আপনার সহধর্মিনীর ভাত খাওয়ার ব্যাপারটা কি কখনো লক্ষ্য করেছেন ? মানে উনি কি ভাতের সাথে সব তরকারি একসাথে মিশিয়ে খায় ? নাকি একবার একটা একটা করে ভাতের সাথে মিশায় ? আজকে একবার খেয়াল করে দেখবেন ? দেখবেন বেশির ভাগ সহধর্মিণীরা একবারে একটা করে পাচঁন ভাতের সাথে মিশিয়ে এরপর মুখে দিচ্ছে । আর আপনার অভ্যাস হয়তো উল্টো । সব পাঁচন এক সাথে ভাতের সাথে মিশিয়ে এরপর উদরপূর্তি । সারা জীবন এক সাথে কাটিয়ে দেবার পরও অনেক এই সুক্ষ ব্যাপারটা খেয়াল করেন না । স্বাভাবিক কারণেই উদরপূর্তির ক্ষীণ এই অভ্যাসটার পেছনে যথেষ্ট পড়াশুনার ব্যাপার আছে ।
আপনি আপনার ফেইসবুক পোস্টগুলোর দিকে একবার দেখুন । দেখবেন সব হযবরল । কখনো বন্যার্তদের জন্য সাহায্য চাচ্ছেন বা কখনো কোরবানির টাকা রিলিফ দিয়ে দিচ্ছেন বা এই জাতীয় । অনেকটা ভাত খাওয়ার মতো করে আপনি সবগুলো ইসু মাখিয়ে ফেলছেন । এটাকে বলা হয় মেল্ ব্রেন ওয়ার্ক বা পুরুষের ব্রেইনের দুইটা পাশ একসাথে কাজ করার ফল । স্বাভাবিক ভাবে আমরা যারা পুরুষ আমাদের তথাকথিত মগজের বাম এবং ডান এই দুই পাশ এক সাথে কাজ করে । যার ফলে আমরা বেশির ভাগ সময় বেশির ভাগ জিনিসপত্র খুব বেশি পেঁচিয়ে ফেলি একসাথে । কিন্তু স্ত্রীকুল এর বিপরীত । নারী মগজের কার্যকারিতা একপেশে । যার ফলে উনারা চাইলেও একসাথে সব কিছু মিশিয়ে ফেলতে পারেন না । এক একটা জিনিস একবার করে সুচারু ভাবে কার্যকর করেন । এই জন্যই যখন কোনো নারী ড্রাইভিং করে দেখবেন শুধু সামনের দিকেই যাচ্ছেন খুব সুচারু ভাবে ।
যাই হোক আলোচ্য বিষয় হলো কেন আমরা কোরবানির সাথে বন্যা বা বন্যার সাথে অন্যায় ভাবে অন্য সব জিনিসপত্র মাখিয়ে ফেলছি ? কারণ আমরা পুরুষ মানুষ । বৃষ্টির দিনে খিচুড়ি খাবো আর বন্যা হলে ইসু গুলো দিয়ে খিচুড়ি বানাবো না তা হয় না । আমরা যখন নিজেদের কোরবানির টাকা দিয়ে বন্যার্তদের জন্য রিলিফ কেনার পোস্ট দিচ্ছি তখন আমাদের সহধর্মিনীর ছুরিতে ধার দিচ্ছেন আর মশলা পাতি কিনছেন কোরবানির জন্য । কারণ উনি জানেন শেষমেশ ঠিকই আপনি কোরবানি করবেন আর উনাকে রান্না বান্না করতে হবে । আর আপনি মহা আনন্দে মাংস আর অন্যান্য পাঁচন একসাথে মুখে পুড়ে বলেবেন বাহ্ ! বেশতো । কারণ আমরা পুরুষ মানুষ ।
পুরুষ মানুষের অসংলগ্ন আচরণ আদিম কালের । এতে আমাদের দোষ তেমন একটা না । মগজের দুই পাশ যদি একসাথে কাজ করে তবে এটা হতেই পারে । যেমন ধরুন ওমর সানি সাহেব উনার কোরবানীর বাজেট এক লক্ষ্য টাকা এটা বেশ ভালো ভাবেই ফলাও করে দিলেন । তবে আমি নিচ্চিত না উনার ব্রেইনের দুই পাশ না এক পাশ কাজ করে । যাই হোক শেষ পর্যন্ত দেখার বিষয় উনারা কোরবানি করেন কিনা ? একবার আপনি আপনার শেষ ১০ টা ফেসবুক পোস্ট এর দিকে নজর দিন । বুজতে পারবেন কি ঘটছে । গেলো মাস থেকে আজ পর্যন্ত সালমান শাহ থেকে বন্যা পীড়িত মানুষ কিছুই বাদ নেই পোস্ট এ । সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিথস্ক্রিয়া হবে এটাই স্বাভাবিক । কিন্তু এই মিথস্ক্রিয়ার মাত্রা কতটুকু হবে তা হয়তো জানা নেই কারো ।
আমাদের অনুভূতি গুলো নিয়ন্ত্রিত হয় মগজের পিটুইটারি গ্লান্ড এর মাধ্যমে । যার যত বেশি পিটুইটারি লিকুইড তার আবেগ তত বেশি । যুক্তি সঙ্গত কারণে আমাদের এই গ্লান্ড থেকে লিকুইড উপচে পড়ছে । বাস্তব নিরীক্ষা ছেড়ে ব্যাপক ভাবে মগজের দুই পাশ ব্যবহার করছি আমরা । আর রাতের বেলায় খাবারের টেবিলে বসে ভাতের সাথে সব পাঁচন এক সাথে মিশিয়ে মুখে পুড়ে দিয়ে বলি আহ ! আমিও পুরুষ বটে !!!!
একবার আপনার সহধর্মিনী কিভাবে ভাত খায় দেখুন । শিক্ষার অনেক কিছু আছে ।