somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বছরের প্রথম দিনটি এতো বাজে কেন ?

০১ লা জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১:১৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


খুব সম্ভবত এতক্ষনে আপনার নতুন বছর উদযাপন প্রায় শেষ । এবং প্রায় প্রতি বছরের মতো আপনি আবিষ্কার করলেন নতুন বছরের প্রথম এই দিনটিও অত্যন্ত বাজে ভাবে কেটেছে । খুবই বাজে এবং হতাশ আপনি । এমনটি হবার সম্ভাবনা প্রায় ৮৫ ভাগ । আপনি যদি আগের বছর গুলোর দিকে তাকান তাহলে দেখবেন একই অবস্থা । প্রায় প্রতিটি বছরের প্রথম দিনটি আপনার জন্য খুবই বাজে একটা দিন ছিল । অথচ প্রায় প্রতি বছরই আপনি এই দিনটি ভালো ভাবে কাটাবার জন্য প্ল্যান করেন । তাহলে কেন এমনটি হয় আপনার সাথে ? আসলে আপনার সাথে না প্রায় সবার সাথেই এমনটি হয় । বিজ্ঞানীরা এই দিনটির সুখ বিশ্লেষণের একটা সূত্রও আবিষ্কার করেছে / পুরো সূত্রটি আমি ব্যাখ্যা দিলাম না । আপনি চাইলে লিংক থেকে পরে নিতে পারেন ।



মনো বিজ্ঞানীরা এই দিনটি অসফল আবার পেছনে আপনার অধিক আশা বা প্লানকে দায়ী করে থাকে । ধরুন আপনি নতুন বছরের প্রথম দিনটি নিয়ে যে পরিমান প্ল্যান করেন দ্বিতীয় বা তৃতীয় দিন নিয়ে কিন্তু আপনার মাথায় কিছুই থাকে না । আপনার প্রায় সারা বছরের সব প্ল্যান এই একটা দিনকে ঘিরে । সুতরাং এই দিনটি স্বভাবতই অধিক এক্সপেক্টটেশন এর ভারে জর্জরিত থাকে । আরো একটি কারণ হচ্ছে পৃথিবীর প্রায় সব ধরণের মানুষ এই দিনটি নিয়ে প্রায় একই ধরণের প্ল্যান করে থাকে । এখন আপনিই বলুন সবাই যদি একই রকম জিনিস চায় বিধাতা কিভাবে সবার আশা এক সাথে পূরণ করবে ? নিতান্তই সাপ্লাই আর ডিমান্ড এর ব্যাপক পার্থক্যের কারণে বিধাতা চাইলেও বেশির ভাগ মানুষের আসা পূরণ করতে পারেন না এই দিনে ।

নতুন বছরের প্রথম দিনটিতে আপনার হতাশ হবার কারণ আপনার মস্তিষ্কের বাম পাশের অংশ । আপনার মস্তিষ্কের দুইটি অংশের মাজে বাম পাশের অংশের কাজ প্রচন্ড নেগেটিভ ধারণা দেয়া বা যেকোন কাজের যুক্তিতর্ক তৈরী করা । অর্থাৎ আপনি যখন খুব অর্গানাইজড ভাবে চিন্তা করেন তখন আপনার মস্তিষ্কের ডান পাশের অংশ আপনাকে সাহায্য করে থাকে । আর আপনার বাম পাশের মস্তিস্ক আপনাকে আপনার প্ল্যান সফল না হবার ধারণা দিয়ে থাকে । ধরুন আপনি আপনি যখন নতুন বছরের প্রথম দিনে সবাইকে নিয়ে বাইরে কোথায় ঘুরতে যাবার প্ল্যান করবেন তখন আপনার মস্তিষ্কের বাম পাশ আপনাকে বাইরে ঘুরতে যাবার খরচ বা যাতায়ত অসুবিধা এই সব নিয়ে ক্রস প্ল্যানিং দিবে । আপনি দোটানায় পরে যাবেন । মজার ব্যাপার হচ্ছে আপনার মস্তিষ্কের বাম পাশ যদি বেশি কার্যকর হয় তবে আপনি ডান হাতি আর নয়তো বাম হাতি / যেহেতু আমরা বেশির ভাগ মানুষ ডান হাতি তাই আমাদের মাঝে সিদ্ধান্তহীন মানুষের সংখ্যা বেশি ।

সুতরাং আপনি যদি ডানহাতি হয়ে থাকেন তবে আপনার আজকে হতাশ হবার চান্স প্রায় ১০০ ভাগ ।



