সম্প্রতি ব্লগার পুশকিন এর সিনেমাড্ডা নিয়েপোস্ট টি মনে হয় অনেকেই খেয়াল করেছেন। সামুর সিনেমাপ্রেমীদের নিয়ে একটি আড্ডার আয়োজনই ঐ পোস্টটির মূল বক্তব্য। পরবর্তিতে অনেক ব্লগারদের আগ্রহ দেখে ফেসবুকে সামহোয়্যারইন এর সিনেমাখোরদের আড্ডা নামে একটি পেজ ওপেন করা হয়। বর্তমানে এর সদস্য সংখ্যা একশ ছাড়িয়েছে। পেজের অথরিটিকে শুভেচ্ছা এবং সকল সদস্যকে শুভকামনা।
সামহোয়্যারইন এর সিনেমাখোর প্রতিটি সদস্য যেন একে অন্যের সাথে সম্পৃক্ত থাকতে পারে সেই উদ্দ্যেশে এই গ্রুপের সৃষ্টি।এখানে মুক্তালোচনা,আড্ডা,সিনেমা নিয়ে পরিকল্পনা,তর্ক-বিতর্ক সবই থাকছে এবং প্রতিটি সদস্য যেন নিজেদের মতামত সুন্দরভাবে প্রকাশ করতে পারে সেই বিষয়বস্তুর উপর নজর দেওয়া হচ্ছে। আপ্নারা সবাই আমন্ত্রিত।
সধাসিধা একটি জরীপঃ
বাংলাদেশে ভারতীয় ছবি আমদানি সাপোর্ট করেন কি ?
মুল বক্তব্যঃ
বর্তমানে সিনেমা নিয়ে হট ইস্যু হচ্ছে বাংলাদেশে ভারতীয় সিনেমা আমদানি। এর পক্ষে বিপক্ষে রয়েছে নানান মত।কোন একটা সমস্যা সমাধানে আলোচনার গুরুত্ব অনেক। এই গুরুত্বপুর্ন ইস্যুতে পিছিয়ে নেই সামুর সব মুভিপ্রেমীরাও। বিভিন্ন মতভেদের পোস্ট আসছে অনেক।
এর মাঝে একটি পোস্ট হলো ব্লগার রিজওয়ানুল ইসলাম রুদ্রের , সিনেমা বিষয়ক তার লেখা গুলো অসাধারন। তিনি কিছুদিন আগে চমৎকার একটি পোস্ট দিয়েছিলেন।এই পোস্টে আমার একটি মন্তব্য এবং এবং ফেবুতে অন্যান্য সিনেমাপ্রেমীদের কিছু প্রতিমন্তব্য উল্লেখ করতে চাচ্ছি।
আশা করছি সুস্থ আলোচনার মাঝে বেরিয়ে আসবে সুন্দর কিছু সমাধান।
আলোচনায় আপ্নারাও আমন্ত্রিত।
রুদ্র ভাইয়ের পোস্ট-মাননীয় প্রধানমন্ত্রী! বাংলাদেশি চলচ্চিত্রশিল্পকে তাহলে পুরোপুরি ধ্বংস করে দিচ্ছেন আপনারা? ।
আমার মন্তব্য-
ভারতের ছবির সাথে আমাদের ছবির তুলনা করার মত পজিশনে যেতে যেই সময় এবং সূযোগটুকু দরকার, তা কিন্ত আমরা পাচ্ছিনা।অবশ্যই বাংলাদেশের ফিল্ম ই ইন্ডাস্ট্রিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পথে ভারতীয় ছবি আমদানী একটা মূল অন্তরায়।
আমি বাংলাদেশের এফডিসি নিয়ে অনেক আশাবাদী। এখন হয়তো খারাপ অবস্থা যাচ্ছে। তবে ভালো সময় অবশ্যই আসবে। আমরা কিন্ত টেলিভিশন ইন্ডাস্ট্রিতে ভারতের চার বছরের সিনিয়ার। পরে ১৯৬৮ তে পাকিস্তান এবং বাংলাদেশের টেকনিশিয়ানদের সহোযোগিতায় তৈরি হয়েছিলো তাদের প্রথম টিভি চ্যানেল দূরদর্শন।
আমরা যেই সময় ৭১ এর যীশু, হয়ার দেয়ার ইস লাইট, জীবন থেকে নেয়া এই সব বিপ্লবী ছবি তৈরি করি তখন তারা তৈরি করে "সাঙ্গাম" টাইপের রোমান্টিক ছবি। এই জেনার থেকে তারা এখনো বের হতে পারেনি।
ইন্ডিয়ার ছবিতে বাইরের দেশ হতে শ্যুট করার প্রবনতা আসলো কবে থেকে ? আর বাংলাদেশের লাভ ইন আমেরিকা, লাভ ইন থাইল্যান্ড এই ছবিগুলার প্রিমিয়ার হয় কত সালে ? ভুলে গেছেন সেই সব কথা ?
