somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

ফেলুদার তোপসে
নিষ্পত্তি কি সব সময়ে জয়-পরাজয়ে? ময়দানি ধুলোয় তার বাইরেই যে পড়ে থাকে খেলার আসল-নকল গল্পগুলো৷ ময়দানের ঘাস-ধুলো যাঁর প্রিয়তম বন্ধু, তাঁর কলমে অভিজ্ঞতার দস্তাবেজ৷

একদিন ঠিক আবার আমাদের দেখা হবে

০৮ ই অক্টোবর, ২০১৭ সকাল ৯:১৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মনখারাপের বিকেল আসে এক এক দিন।
উদ্দেশ্যহীন, গন্তব্যহীন, অলস, বড় মায়াময় কিছুটা সময়।
চিলেকোঠার ধুলোমাখা দূরবীন, এক ধাক্কায় অনেকটা পিছনে নিয়ে যায়। কোনও অলৌকিক ম্যাজিকবাক্সে সাদাকালো ফ্ল্যাশব্যাক শুরু হয়। দূরের এক মফঃস্বলের স্টেশনে ট্রেন চলে যাবার ভোঁ শুনতে পাই।

আবছা মনে পড়ে, কবে যেন তুমুল বৃষ্টি নেমেছিল এখানে। খুব চেনা কেউ অপেক্ষায় ছিল, একা, অনেকদিন।
তারপর ফাঁকা প্ল্যাটফর্মের বেঞ্চে চিরকুট রেখে রওনা দিয়েছে নিজে। ব্যাকপ্যাকে মুছে নিয়েছে অভিমানের শ্যাওলা।

সময়ে পৌঁছতে পারিনি আমি। চিরকুটটাও হাওয়ায় উড়ে গেছে কোথাও. .
উত্তর না পেয়ে।

বিকেলের কার্নিশ বেয়ে কেমন বৃষ্টিফোঁটার মতন ঝুপ করে সন্ধ্যে নামত আমাদের পাড়ায়।

স্কুলফেরত এই একেকটা সন্ধ্যে ছিল গল্প তৈরির কারখানা।
না হওয়া প্রেম, ল্যাং খাওয়া অভিমান, অমুক স্যারের ডাকনাম, মনিটরকে খিস্তি, ফাইভ এ সাইড ম্যাচ, ক্যাম্বিস হারানোর দায়, প্রথম চিঠির উত্তেজনা, বেপাড়ার চ্যালেঞ্জ কাপ, পুকুরপাড়ের অপেক্ষা, সাইকেলে ফলো- সবকিছু মিশে যেত চুরমুরের শালপাতায়।

রাগ, হিংসে, ভালোবাসা, বন্ধুত্ব, প্রথম শেখা গালাগাল, মাখামাখি হয়ে থাকত মাঠের ঘাসে, আলাদা করা যেতনা।

অল্পেই মুখ দেখাদেখি বন্ধ, একটু পরেই ভাব। রাগ ভাঙানোর জন্য ঘটিগরমের ওপরে উঠতে হয়নি কখনও। অত বেপরোয়া ভাবেও কখনও বাঁচিনি আর ।
সেই নিঝুম কয়েকটা গলি আর একাবোকা স্কুলমাঠ আমাদের যাবতীয় খুনসুটি-দুষ্টুমির নীরব দর্শক।

আমাদের সোশ্যাল নেটওয়ার্ক বিহীন, অপরিণামদর্শী, নিতান্তই অকারণ সেই সন্ধ্যেগুলো ভীষণ দামি একটা বাক্সে তালাবন্ধ হয়ে পড়ে আছে এখন। শুধু চাবিটা হারিয়ে গেছে, অনেকদিন হল।
বলতে না পারা কথাগুলো, অকারণ ঝগড়াগুলো, অসময়ের মনখারাপগুলো ঠিকানা না পেয়ে পালিয়েছে বেপাড়ায়। অন্য বন্ধুদের আগুন যোগাবে বলে।

আজকের সন্ধ্যেটা তোলা থাক সেই ফেলে আসা, ভুলে যাওয়া ছায়াপুতুল গুলোর জন্য, যাদের সাথে কথা হয়না আর। আবছা মুখ, আর আবছা মানুষগুলোকে নিওনে একটু উসকে নিলাম।

