somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভালবাসার সংজ্ঞা পরিবর্তন করে দিল যে মুভিটি : love likes coincidences (2011)

১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১১ রাত ১:০৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



মানুষ স্বভাবগত ভাবেই কাকতালীয়তা ভালবাসে।ভাবুন তো,আপনি খুব অপরিচিত একটি জায়গায় গিয়েছেন,হঠাত দেখলেন আপনার প্রিয় কোন মুখ সেখানে খুবই অপ্রত্যাশিত ভাবে সেখানে উপস্থিত,কেমন লাগবে আপনার?ভালবাসা কি এ ধরণের কাকতালীয়তা মেনে চলে?নাকি ভালোবাসাই সবই প্রত্যাশিত,কাকতালীয়তা স্থান সেখানে নেই?

চলুন না,একটু কল্পনার রাজ্য থেকে ঘুরে আসা যাক।ভাবুন যে আপনি এবং আপনার প্রেয়সীর দেখা হয়েছিল সম্পুর্ন অপরিচিতভাবে,শৈশবে,কৈশোরে,প্রাক যৌবনে।নাহ,আরো আগে।ধরুন আপনার এবং আপনার স্বপনচারিনীর জন্ম হয়েছিল একই দিনে,একই সময়ে,একই হাসপাতালে।জীবনের নানা মুহূর্তে আপনারা নিজেদের দেখা পেয়েছিলেন সম্পুর্ন অজানা মানুষরূপে।আপনারা হয়েছিলেন মুহুর্তের পথচারী।



ঠিক এই রকম একটা কন্সেপ্ট নিয়ে তৈরি তুর্কি ছায়াছবি "Love likes coincidences".ছবিটি এ বছরে মুক্তি পেয়েছে,জমজমাট ব্যবসা করেছে তুরস্ক এবং ইউরুপের বেশ কয়েকটি দেশে।পরিচালনা করেছেন ওমর ফারুক।অভিনয় করেছেন মেহমেত গানসুর,বেলসিম বিলজিন প্রমুখ।



"If existence is not a coincidence, may love be a coincidence?"

কাহিনীটা মোটামুটি এরকম...১৯৭৭ সালে আঙ্কারা শহরে ইলমাজ যখন তার প্রেগন্যান্ট স্ত্রীকে নিয়ে হাস্পাতালে ছুটে যাচ্ছিলেন,ঠিক তখন ছোট একটি দুর্ঘটনা ঘটে।তার গাড়ির সাথে ওমরের গর্ভবতী স্ত্রী ইন্সির সাথে ধাক্কা লাগে এবং তার প্রি-টার্ম লেবার (pre-term labour) শুরু হয়।ফলে একই দিনে একই সাথে ওই হাসপাতালে এই দুই দম্পতির দুটি বাচ্চার জন্ম হয়।ইলমাজ ছিলেন একজন ফটোগ্রাফার,তিনি এই দুই বাচ্চার একসাথে ছবি তুলে রাখেন।বাচ্চা দুটোর নাম রাখা হয় ওজগার এবং দেনিজ।

জন্ম থেকেই যারা নিজেদের দেখেছে,তাদের মধ্যে কি আর দেখা না হয়ে পারে?দেনিজ যখন পরবর্তিতে তার দাদার বাড়ীতে বেরাতে যায়,তখন সাইকেলে চড়া একটি ছেলের প্রতি তার আকর্ষন জন্মে।দেনিজের ছোট বেলা থেকেই অভিনেত্রী হবার সখ,তাই সে একদিন সিনেমা দেখে ভাবল,ওই ছেলের সাইকেলের সামনে পড়ে গিয়ে অভিনয় দেখাবে।ফলশ্রুতিতে পরের দিন দুজনেই ধপাস এবং একই হাসপাতালে পাশাপাশি বেডে ভর্তি।বলুন তো ছেলেটি কে ছিল?ছেলেটি ছিল সেই ছোট্ট ওজগার।

এদিকে একদিন দেনিজকে তার দাদা ছবি তোলার জন্য একটা স্টুডিওতে নিয়ে যায়,দেনিজ কোন ভাবেই হাসবে না।ঠিক তখনই একটি ছেলে তার ফটোগ্রাফার বাবার জন্য খাবার নিয়ে ওই স্টুডিওতে ঢুকে এবং দেনিজ হেসে ফেলে।আর ক্যামেরার সাটারে চাপ পরে তখনই।

দেনিজের দাদার মৃত্যুর পর সে আঙ্কারা ছেড়ে ইস্তাম্বুল চলে আসে।রাস্তায় পড়ে যায় তার দাদার শেষ স্মৃতি একটি তসবীহ।ওজগার সেই তসবীহ খানা ভাগ্যক্রমে পেয়ে যায়।

