাংলাদেশর উৎসব গুলোকে সনাতানাইজেশনের চেষ্টা করছে কেন?
সম্প্রতি প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন? শিরোনামে মোহাম্মদ গোফরানের একটি লেখা চোখে পড়েছে, যে পোস্টে তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন
চুরি করাটা প্রফেসরদেরই ভালো মানায়
অত্র অঞ্চলে প্রতিটা সিভিতে আপনারা একটা কথা লেখা দেখবেন, যে আবেদনকারী ব্যক্তির বিশেষ গুণ হলো “সততা ও কঠোর পরিশ্রম”। এর মানে তারা বুঝাতে চায় যে তারা টাকা পয়সা চুরি... ...বাকিটুকু পড়ুন
ঘুষের ধর্ম নাই
শহীদুল ইসলাম প্রামানিক
মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।
হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।
পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন
ইরান-ইজরায়েল দ্বৈরথঃ পানি কতোদূর গড়াবে??
সারা বিশ্বের খবরাখবর যারা রাখে, তাদের সবাই মোটামুটি জানে যে গত পহেলা এপ্রিল ইজরায়েল ইরানকে ''এপ্রিল ফুল'' দিবসের উপহার দেয়ার নিমিত্তে সিরিয়ায় অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেট ভবনে বিমান হামলা চালায়।... ...বাকিটুকু পড়ুন