somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আওয়ামী লীগ ও একটি ই-মেইলের গল্প

১৯ শে নভেম্বর, ২০১৭ ভোর ৫:৫৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


২০০৬ এর কথা। অদ্ভুত এক নেশা ছিল। কথা বার্তা ছাড়াই ই-মেইল বা ফ্যাক্স করার। নতুন নতুন ইন্টারনেট আসলে যা হয়। এমনি একটা ই-মেইল করে বসলাম বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ওয়েব সাইটে। সরাসরি দলের প্রেসিডেন্টকে । এখানেই শেষ নয় । মেইলের বিষয়টা ছিল আরো ভয়াবহ। ওই সময় দলটি ছিল বিরোধী কাতারে । সমানে ধর পাকড় আর মার খাচ্ছিলো বি এন পি সরকারের কাছ থেকে । আমি আওয়ামী লীগকে বোঝালাম কিভাবে অর্গানিজইজড ওয়ে তে আন্দোলন করা যায়। ভাবুন একবার। অনেক গুলু প্রস্তাব ছিল । যার বেশির ভাগ ছিল চরম হাস্যকর । কিন্তু কোন এক অদ্ভুত কারণে আমি উত্তর পেলাম আমার মেইল এর । উত্তরটা পাঠায় তখনকার বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা সাবের হোসেন চৌধুরী। জানতে চান আমার এই ধরণের মার্ খাওয়ার হাত থেকে রক্ষা করার অভিজ্ঞতা আছে কিনা ? ওই বয়সে এই রকম একটি মেইলের অদ্ভুত এই আচরণ বেশ উষ্ণতার জন্ম দেয় । তবে বয়সের সাথে সাথে উষ্ণতা কমে আসে। প্রায় ভুলে যাওয়া ওই মেইলটি যখন আজ পড়তে বসি ভাবি সময়ের অনেক আগেই দলটি আমার মেইলের উত্তর দিয়েছিলো ।

বিরোধী কাতারে থাকা একটি রাজনৈতিক দল যখন নিজেদের আন্দোলনের জন্য এতটা প্ল্যানড ওয়ে তে চলে তখন দলটির প্রতি শ্রদ্ধা জাগা স্বাভাবিক। আমি এরপর আর দ্বিতীয়বার মেইল করিনি। নিজের শিশু সুলভ আচরণে বেশ লজ্জা পাচ্ছিলাম। অন্তত এখন পর্যন্ত । আজ এতো বছর পর এসে মনে হলো ব্যাপারটি মোটেই শিশু সুলভ ছিল না । একটা দল চলবে সভ্য আচরণের মধ্য দিয়ে । থাকবে সুদূর প্রসারী চিন্তা ধারা। মার্ খেলেও খাবে প্ল্যানড ওয়ে তে। ওই সময়কার বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ তখনি বেশ ডিজিটাল ছিল।

সাবের হোসেন চৌধুরী এখন হয়তো আগের মতো নেই। তার জায়গায় অন্য কেও হয়তো এখন মেইল এর উত্তর দিচ্ছে। হয়তো আরো ভালো ভাবে। একজন সাধারণ মানুষের কাছে এই রকম একটা ই-মেইল বা ফোন কল কতটা উষ্ণতার জন্ম দেয় তা যদি অন্য দলগুলো জানতো তবে বেশ ভালো হতো ।অন্তত সমাবেশের সময় যানজট থাকতো না।

আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ব্যবহার করেন টুইটার। মধ্যরাতে জেগে বসে টুইট করাটা তার রীতিমতো নেশা। সব ধরণের প্রটোকল এর পাশ কাটিয়ে ট্রাম্পের এই আচরণ এই দেশের সাধারণ মানুষ বেশ উপভোগ করে । নিজেদের মনে করতে পারে তাদের প্রেসিডেন্টকে। যে কারণে এতো কিছুর পরও ট্রাম্প এখনো মধ্যরাতে টুইট করে। এতে দোষের কিছু নেই। বরং প্রটোকলের ভেতর থাকাটাই এখন বেশ সমস্যার কারণ ।

