ধরুন একটি ছেলে বাথরুমে গোছল করছে।দুইটা মেয়ে বাথরুমের ভেন্টিলেটর দিয়ে উঁকি দিল।ছেলেটি এটা দেখে মেয়ের বাপ মাকে বলল। ঘটনাটা কোথায় গড়াবে জানেন? মেয়ের বাপ মা হাসতে হাসতে বলবে
-তোমার কি আক্কল জ্ঞান কিছু নাই? আয়না ছাড়া ভেন্টিলেটরআলা বাথরুমে গোছল কর ক্যান?
এখন ঘটনাটিকে উল্টোভাবে কল্পনা করা যাক।ধরুন একটি মেয়ে বাথরুমে গোছল করছে।দুটি ছেলে বাথরুমটির ভেন্টিলেটর দিয়ে উঁকি দিল।মেয়েটি বুঝতে পেরে তার বাবা মা ছেলেগুলোর বাবা মা সহ সবাইকে ঘটনাটা বলল। এবার কিন্তু ঘটনাটি ছেলেটির বেলায় যতটুকু হালকা এবং হাস্যকর ছিল,মেয়েটির বেলায় ব্যাপারটি তার চাইতেও শতগুন বেশী গুরুত্বপূর্ণ বা সিরিয়াস!!! মেয়ের বাপ বলবে
-ছিঃ ছিঃ ছিঃ লজ্জা করেনা এভাবে মেয়েদের গোছল দেখতে? এই শিক্ষা দিয়েছে তোমার বাবা মা??
এই "ছিঃ ছিঃ" টা মেয়েদের জন্যে কখনো আসেনা।প্রশ্ন হচ্ছে কেন? Why..???
ধরুন একটি লোক রাস্তার কোন হোটেল থেকে কিছু একটা চুরি করল। সাধারনত শাস্তি সাধারন মানুষ যেটা দিয়ে থাকে সেটা হচ্ছে খাম্বার সাথে বেঁধে গনধোলাই।এই মারটা কি পরিমান ভয়াবহ হয় তা যে না দেখেছে সে বিশ্বাস করতে পারবেনা। আচ্ছা চুরিটা যদি একটা মেয়ে করত! সে কি সমান শাস্তিটা পেত?
ধরুন আপনি ঢাকার কোন রাস্তা দিয়ে হাটছেন।আপনার পাশ দিয়ে একটা মেয়ে হেটে যাচ্ছিলো।আপনার গায়ের সাথে অসাবধানতাবশত লেগে গেল। ভূলটি যদিও মেয়ের ছিল কিন্তু সে আপনাকেই শাসাতে শুরু করল, "দেখে চলতে পারেন না?"। আপনি হয়তো বললেন, "আমি কি আপনাকে ধাক্কা দিয়েছি? আপনিই তো এদিক দিয়ে যাচ্ছিলেন "। কিছুক্ষনের মধ্যেই অনেক লোক জড় হল।মেয়েট নালিশ করল আপনি মেয়েটিকে ডিস্টার্ব করেছেন। এবার বলুন তো মারটা কে খাবে?
যদিও আপনার কোন দোষ নেই।তবে পাবলিক কিন্তু মেয়ের মুখের কথাকেই কুরান হাদিসের মতই সত্য ধরে নেবে।
মেয়েদের প্রতি বরাবরই সবার সহানুভূতিশীল দৃষ্টি থাকে একটা পুরুষের চাইতে।আর সে কারনেই প্রথম ঘটনাটিতে একটা মেয়ে হয় নিষ্পাপ লুতুপুতু বাচ্চা আর ছেলেটা হয় বাংলা ছবির ডিপজল। দ্বিতীয় ঘটনাটিতে মেয়েটিকে সাধারনত পুরুষের মত ধোলাই দেয়া হয় না। কিংবা তৃতীয় ঘটনাটিতেও ছেলেটির কোন দোষ না থাকার পরেও মেয়েটির মুখের কথাকেই সত্য ধরে ছেলেটিকে ধোলাই দেয়া হচ্ছে।
অনেকেই বলে বেড়ান সে সম অধিকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য আমাদের হ্যান করতে হবে ত্যান করতে হবে ব্লা ব্লা ব্লা..... কিন্তু আমার কথা হচ্ছে সুযোগ সুবিধা যখন সমান ভাগে ভাগ হবে তবে ধোলাই কেন নয়? সেই রাম ধোলাইগুলোও তো মেয়েটিরও পাওনা।তাকে কেন বঞ্চিত করা হবে? আর কেনই বা একটা ছেলের সত্য কথা একটা মেয়ের মুখের মিথ্যে কথার কাছে হেরে যাবে?
আর সম অধিকারের কথাও যদি বলি তবে সেখানেও ঘাপলা আছে। সেগুলো বলতে গেলেও হাস্যকর শোনায়।যেমন মেয়েদের উপবৃত্তি+বিনাবেতনে পড়ার সুযোগ রয়েছে,ছেলেদের নেই।মেয়েরা নারী নির্যাতন মামলা বিনা টাকায় চালিয়ে নিতে পারে,ছেলেদের জন্য আইনে পুরুষ নির্যাতন নামে কোন কিছুর অস্তিত্বই নেই।এমনকি আপনাকে একদম বিনা কারনেও নারী নির্যাতন মামলা দিয়ে আপনার পুরো জীবনের দফারফা করা একটা মেয়ের জন্য বা হাতের খেল! মেয়েরা কোন বাসে মহিলা সিট ছাড়াও যেকোন সিটে বসতে পারে,কিন্তু একটা ছেলে যদি কখনো বাধ্য হয়ে কোন মহিলা সিটে বসে তবে সবাই ছেলেটির দিকে এমনভাবে তাকায় যেন ছেলেটির হরমন চেইঞ্জ হয়ে গেছে।এই হল আমাদের সম অধিকারের নমুনা!!
একটা ছেলে চুরি ছিন্তাই করলেও তার পুরো বংশ নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়, অথচ ঐশীর মত জোড়া খুনের আসামীর জন্য মানুষ সহানুভূতি জানিয়ে পোস্ট লিখে। শুধু এখানেই শেষ নয়, আমাদের দেশে নারীদের জন্যে কোন ফাঁসির মঞ্চ পর্যন্ত নেই। যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে শতাধিক নারীর ফাঁসির রায় হলেও ফাঁসি হয়নি একজনেরও।
এইসব লজিকগুলো সবার সামনে দাড় করাতে গেলেই আমরা নারীদের চোখে হই ভিলেন,আর কিছু ছেলের (ওইসব মেয়েদের দালাল) কাছে হই খারাপ লোক।যারা বিশেষ করে ফেসবুক সমাজে "নারীবাদী" শব্দটি দ্বারা বেশ পরিচিত এবং তাদের মধ্যে অনেকেই খুব ফেমাস...
সত্য হজম করার ক্ষমতা সবার থাকেনা সেটা আমরা সবাই জানি।কিন্তু সত্য তার মতই চলে।কে হজম করতে পারবে কি পারবেনা সেটার ধার সে ধারেনা। সত্য সত্যই।কি বলতে চেয়েছি তা চুশীল সমাজ নিজ দ্বায়িত্বে বুঝিবে বলেই আমার বিশ্বাস......
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে জুলাই, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:২৬