ছেড়ে আসব বলেই ছেড়ে এসেছি যাদের, নিজের হিংসুটেমির জন্য আমাকেই ছেড়ে বেঁচেছে যারা, আবার যারা কোনও খবর না দিয়েই হারিয়ে গেলি বেমালুম, এই সময়টা তাদের সব্বার জন্য গচ্ছিত রইল।

আমাদের সেই বোকা বোকা স্বপ্ন আর মনকেমন গুলো বোবা নিশ্বাস ফেলে মরে গেছে অনেকদিন। মুখগুলো শুধু একই রয়ে গেছে।
ঝাপসা, আবছায়া।
বয়েসের ছাপে, বিস্মৃতির ধুলোয় মরচে পড়া কিছুটা সময় এখনও অসময়ে মনখারাপের জন্ম দেয়।

গলার কাছটা শিরশির করে ওঠে সবার। কিন্তু এখন আর গলাগলি করে হাঁটা হয়না একসাথে।
শুধু ভেতরের ঘুণপোকাটা রাতবিরেতে মনে করিয়ে দেয় প্রায় ভুলে যাওয়া কয়েকটা নাম্বার। খুব ইচ্ছে করে, খু-উ-উ-ব ইচ্ছে করে একবার ডায়াল করে দেখতে. .

কিন্তু করা হয়না। 'বড়' হয়ে গেছি যে। এসব বাতিল অভিমানস্মৃতিদের ছুঁয়ে দেখার এক্তিয়ার আর নেই আমার।

তবু, ভীষণ ইচ্ছে হয়, কোনও এক ঝিরঝিরে বিকেলে, এভাবেই হয়তো দেখা হয়ে যাবে সবার সাথে। আচমকাই। আবার শুরু হবে নতুন ইনিংস, নতুন কোনও মাঠে।
চেনা মুখগুলোর সাথে আরও একদফা শোধবোধের সুযোগ পাওয়া যাবে একটা সন্ধ্যেয়।

আমি জানি, ওই চিরকুট, হারানো চাবিটা লুকিয়ে আছে এমনই কোনও সন্ধ্যের আড্ডায়। একদিন ঠিক খুঁজে পাবো।

একদিন ঠিক. . .

'দেখা হবে। আবার আমাদের দেখা হবে।'
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই অক্টোবর, ২০১৭ সকাল ৯:২০
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমাদের দাদার দাদা।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৫৫

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী।

আমার দাদার জন্মসাল আনুমানিক ১৯৫৮ সাল। যদি তার জন্মতারিখ ০১-০১-১৯৫৮ সাল হয় তাহলে আজ তার বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

জেনে নিন আপনি স্বাভাবিক মানুষ নাকি সাইকো?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১৮


আপনার কি কারো ভালো সহ্য হয়না? আপনার পোস্ট কেউ পড়েনা কিন্তু আরিফ আর হুসাইন এর পোস্ট সবাই পড়ে তাই বলে আরিফ ভাইকে হিংসা হয়?কেউ একজন মানুষকে হাসাতে পারে, মানুষ তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

খুলনায় বসবাসরত কোন ব্লগার আছেন?

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:৩২

খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় তথা কুয়েট-এ অধ্যয়নরত কিংবা ঐ এলাকায় বসবাসরত কোন ব্লগার কি সামুতে আছেন? একটি দরিদ্র পরিবারকে সহযোগীতার জন্য মূলত কিছু তথ্য প্রয়োজন।

পরিবারটির কর্তা ব্যক্তি পেশায় একজন ভ্যান চালক... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি করাটা প্রফেসরদেরই ভালো মানায়

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৩


অত্র অঞ্চলে প্রতিটা সিভিতে আপনারা একটা কথা লেখা দেখবেন, যে আবেদনকারী ব্যক্তির বিশেষ গুণ হলো “সততা ও কঠোর পরিশ্রম”। এর মানে তারা বুঝাতে চায় যে তারা টাকা পয়সা চুরি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×