দেশের অনেক নেতা নেত্রী এখনো প্রটোকল নেশায় আচ্ছন্ন । কথায় কথায় ঢুকরে উঠেন ক্যান্টনমেন্টের বাড়ির জন্য । অথবা বিশেষ পুলিশি প্রহরার জন্য । আমাদের মতো অতি সাধারণ মানুষের পক্ষে রাজা রানীর মতো প্রটোকলের গল্প এখন বেশ বেমানান । আমরা আমাদের মতোই দেখতে চাই সবাইকে । ইচ্ছে হলেই একটা ই-মেইল করে দিবো । জানাবো মনের কথা । বিশেষ পাড়া মহল্লায় থেকে বিশেষ আচরণ এখন খুব একটা উষ্ণতার সঞ্চয় করে না কারো মনেই । সাধারণ ভাবে অসাধারণ হতেই বেশ কাঠখড় পড়াতে হয় সবাইকে । কানাডার প্রেসিডেন্ট বা লন্ডনের প্রাইম মিনিস্টার যখন গণ পরিবহনে চড়েন ভাববার কারণ নেই উনারা অনিরাপদ । আসে পাশের সব কিছুই তাদের নিয়ন্ত্রণে থাকে । শুধুমাত্র সাধারণ মানুষকে নিজেদের অসাধারণ জীবন যাত্রা না দেখাবার জন্যই ওই ব্যবস্থা । আজকালকার যুগে এটাই অসাধারণ । যখন দেখি কোন এক নেত্রীর পাশে থাকার জন্য জামা জুতো ছেড়া ছিড়ি হয় তখন বুজতে বাকি থাকে না আসে পাশে মানুষগুলো বেশ অসাধারণ । আর এই অসাধারণ মানুষ গুলুর মাঝখানের নেত্রী কিভাবে সাধারণ আচরণ করবেন ? প্রশ্ন থেকেই যায় ।

আমার ই-মােইলের উত্তরে আমি বিহ্বলিত নই । বরং আমার ভাবতে ভালো লাগে এমন একটি দল আছে আমার দেশে যার আচরণ বেশ সাধারণ । যতদিন যাবে তত মানুষের মাঝে স্বাভাবিক আর সচেতন থাকার প্রতিযোগিতা বাড়বে । একসময় দুবেলা খাবারের জন্য যারা দিন চলতো তারা এখন ইন্টারনেট ব্যবহার করেন । একটা ই-মেইল তারা করতেই পারেন । আজকের আওয়ামীলীগ কর্মী সংগ্রহের জন্য ওয়েব সাইটের সাহায্য নেয় । মুহূর্তের মধ্যে আমি হতে পারি একজন কর্মী বা সমর্থক । এতে বাধা থাকার কথা না । এমনটিই হয় সারা বিশ্বে । তবে পিছিয়ে থাকা অন্য দলগুলো যদি শুধু প্রটোকলের দোহাই দিয়ে আবার প্রটোকল পেতে চান তবে প্রশ্ন থেকেই যায় ।

আমাকে অতি সাধারণভাবে একটু সম্মান দেন আমি আপনার সাথে থাকবো । এটুকু সম্মান সবারই প্রাপ্য ।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে নভেম্বর, ২০১৭ সকাল ১১:০৫
৭টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অন্যায় অত্যাচার ও অনিয়মের দেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ

লিখেছেন রাজীব নুর, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:৪০



'অন্যায় অত্যাচার ও অনিয়মের দেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ'।
হাহাকার ভরা কথাটা আমার নয়, একজন পথচারীর। পথচারীর দুই হাত ভরতি বাজার। কিন্ত সে ফুটপাত দিয়ে হাটতে পারছে না। মানুষের... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্য অরিজিনস অফ পলিটিক্যাল জোকস

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১১:১৯


রাজনৈতিক আলোচনা - এমন কিছু যা অনেকেই আন্তরিকভাবে ঘৃণা করেন বা এবং কিছু মানুষ এই ব্যাপারে একেবারেই উদাসীন। ধর্ম, যৌন, পড়াশুনা, যুদ্ধ, রোগ বালাই, বাজার দর থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×