somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জঙ্গি দমন ও মেরুদন্ডহীন প্রাণীর কথা

০২ রা এপ্রিল, ২০১৭ ভোর ৪:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


প্রায় প্রতি মাসেই আমেরিকার কোনো না কোনো শহরে শেতাঙ্গ পুলিশের গুলিতে কৃষ্ণাজ্ঞ মারা যাবার ঘটনা নিত্য নৈমিত্তক একটা ব্যাপার । কিন্তু এই ইস্যু নিয়ে এই দেশের বেশির ভাগ মানুষের তেমন একটা ভ্রূক্ষেপ নেই । যদিও প্রতিটি পুলিশের কোমরের বেল্টে পিস্তলের ঠিক ছয় ইঞ্চি পেছনেই একটা ইলেক্ট্রিক গান থাকে । চাইলেই এই ইলেকট্রিক গান ব্যবহার করে রীতিমতো মেরে ফেলা থেকে বাচাতে পারে এখানকার পুলিশরা ।কিন্তু এই সহজ কাজটি এখানকার পুলিশরা খুব একটা করতে চায় না । আমার জানা মতে এই ধরণের হত্যার জন্য কোন পুলিশের এখনো চাকরি পর্যন্ত যায়নি । এখন ভাববার বিষয় হলো যে দেশে ট্রাম্পের মতো প্রেসিডেন্টকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে নামিয়ে দেবার উপক্রম সেখানে কেন পুলিশের এই আচরণে প্রশাসন কিছু করে না ?

নিউইয়র্ক বা লন্ডনের মতো কসমোপলিটন শহরে দুনিয়ার নানা জাতের মানুষের বসবাস । আফ্রিকান জাপানি ইন্ডিয়ান চাইনিজ নানা জাতের মানুষের চেহারার গঠন আর শারীরিক আচার-আচরণ বেশ ভিন্ন । এতটাই ভিন্ন যে এখানকার আফ্রিকান মাইগ্রান্টদের আচার আচরণ দেখলে আমার আপনারও ভয় লেগে যেতে পারে । তবে এরা বেশির ভাগই নিরীহ । সমস্যা একটাই । যখন কোনো আফ্রিকান মাইগ্রান্টকে পুলিশ হাত তুলে দাঁড়াতে বলে তখন সে দৌড়ানো শুরু করে । ঠিক কি কারণে এরা দৌড়ায় এটা কারোরই জানা নেই । আর পুলিশের কাজ দোড়ানো মাত্র গুলি করা । এখন উপড় থেকে ক্যামেরা দিয়ে ভিডিও করলেও কোনো ভাবেই পুলিশকে দোষ দেয়া যাবে না । কারণ এখানকার পুলিশ যখন কাওকে থামতে বলে তখন হাত পর্যন্ত নাড়ানো যায় না । দৌড়ানো তো দূরের কথা । এই পর্যন্ত যত কৃষ্ণাজ্ঞ নিরীহ মানুষ শেতাঙ্গ পুলিশের গুলিতে মারা গেছে প্রায় সবাই অযথাই দৌড় ঝাঁপ দিয়ে প্রাণ হারিয়েছে ।

সাম্প্রতিক দেশে জঙ্গি দমনের নানা ভিডিও নিয়ে নানা মহলের নানান মন্তব্য । অনেকে একে সাজানো নাটক বলে মানছেন । কিন্তু একই ধরণের অপরাধ এর দমন তো প্রায় একই রকম হবে । তাই না ? পালিশ বা সোয়াত এরা তো একই রকম ভাবেই জঙ্গি দমন করবে । কারণ আমেরিকার কালোদের মতো আমাদের দেশের জঙ্গিরাও ঠিক কি কারণে সবসময় আত্মঘাতী হচ্ছে তা বোধগম্য নয় । চাইলেই নিজে মারা না গিয়েও অন্যের ক্ষতি সাধন করা যেতেও পারে । আরো একটা ব্যাপার হচ্ছে আমাদের ভাববার দৃষ্টিভঙ্গি । আইন শৃঙ্খলা বাহিনী যা করছে এরপর মৃত জঙ্গিদের পক্ষে কি কেও কিছু বলছে বা তাদের আত্মীয় স্বজনরা কি বলছেন যে তাদের প্রতি অন্যায় হয়েছে ? যদি মানেন এরা সবাই জঙ্গি তাহলে প্রশাসনের পদক্ষেপকে অন্তত উল্টো চোখে দেখা উচিত নয় । ভিডিও ফুটেজে যদি দেখা যেত জঙ্গিরা সুইসাইডাল ভেস্ট পরে বসে আছে আত্নস্মর্পনরত জন্য তাহলে কি পুলিশের উচিত হতো জঙ্গিদের কাছে যাওয়া ?