৮০'র দশকের " এক মুঠো ভাত" ছবিতে হেলিকপ্টার ব্যাবহার করে জেল ভেঙ্গে পালিয়ে যাবার একটা সীন আছে। যখন ভারতীয়রা এই ধরনের শ্যুটিঙের কথা চিন্তাও করতো না।
সালমান শাহ যখন লিভাইসের জিন্স পরে আর মাথায় স্কার্ফ বেধে ছবি করে জানেন তখন শাহরুখ , সালমান রা পড়ে ছিলো সেই পুরাতন গেট আপে।
এমনকি জহীর রায়হানের মত প্রতিভাবান শিল্পীদের মৃত্যু বরন করতে হলো ভারতীয় সিনেমা আমদানির বিপক্ষে কথা বলতে গিয়ে।যুদ্ধের আগে, আলাউদ্দীন আলি, জহির রায়হান , আমজাদ হোসেন, সুভাষ দত্ত এরা সবাই মিলে শেখ মুজীবের সাথে মিটিং করেছিলো। সেই খানে ভারতীয় ছবিতো বটেই, উর্দু ছবি পর্যন্ত বাংলাদেশে না ঢুকার ব্যাবস্থা ফাইনাল করা হয়।
প্রশ্ন হচ্ছে কেন ??
কারন এই জিনিয়াস মানুষ গুলা জানতো, বিদেশি ছবি আমদানী মানেই পরবর্তিতে তিতাস একটি নদির নাম, হাঙ্গর নদী গ্রেনেড ইত্যাদি কালজয়ী ছবি বানানো বাধাগ্রস্থ হবে।
ভুলে গেলে চলবেনা এই এফডিসিতে হৃত্বিক ঘটকের মত পরিচালক রা ছবি পরিচালনা করতে চলে আসতেন ভারত থেকে।
আমাদের মিডিয়াকে দাড়াতে দেয়া হয়নি। যেই ইন্ডিয়ার বিরোধিতা করতে গিয়েছে তাকে মাশুল দিতে হয়েছে জীবন দিয়ে।পিছনের ইতিহাস জানতে হবে।
যুদ্ধ পরবর্তি সময়ে অনেক ছবি হয়েছে কমিউনিজম নিয়ে । কিন্ত এখনকার পরিচালক রা ভয় পায় রিস্ক নিতে। ভারতীয় ছবি দিয়ে টু পাইস কামানোই এখন মূখ্য উদ্দেশ্য। তবে এই অবস্থার পরিবর্তন ঘটবে অবশ্যই। এই পরিবর্তন টা আসবে আমার আপনার হাত দিয়ে।আমরা যদি শুরুটাও করে দিয়ে যেতে পারি, হয়তো বিশ বছর পর সফলতা আসবে। আসতেই হবে।
মানুষ এখন পুনেতে পড়তে যায় ফিল্ম মেকিং এর উপর। কিন্ত কথা ছিলোনা এমন। কথা ছিলো, ইন্ডিয়ার মানুষরা আসবে আমাদের দেশে পড়ার জন্য। জহীর রায়হান, আলাউদ্দিন আলী, এরা যদি বেচে থাকতেন তাহলে এই স্বপ্ন অবশ্যি সফল হতো। তারা মারা গিয়েছেন বলে হয়তো এটা পিছিয়ে যাবে, কিন্ত স্বপ্ন মরে যায়নি।
এই স্বপ্নে পানি ঢেলে দেয়ার ব্যাবস্থা পাকা হয়ে গেলো ভারতীয় ছবি আমদানীর মাধ্যমে।
বিলাই ভাই, আমি কোন ক্যাচালের জন্য এই মন্তব্য করিনি। মনের কিছু অভিমান শেয়ার করলাম জাস্ট। শাকিব খানের মুভি কেন বস্তাপচা এবং কিভাবে বস্তাপচা ছবি থেকে বের হয়ে সুস্থ ছবির পরিবেশ তৈরি করতে হবে সেটাই কিন্ত আমাদেরি বের করতে হবে তাই না ? কলকাতা এখন তাদের ছবির বাজেট দশকোটি টাকায় উন্নিত করেছে। বাংলাদেশে এর অর্ধেক টাকাতেই ওদের চেয়ে ভালো ছবি বানানো সম্ভব। এজন্য এগিয়ে আস্তে হবে পরিচালক থেকে শুরু করে সকল কলাকুশলীদের, সরকারের এবং সর্বপোরি আমাদের জনগনের।
এফডিসি আবার উঠে দাঁড়াবে। দাড়াতেই হবে, কারন অনেক রক্ত ঝরেছে এর পিছনে। এত রক্তক্ষয়ী ইতিহাস বৃথা যাতে পারেনা।
ওয়াসিমুল ভাই বলেছেন-
অতি উত্যম জবাব!!! এটা অনেকেই বুঝতে চায় না। সম্ভবত সারা দুনিয়ায় একমাত্র বাংলাদেশই আছে যারা নিজেরাই নিজেদের ভালোটা বুঝতে চায় না। নিজের ভালো তো পাগোলেও বুঝে! তাহলে আমরা কেন বুঝতে পারবো না...
