somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

হিমাঙ্কের মাঝে প্রেম ভালোবাসা

১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ১১:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


শীত গ্রীষ্মের সাথে ভালোবাসার মতো অনুভূতি জড়িত থাকবে না এটা হয় না । বর্ষায় আবেগী হওয়া বা শীতে বিবাগী হওয়ার মতো আমাদের অনুভূতি গুলো সত্যিই তাপমাত্রার উপর নির্ভর করে । হিমাঙ্কের উপর আর হিমাঙ্কের নিচের ভালোবাসার তারতম্য অনেকটাই ভাববার মতো । এক এক দেশে শীতের এক এক রূপ । এই মুহূর্তে বাংলাদেশে ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে আপনার হাড় কাঁপছে অথচ নিউ ইয়র্কে এই মুহূর্তে তাপমাত্রা হিমাঙ্কের নিচে প্রায় ১৫ ডিগ্রি । সুতরাং অনুভূতির তারতম্য আবশ্যিক ।



হিমাঙ্কের এতো নিচে ভালোবাসার রূপ অদ্ভুত । শরীরের সাথে জামা কাপড়ের ঘর্ষণে তীব্র ইলেক্ট্রিক শকের মতো ঝাকুনি লাগে । হাতে হাত রাখতে হলে আগে থেকে হাতে লোশন লাগিয়ে নিতে হয় । নাহলে শক খাওয়ার ভয় থাকে । ভাবুন এই অবস্থায় প্রেম ভালোবাসার কি অবস্থা হয় ?শুধু যে শরীর এই আচরণ করে তা না । মনের ভেতরেও অদ্ভুত এক অনুভূতি হতে থাকে । বিজ্ঞানীদের গবেষণায় দেখা গেছে শীতের এই সময় ইকুয়েডর সীমারেখায় বসবাসকারী সবার মাঝে এক ধরণের মনোরোগ দেখা দেয় । এর নাম সিসনাল ইফেক্টিভ ডিসর্ডার ।এর ফলে ক্ষুধামন্দা হতাশা থেকে আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত পর্যন্ত আসতে পারে । শীত কালের এই ডিসর্ডার আসলেই অনেক ভয়াবহ ।এই রোগের অন্যতম কারণ সূর্যের আলো । সকাল বেলা সূর্যের আলো উঠার সাথে সাথে পাখিরা জেগে উঠে । পাখিদের শরীর সূর্যের আলো সংবেদনশীল. খেয়াল করলে দেখবেন শীত কালে পাখিরা অনেক দেরি করে ডাকাডাকি শুরু করে । কারণ শীতে সূর্যের আলো দেরি করে উঠে । পাখিদের মতো আমাদের শরীর ও মন আলোক সংবেদনশীল । শীতের অল্প আলো আর সূর্যের স্বল্পতা আমাদের মনের মাঝে বিষন্নতা জাতীয় বিক্রিয়া তৈরী করে ।

আমাদের শরীরের ইমুনেশন সিস্টেম সারাক্ষন আমাদের শরীরকে কার্যক্ষম করে রাখতে ব্যাস্ত । শীতকালে কোন এক অদ্ভুত কারণে আমরা অসুস্থ হয়ে পড়ি । স্বাভাবিক অবস্থায় আমাদের শরীর খুব সহজে যে কোন খাবার ডাইজেস্ট করে ফেলতে পারে । কিন্তু শীতকালে এই ব্যাপারটা এতো সহজে হয় না । তাপমাত্রা কম থাকার কারণে আমাদের পাকস্থলীতে খাবার ডাইজেস্ট করতে শরীরকে স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি শক্তি প্রয়োগ করতে হয় । এর ফলে ডায়রিয়া বা এই জাতীয় রোগ এই সময় খুব বেশি দেখা যায় । হাসপাতাল গুলুতে শীতকাল সবচেয়ে ব্যবসা সফল একটা সময় । এই সময় রোগীর শঙ্কা বা সংখ্যা দুটুই অনেক বেড়ে যায় । আমাদের শরীরের ইমুনেশন সিস্টেম অনেক দুর্বল থাকে এই সময় । চাইলেই ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাস এর সাথে আগের মতো যুদ্ধ করতে পারে না । শরীরের অল্প ব্যাথা অনেক বেশি মনে হয় এই সময় । ভালোবাসার বা এই জাতীয় অনুভূতির সময় কোথায় ।