ভিন্নমত থাকতেই পারে । এটা গণতন্ত্রের জন্য ভালো । মানুষে জীবনের অধিকার নিয়ে কথা বলাই তো মানবিকতা । তবে ঠিক আমরা যেভাবে জঙ্গি দমন অপেরেশন গুলোকে দেখি যারা আর্মি বা পুলিশের মাঝে আছেন তারা ওই ভাবে দেখেন না । কারণ আমার আপনার অফিসের কাজের ধরণ যেমন একজন আর্মি অফিসার সঠিক ভাবে বুজবে না আমরাও একজন আর্মি অফিসার এর কোড বা নিয়ম নীতি বুজবো না । যারা বাংলাদেশ আর্মিতে কমিশন পদের জন্য আবেদন করছেন তারা জানেন আবেদনের প্রথম দিন কি নিদারুন অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হতে হয় প্রতিটি আবদেনকারীকে । যা ওই দিন হয় তা যদি সাধারণ কোনো মানুষকে বলা হয় তাহলে সাথে সাথেই এই প্রক্রিয়াকে প্রচন্ড অমানবিক বলে লিখা লিখি শুরু করে দেবেন । যা আমার আপনার কাছে নিয়ম লঙ্ঘন তা অন্যের কাছে হয়তো নিয়ম । এটাই ব্যালান্স অফ ডেমোক্রেসি । সবাই সব কাজ করবে না । একজন কবির কখনো কমান্ডো হবার স্বপ্ন দেখা উচিত নয় । কারণ এতে রোল কনফ্লিক্ট হতে পারে ।

টাকা পয়সার দিক থেকে মধ্য প্রাচ্যের দেশ গুলো বেশ ধনী । কিন্তু উন্নত দেশের তালিকায় এই দেশ গুলোর নাম নেই । এর কারণ টাকা পয়সা গুলোর সমবন্টন নেই এই দেশ গুলোর । একটা দেশের উন্নত হবার পেছনে টাকা পয়সার সমবন্টন যেমন প্রয়োজনীয় ঠিক তেমনি জ্ঞানের সমবন্টনও প্রয়োজন । অর্থাৎ দেশের সবাই যখন এক সাথে একই চিন্তা করতে পারবে ঠিক তখনি একটা দেশ সামনের দিকে এগিয়ে যাবে । যেমন আমেরিকা বা ইউরোপে বেশির ভাগ মানুষ জন মোটামুটি একই রকম ভাবে ভাবতে পারে । একই রকম ভাববার জন্য জানতে হয় ভাববার নিয়ম কানুন । যদি সাধারণ নিয়ম কানুন এবং রোল ডেফিনেশন জানা থাকে তাহলে কখনোই অন্য কারো দায়িত্ব নিয়ে গল্প বানানোর চিন্তা মাথায় আসবে না ।

সম্ভবত সাধারণ মানুষের পক্ষে এই অসাধারণ গল্প গুলুকে হজম করতে সমস্যা হচ্ছে । মানুষের চিন্তা ধারার সীমাদ্ধতা তার বেড়ে উঠার পরিবেশের উপর নির্ভর করে । প্রায় সব সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তা সটান বা মেরুদন্ড একেবারে সোজা করে হাটতে পারে । যেখানে বেশির ভাগ আমরা এখনো সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারি না । একটু লক্ষ্য করলেই দেখবেন আমাদের বেশির ভাগ যখন দাঁড়ায় তখন একটু হেলে থাকি । একটু হেলে থাকা মানুষের পক্ষে সটান দাঁড়িয়ে থাকা মানুষের চিন্তা ধারা করাটা এতো সহজেই হবার কথা নয়।

ধন্যবাদ সটান দাঁড়াতে পারে এই মানুষ গুলোকে । আর যারা এখনো জঙ্গি দমন গল্পের নানা দিক ব্যাখ্যা করে চলছেন তাদের বলছি । আয়নায় আগে দেখুন আপনি যখন দাঁড়ান তখন বেঁকে থাকেন কিনা ? মেরুদন্ড সোজা করে দাঁড়িয়ে থাকা এতো সহজ কাজ নয় । চেষ্টা করে দেখতে পারেন ।

সর্বশেষ এডিট : ০২ রা এপ্রিল, ২০১৭ ভোর ৬:১৪
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

খুলনায় বসবাসরত কোন ব্লগার আছেন?

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:৩২

খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় তথা কুয়েট-এ অধ্যয়নরত কিংবা ঐ এলাকায় বসবাসরত কোন ব্লগার কি সামুতে আছেন? একটি দরিদ্র পরিবারকে সহযোগীতার জন্য মূলত কিছু তথ্য প্রয়োজন।

পরিবারটির কর্তা ব্যক্তি পেশায় একজন ভ্যান চালক... ...বাকিটুকু পড়ুন

একমাত্র আল্লাহর ইবাদত হবে আল্লাহ, রাসূল (সা.) ও আমিরের ইতায়াতে ওলামা তরিকায়

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৬:১০



সূরাঃ ১ ফাতিহা, ৪ নং আয়াতের অনুবাদ-
৪। আমরা আপনার ইবাদত করি এবং আপনার কাছে সাহায্য চাই।

সূরাঃ ৪ নিসার ৫৯ নং আয়াতের অনুবাদ-
৫৯। হে মুমিনগণ! যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় রাজাকাররা বাংলাদেশর উৎসব গুলোকে সনাতানাইজেশনের চেষ্টা করছে কেন?

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সম্প্রতি প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন? শিরোনামে মোহাম্মদ গোফরানের একটি লেখা চোখে পড়েছে, যে পোস্টে তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×