এবার আসুন জানার চেষ্টা করি আপনি কিভাবে একটা অর্থবহ প্লানিং করতে পারেন এই বছরের জন্য । আমরা প্রায় সবাই নতুন বছরের প্লানিং করে থাকি মনে মনে । খুব কম মানুষ পাবেন যারা আজকের দিনে লিখে রেখেছে তারা সারাটা বছর কিভাবে চলবে । যদি কেও লিখেও থাকে এবং আমার আপনার হাতে যদি তা পরে তবে নির্ঘাত ওই ব্যাক্তির কপালে শনি আছে । কারণ এই ব্যাপারটি আমার আর আপনার কাছে এক উন্মাদিও কান্ড । অথচ আশ্চর্যের ব্যাপার হচ্ছে এই প্লানিং টিই কিন্তু আপনার লিখে রাখার কথা । আপনি সেই মনে গেঁথে রাখছেন যেখানে আপনার মস্তিষ্কের দুইটা দিক দুই রকম করে ভাবে । এবার হয়তো বুজতে পারছেন কেন প্রতি বছর আপনি প্রথম দিনের সাথে বাকি দিন গুলোর কোন মিল খুঁজে পান না ।

বিজ্ঞানীদের মতে আপনি যদি আপনার প্লানিং কে এঁকে বা কার্টুন করে নিজের চোখের সামনে ঝুলিয়ে রাখতে পারেন তবে তা অনেক বেশি কার্যকর হবে । এর মানে আপনার ঘরের দেয়ালে যদি একটা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছবি টাঙানো থাকে তবে আপনার চাল চলন নিজের অজান্তেই শান্তি নিকেতনি হয়ে উঠবে । এর কারণ আপনার মস্তিস্ক যত বার এই ছবিটি দেখবে ততবার এর সাথে আপনার আনুষাঙ্গিক স্মৃতিকে জাগিয়ে তুলবে নিজের অজান্তেই । হয়তো ওই পরিমান চুল দাড়ি না গজালেও কবি গুরুর ধারা কিছুটা পেতে পারেন । এটা বিজ্ঞানীদের কথা । আমার তো মোটেই না ।

এবার আসুন দেখি কিভাবে আপনি আপনার এই বছরের প্লানিং কে কার্টুন করবেন বা ছবি আঁকবেন ? ব্যাপারটা নিজের মতো করেই করে ফেলুন । মানে একটা ডাইরি বা হোয়াইট বোর্ড নিন আর নিজের মতো করে কি কি করতে চাচ্ছেন এই বছর সেগুলো এঁকে ফেলুন । যা খুশি নিজের মতো করে আঁকুন । এরপর ডাইরি বা বোর্ডটি চোখের সামনে রেখে দিন । বা কিছু দিন পর পর ছবিটি একবার দেখুন । এতে করে মস্তিস্ক আপনি কিভাবে সফল হবেন তার একটা ধারণা আপনাকে দেবে । অর্থাৎ আপনি যদি এই বছর চাকরিতে একটা প্রমোশন চান আর তা যদি ছবিতে এঁকে রাখেন তবে আপনার মস্তিস্ক খুব সহজে আপনাকে সফল হবার পথ বাতলে দিতে পারে । এর কারণ আপনার মস্তিষ্কটা অনেকটা আপনার মেমরি সেল এর মতো কাজ করে । আপনার দেখা ভুবনের প্রায় সব কটা পথ এর মাঝে জমা হয়ে আছে । কিন্তু পথ খুঁজে পাচ্ছে না কিভাবে আপনাকে পথ বাতলে দেবে । আপনার চোখের সামনেই সমস্যার সমাধান ঘুর ঘুর করছে অথচ আপনি দেখছেন না । এমনটা হতেই পারে । শুধু দরকার আপনার মস্তিস্ককে সজাগ রাখা । আর এই কাজটা করবে আপনার আঁকা ছবিটা । এটাও আমার না বিজ্ঞানীদের কথা ।

সুতরাং চলুন এঁকে ফেলি এ বছরের পুরো ছবিটা । এর পর বাধাই করে চোখের সামনে রেখে দিলেই হবে । পরের বছর দেখবেন আপনি সফল একটা নতুন বছরের দিন পাবেন । এতটুকুন করার মতো সাহস না থাকলে অন্তত ডাইরি লেখে শুরু করুন । আর ডাইরিটা লুকিয়ে রাখুন যাতে কেও না দেখে । কিছু দিন পর পর আপনি নিজে দেখলেই হবে । আমাদের এই লেখা লিখির অভ্যেস না থাকার ফলে আমরা প্রতিনিয়ত ভুলে যাই আমাদের প্ল্যান কি ছিল । ব্যাপারটা সবাই মানে কিন্তু কেও লিখে রাখতে চায় না ।



এতো কিছুর পরও যদি কিছু আঁকতে ইচ্ছে না করে তবে গুগল থেকে আপনি যা করতে চান তার একটা ছবি বা কার্টুন লোড করে আপনার ফেইসবুক প্রোফাইল পিকচার করে রেখে দিন । দেখবেন অনেক কাজে দিবে । আপনি ধীরে ধীরে নিজের অজান্তেই এই ছবির মতো হয়ে উঠবেন ।তবে অবশ্যই প্রাসঙ্গিক । আপনি নিজের জীবনে যা দেখেন নি তার ছবি প্রোফাইল পিকচার করে রাখলে আপনার মস্তিস্ক হাজার খুঁজলেও এর সমাধান আপনাকে দিতে পারবে না ।


সর্বশেষ এডিট : ০১ লা জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১:২৫
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

×