মহাত্মা গান্ধীর বাম হাতের অনামিকায় ওয়েডিং বেন্ড আছে কিনা জানাটা বেশ দরকার ছিল। অনেক ঘাটাঘাটি করলাম।তবে আমি নিশ্চিত ছিলাম পাবো। পেলাম না। নির্ভেজাল একটা হাত ছিল উনার । কোনো হাতেই কোনো রিং পড়তেন না গান্ধীজি। ছেলে মানুষের বাম হাতের অনামিকায় গোলাকার একটা রিং এর মাহাত্ত্য অনেক। এই জন্যই মহাত্মা গান্ধীর হাত দেখাটা জরুরি ছিল।
দেশে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগের দল গোছানোর কাজ শুরু হয়েছে। দেখা যাচ্ছে বেশ নতুন নতুন মুখ।এদের প্রায় অনেকেই লন্ডন বা আমেরিকা থেকে লেখাপড়া শেষ করে এখন দেশের রাজনীতিতে নিজেদের অবদান রাখতে চাচ্ছেন । সবাই বেশ তরুণ। আর এরা প্রায় সবাই একই ধরণের । অন্তত আচরণ আর পোশাক আশাকের দিক থেকে । প্রথম যেটা লক্ষ্য করার মতো বিষয় তা হলো লন্ডন বা আমেরিকা ফেরত এই সব তরুণ নেতাদের প্রায় সবার বাম হাতের অনামিকায় একটা গোলাকার রিং আছে । অন্তত বেশির ভাগের ক্ষেত্রে । পেশায় বেশির ভাগ লন্ডন ফেরত আইনজীবি। এই রিং এর ব্যাপারটা লক্ষ্য করলেই বুজতে পারবেন আপনার এলাকার নেতা কোন দেশ থেকে লেখাপড়া করে এসেছেন । পোশাক আশাখের ক্ষেত্রে এরা বেশ পরিপাটি । অনেকটা হিন্দি সিনেমার নেতাদের মতো দবদবে সাদা পাঞ্জাবি আর শাল এদের বেশ প্রিয়। আর মুজিব কোটটার রং বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নীল রঙের। সবার ক্ষেত্রে যে সব একই হবে তেমন একটা না । তবে এটা বেশির ভাগের জন্য ।
বিদেশের আবহাওয়া মানুষের চেহারা পর্যন্ত বদলে দিতে পারে । দেখবেন অনেক দিন যারা জাপান বা চীন থাকে ওদের চোখ ছোট ছোট হয়ে চাইনিজদের মতো হয়ে যায় । বিএনপি নেতা মোর্শেদ খান অনেক দিন জাপানে রাষ্ট্রদূত থাকা কালে উনার চোখ দুটোও ছোট হয়ে গেলো। একবার গুগল করে দেখে নিতে পারেন । তবে লন্ডন আমেরিকায় যারা বেশি দিন থাকে তাদের চোখ ছোট না হলেও হাতের অনামিকায় চলে আসতে পারে একটা গোলাকার রিং অথবা মাথার চুলে জেল ।
ঠিক কি কারণে তরুণ এই নেতারা সবাই একই আচরণ করে তা না জানলেও এটা জানি আপনি উনাদের পায়ে ধরলেও উনারা হাতের ওই রিংটা খুলবে না । এটাকে বলা হয় ওয়েস্টার্নাইজেশন । এই রকম আরো অনেক আচরণগত মিল খুঁজে পাওয়া যাবে নতুন তরুণ এই নেতাদের মাঝে । এটা খারাপ কিছু নয় । পাশের দেশ ভারতেও এটা হয়েছিল এক সময় । সুতরাং আমাদের দেশেও এই রকম তরুণ রিং পড়া নেতাদের দেখা মিলবে এটাই স্বাভাবিক । কিন্তু জানার বিষয় হচ্ছে কোন কোন নেতারা লন্ডন বা আমেরিকা থেকে ফিরে এসেও বাম হাতের অনামিকায় গোলাকার রিংটা পড়েন না । অনেকটা মহাত্মা গান্ধীর মতো ।
হাতের রিং এর মতো ছোট খাটো এই রকম ব্যাপার নিয়ে এতো লম্বা লেখার প্রয়োজনীয়তা বেশ প্রখর । কারণ আগেই বলেছি যারা হাতে ওয়েডিং বেন্ড পড়েন তাদের পায়ে ধরলেও এই রিং খুলবেন না। আর এই রিং এর মাহাত্ম একমাত্র সহধর্মিনী ছাড়া কেও বুজতে পারে না । প্রচন্ড ভালোবাসার আর আবেগের এই রিং । এই ভালোবাসা অনেকাংশে জনগণের চেয়েও বেশী।
গান্ধীজির স্ত্রী কস্তুরবা গান্ধী হয়তো কখনো টেরেই পাননি উনার জীবন সাথীর হাতে গোলাকার কিছু ছিল না । আর গান্ধীজিও হয়তো জানতেন গোলাকার এই রিংটির ক্ষমতা। তাই হয়তো বিদেশে লেখাপড়া করেও হাতের অনামিকায় উঠেনি ওয়েডিং বেন্ডটি । তরুণ শিক্ষিত নতুন নেতাদের হাতের রিং খোলার দরকার নেই । তবে অসম্ভব ক্ষমতার এই রিং টি যদি মাঝে মাঝে খুলে রেখে জনতার পাশে আসা যায় তাহলে অনেকটা গান্ধীজির মতো লাগবে । উনিও তো আর সবার মতো বিলেত ফেরত আইনজীবী ছিলেন । গোটা একটা উপমহাদেশ বানিয়ে দিয়ে গেলেন ।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৮ ভোর ৪:১৩