শীতের এই সময়টাতে বেশি করে ভিটামিন মিনারেল এই জাতীয় খাবার খাবেন । এতে শরীর এন্টিবডি তৈরী করতে পারবে । অসুস্থ হবার ভয় কমে যাবে ।

তাপমাত্রা যখন খুব কমে যায় আমাদের ঘুম অনেক হালকা হয়ে যায় । আমরা আগের মতো গভীর ভাবে ঘুমাতে পারি না । এর ফলে আমাদের দিনের বেলার কাজকর্ম গুলো অনেকটা ঝিমিয়ে পরে । দুপুর বেলা আমাদের মনে হয় একটু ঘুমিয়ে নেই । কারণ আমাদের মন দিনের এই সময়টাকে রাতের কাছাকাছি মনে করতে শুরু করে । ঠিক এই কারণেই শীত প্রধান দেশ গুলোতে মাঁনুষ জন গ্রীষ্মের সময় পাগলের মতো ঘোরাঘুরি করে । কারণ এরা বছরের প্রায় বেশির ভাগ সময় অনেকটা রাতের মাঝে থাকে । আর আমাদের দেশে এর উল্টো । কারণ আমরা গরমের সময় প্রচন্ড গরমে ঘোরাঘুরির কথা ভাবতে পারি না । শীতের সময়টুকুতে যেটুকু আলো পাই তার মাঝে ঘুরে মজা পেতে চাই ।

ধর্মেও শীত গ্রীষ্মের সময় ভালোবাসার রূপ বিন্যাস করা আছে । তাপমাত্রার প্রকারান্তে এই নির্দেশ অনেকটা আমার আপনার প্রেম ভালোবাসা নিয়ন্ত্রণ করে । সুতরাং আমাকে আপনাকে মানতেই হচ্ছে আমাদের সবচেয়ে গভীরতম অনুভূতি প্রেম অথবা ভালোবাসা পুরোপুরি পরিবেশের তাপমাত্রার উপর নির্ভরশীল । এখন থেকে এই জাতীয় অনুভূতির টের পেলেই সবার আগে গুগল এ তাপমাত্রা দেখে নেবেন ।



তাপমাত্রা ১৫ ডিগ্রির কাছাকাছি আসলে বুজতে পারবেন সবচেয়ে ভালো সময় এটা আপনার জন্য । কারণ গবেষণায় দেখা গেছে এই তাপমাত্রায় বেশির ভাগ মানুষ সবচেয়ে বেশি সুখী থাকে ।আপনার ফেসবুক ফ্রেন্ডদের জন্মদিনের লিস্টি নিলে দেখবেন বেশির ভাগ জন্মদিন ডিসেম্বর জানুয়ারি বা ফেব্রুয়ারির মাঝে । আর যদি বেশির ভাগ বিয়ের অনুষ্ঠানের সময়কে যদি এর সাথে মিলিয়ে দেখেন দেখবেন এই সময়টার তাপমাত্রা ১৫ থেকে ২০ ডিগ্রির মধ্যে ঘোরাঘুরি করছে । যদি অন্যান্য প্রাণীকুলের ক্ষেত্রে ঋতু আর তাপমাত্রা বিবেচ্য হয় তবে আমাদের ক্ষেত্রেও তা হবে । এটাই স্বাভাবিক । আমি যদি ভুল না করে থাকি এই সময় দেশের তাপমাত্রা অনেকটা এর কাছাকাছি । খুব সম্ভবত ভালোবাসার এটাই উৎকৃষ্ট সময় । শরীর ও মন ভালো থাকলে তবেই ভালোভাবে ভালোবাসা যায় । কারণ এখন আপনি বুজতে পারছেন আপনার মন কতটা অসহায় সামান্য তাপমাত্রার কাছে ।

আসুন ভালোবাসি । শরীর মন সবকিছু দিয়ে । আবার এই তাপমাত্রা আসতে আরো এক বছর ।

view this link
view this link
view this linkview this linkview this link
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ১১:১৪
৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আপনি কি পথখাবার খান? তাহলে এই লেখাটি আপনার জন্য

লিখেছেন মিশু মিলন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩৪

আগে যখন মাঝে মাঝে বিকেল-সন্ধ্যায় বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতাম, তখন খাবার নিয়ে আমার জন্য ওরা বেশ বিড়ম্বনায় পড়ত। আমি পথখাবার খাই না। ফলে সোরওয়ার্দী উদ্যানে আড্ডা দিতে দিতে ক্ষিধে পেলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×