তারপর কেটে গেছে অনেক দিন।ওজগার তার বাবার উপর রাগ করে ইস্তাম্বুল চলে আসে এবং নিজেকে একজন দক্ষ ফটোগ্রাফার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে।ওদিকে দেনিজের বাবা মার ছাড়াছাড়ি হবার পর দেনিজ ইস্তাম্বুলে এসে অভিনেত্রী হবার জন্য প্রাণপণ চেস্টা করতে থাকে এবং বুরাক নামেক একজন সম্ভ্রান্ত সচ্ছল মানুষের সাথে ভালোবাসার সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে।

একদিন দেনিজ হঠাত দেখতে পায় যে তার ছোট বেলার একটা ছবি রাস্তায় একটি ফটো প্রদর্শনীর বিজ্ঞাপন হিসেবে টানানো।ঐ প্রদর্শনীতে ঢুকে সে জানতে পারে ফটোগ্রাফার কয়েক বছর আগে মারা গেছেন এবং তারই ফটোগ্রাফার ছেলে তার স্মরণে এই প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে।খোঁজ নিয়ে সে জানতে পারে সে ছেলে আর কেউ নয়,সে ওজগার।

ওজগারকে পেয়ে দেনিজ তার শৈশবে ফিরে যায় এবং তাদের হারানো দিনগুলোর স্মৃতিচারণ করতে থাকে।এদিকে দেনিজের সাথে বুরাকের সম্পর্কের টানাপোড়েন শুরু হয়।কারণ বুরাকের ফ্যামিলি দেনিজের অভিনেত্রী জীবনকে মেনে নিতে চাইছিল না।

দেনিজের সাথে ওজগারের সম্পর্ক ধীরে গাঢ় হতে থাকে।তারা উপলব্ধি করতে পারে যে তারা জন্ম থেকে আমৃত্যু বন্ধনে আবদ্ধ এবং এ বন্ধন ছিঁড়ে যাবার সাদ্ধ্য বিধাতা তাদের দেয় নি।

কিন্তু...কিন্তু নিয়তি কি তাদের এক হতে দিবে?জীবনের প্রতিটি ক্ষণে তাদের মাঝখানে যে দেয়াল ছিল,তা কি তারা গুঁড়িয়ে দিতে পারবে?

আমি মোটামুটি সারসংক্ষেপ বললাম,কিন্তু খুব গুরুত্বপুর্ন একটা অংশ আমি গোপন রেখেছি।নাহলে ছবিটি দেখার আপনাদের আগ্রহ কমে যাবে।

ছবিটির মিউজিক্যাল স্কোর দুর্দান্ত।তুরস্কের মত দেশে যে এতো ভালো কম্পোজার আছে আমার জানা ছিল না।এছাড়া ক্যামেরার কাজ,ডিরেকশন ও কোরিওগ্রাফি মোটামুটি নিখুঁত বলা যায়।



নায়ক নায়িকা দুজনেই বেশ গ্ল্যামারাস এবং প্রাণবন্ত অভিনয় করেছেন।মোটকথা একটি পুর্নাঙ্গ রোম্যান্টিক মুভিতে আপনি যা যা এক্সপেক্ট করেন,এই মুভিটি আপনাকে শতভাগ দিবে।ভাল লাগলে জানাবেন।

ডাউনলোড করুন এখান থেকে

মিডিয়াফায়ার লিঙ্ক

টরেন্ট লিঙ্ক
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১১ রাত ১:৩৯
২৭টি মন্তব্য ২৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

খুলনায় বসবাসরত কোন ব্লগার আছেন?

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:৩২

খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় তথা কুয়েট-এ অধ্যয়নরত কিংবা ঐ এলাকায় বসবাসরত কোন ব্লগার কি সামুতে আছেন? একটি দরিদ্র পরিবারকে সহযোগীতার জন্য মূলত কিছু তথ্য প্রয়োজন।

পরিবারটির কর্তা ব্যক্তি পেশায় একজন ভ্যান চালক... ...বাকিটুকু পড়ুন

একমাত্র আল্লাহর ইবাদত হবে আল্লাহ, রাসূল (সা.) ও আমিরের ইতায়াতে ওলামা তরিকায়

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৬:১০



সূরাঃ ১ ফাতিহা, ৪ নং আয়াতের অনুবাদ-
৪। আমরা আপনার ইবাদত করি এবং আপনার কাছে সাহায্য চাই।

সূরাঃ ৪ নিসার ৫৯ নং আয়াতের অনুবাদ-
৫৯। হে মুমিনগণ! যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় রাজাকাররা বাংলাদেশর উৎসব গুলোকে সনাতানাইজেশনের চেষ্টা করছে কেন?

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সম্প্রতি প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন? শিরোনামে মোহাম্মদ গোফরানের একটি লেখা চোখে পড়েছে, যে পোস্টে তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×