somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মামা বাড়ির আবদার

০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ৮:৪৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


কিছুদিন আগে বাসার ড্রাইভারকে কোতোয়ালি থানার এস আই বেদম পিটুনি দিলো। অপরাধ বেশ গুরুতর। প্রথম অপরাধ সিগন্যাল দেবার পরও গাড়ি থামায়নি। দ্বিতীয় অপরাধ পুলিশের সাথে বাড়াবাড়ি। আর সবচেয়ে ভয়াবহ অপরাধ নিজেকে মন্ত্রীর মামার ড্রাইভার বলা। ফলাফল কঠিন রকমের ডান্ডাবাড়ি। ব্যাপারটা মোটেই মামা বাড়ি আবদার না। শীত কালের বেদম পিটুনির ব্যাথা সবাই বুজতে পারে না। শারীরিক ব্যাথার চেয়ে ড্রাইভারের মনের ব্যাথা অনেক বেশি। ঠিক কি কারণে পিটুনি খেলো তাও বুজতে পারছে না। ড্রাইভার বুজতে না পারলেও আমি ঘটনা শোনার সাথে সাথেই বুজতে পারলাম বেদম প্রহার এর কারণ। মন্ত্রীর মামারা কখনো ২০০৪ মডেল এর গাড়িতে চড়ে না। ২০১৮ আর ২০০৪ মডেল এর মাঝখানে বিশাল ফারাক। একটা ভিআইপি আর একটা অতি সাধারণ ।

অতি সাধারণের গাড়ি চলবে ধীর গতিতে। সার্জেন্ট হাত তুললেই থেমে যেতে হবে।এম্বুলেন্স, ভিআইপি অথবা জরুরি গাড়িগুলো চলবে রকেট গতিতে। উল্টো পথে চললেও সমস্যা নেই। কারণ অতীব জরুরি এইসব গাড়ির চলাচল। অর্ধেক দেশকে জ্যামে রেখে এই গাড়িগুলো ঠিক কোথায় যায় তা না জানলেও চলবে। ধরুন এম্বুলেন্স করে রোগী নিয়ে ভিআইপি মর্যাদায় হাসপাতাল গেলেন। গিয়ে দেখলেন ডাক্তার সাহেব জ্যামে আটক পরে আছে। এটা হতেই পারে। অতঃপর সব ডাক্তাররা মিলে আবেদন করলো ভিআইপি হবার। তারও সমাধান হলো । শেষমেশ দেখা গেলো ভিআইপি সড়কে লম্বা জ্যাম আর অতি সাধারণ গাড়িগুলো রকেট গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে।

মন্ত্রী পরিষদের সচিব বললেন অন্য দেশের মতো আমাদের দেশেও ভিআইপিদের জন্য আলাদা সড়ক করা হবে। ঠিক কোন দেশে এই রকম সড়ক আছে তা কিন্তু উনি জানাননি। আর সাংবাদিক ভাইয়েরাও জানার আগ্রহ বোধ করেননি। অসাধারণ এক পরিস্থিতি।ভিআইপি সড়কের বেশ উপকারিতা। যেনতেন মানুষ আর অস্বাভাবিক ভিআইপি মানুষদের মধ্যে একটা পার্থক্য করা যাবে। যে কেও আর চাইলেই মন্ত্রীর মামার বাড়ির গল্প বলতে পারবে না। বেশ অভাবনীয় চিন্তা। এই রকম চিন্তা ধারা একমাত্র আমাদের দেশেই সম্ভব। দুইটা শ্রেণীর মানুষকে রাস্তা দিয়ে আলাদা করে দেয়া। অসাধারণ।

ইংল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী যখন পাবলিক ট্রেনে চড়ে। আমেরিকার সিনেটরা যখন ট্রেনে চড়ে। ডোনাল ট্রাম্পের বাসার সামনে যখন সবাই আন্দোলন করতে পারে আমরা তখন আলাদা সড়ক করার কথা ভাবি। ভাবতেই পারি। ভাবতে তো আর ক্ষতি হয়না। কিন্তু এই জাতীয় ভাবনা যদি মন্ত্রী পরিষদের হয় তখন তাদের নিয়ে ভাবনাটা বেড়ে যায়। তাদের বেড়ে উঠার পরিবেশ নিয়ে ভাবনা হয়। ভাবতেই পারি।আমার ভাবতেও তো সমস্যা নেই। তবে আমার ভাবনা আর মন্ত্রী পরিষদের ভাবনায় অনেক পার্থক্য। একটা অতি সাধারণ ভাবনা আর একটা ভিআইপি।

সে যাই হোক। শীগ্রই ভিআইপি সড়কে চলাচলের নিয়ম কানুন আসবে। কার কার গাড়ি চলবে ঐ সড়কে একটা ফর্দ পাওয়া যাবে পত্রিকায়। আমাদের ড্রাইভার অধীর আগ্রহে বসে আছে তার ২০০৪ মডেলের গাড়িটা ঐ ফর্দে থাকবে। ড্রাইভার একবার গাড়ির দিকে তাকায় আর একবার অবিশ্বাসী চোখে আমাদের দিকে। আসলেই কি এটা মামা বাড়ি ? সে এখনো বুজতে পারছেনা কি কারণে ঐদিন এতগুলো পিটুনি খেলো। শীতের সকালে ড্রাইভারের শরীর ব্যাথায় বেঁকে বসে। বেচারা বুজতে পারে না এটা অতি সাধারণ একটা ব্যাথা। শীতকালে প্রায় সবারই এমন ব্যাথা হয়। আর এও বুঝতে পারে না তার ২০০৪ মডেলের গাড়ি কোনো ভাবেই মামা বাড়ির আবদার না।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ৯:০৫
১১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না ********************

লিখেছেন মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩৫

যখন প্রথম পড়তে শিখেছি তখন যেখানেই কোন লেখা পেতাম পড়ার চেষ্টা করতাম। সেই সময় দোকানে কোন কিছু কিনতে গেলে সেই দোকানের লেখাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তাম। সচরাচর দোকানে যে তিনটি বাক্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×