ব্লগার সাইফুল আমিন ভাই বলেছেন-
আপনার বক্তব্যের সঙ্গে সহমত পোষণ করছি।
কিন্তু তবু, এতোটা পিছিয়ে আছি আমরা- খাঁটি বাংলা সিনেমা দেখলে যে কথাটি সবার আগে মনে হয়- এঁরা ভালো সিনেমা বানানোর চেষ্টাই করছে না। দুঃখ লাগে, সামান্য রাতের একটা দৃশ্য করতে গেলেও, এমন আলো ব্যবহার করে যে, দিনের মতোন সবকিছু পরিষ্কার দেখা যায়!
ভারতীয় সিনেমা এ দেশে আনলেই, বাংলাদেশের সিনেমা বেহাল হয়ে পড়বে- এটা কেনো যেনো মেনে নিতে পারছি না আমি।
পুরো ভারতে কয়টা সিনেমা ইন্ডাস্ট্রি আছে? বাংলা, তামিল, তেলেগু; কিংবা অন্যান্য কেউই তো বলছে না- হিন্দি সিনেমার জন্য তাঁদের সিনেমা চলেছে না।
বরং কলকাতার আজকালের সিনেমা দেখে চোখ কপালে তুলতে বাধ্য হই। এতো অসাধারণ এবং দ্রুত বেগে তাঁরা এগিয়ে যাচ্ছে যে- অবিশ্বাস্য ছাড়া আর কোনো শব্দ ব্যবহার করার সুযোগ নেই।
তাহলে আমরা কেনো পিছিয়ে?
রিকশাওয়ালাই এ দেশের দর্শক। এই বস্তাপচা বুলি গেয়ে, পরিচালকগুলো সেই বস্তাপচা সিনেমাই বানিয়ে চলেছে একের পর এক।
কেনো?
মনপুরা দেশের কয়টা সিনেমা হলে চলেছে? কিংবা সাম্প্রতিক প্রজাপতি? ঢাকার মাত্র দুটো সিনেমা হলে চালিয়েও, সিনেমাকে ব্যবসায় সফল করে নিয়েছেন পরিচালক।
তাহলে বলুন- রিকশাওয়ালারাই যদি বাংলাদেশের সিনেমা দর্শক হয়; তবে তাঁদের জন্য নির্মিত কোন সিনেমাটা বক্স অফিস মাত করেছে?
আমি বলবো- এ দেশের সিনেমা ইন্ডাস্ট্রি ধ্বংসের মূল কারণ, প্রতিযোগিতার অভাব। স্বাধীনতার পর থেকে বাংলা সিনেমা কখনো কারো সঙ্গে প্রতিযোগিতা করেনি বলেই- আজ এ দশা।
আমাদের পরিচালকরা ভেবেছে- ‘একটা কিছু করে শেষ করতো পারলেই তো মাল তৈরি। শালার দর্শক না দেখে যাবি কই? বমি করবি? তো! বমি শেষ করে এসে বসলে, আবারও তো সামনে সেই বাংলা সিনেমা!’
আমার ধারণা- সংস্কৃতির বাজারটা উন্মুক্ত হোক। প্রতিযোগিতা হলে, এ দেশের স্বপ্নবাজ নির্মাতারা নিশ্চয় পিছিয়ে যাবেন না। তাঁরা নিজেদের মতোন করে সিনেমা বানাবেনই। তখন প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার জন্য- পরিচালক-প্রযোজককে ভাবতে হবে, ‘এমন কি করা যায়, যাতে মানুষ অন্যেরটা নয়, আমারটাকেই গ্রহণ করবে।’
তবে হ্যাঁ- ভারত যে আমাদের গণমাধ্যমকে ওদের দেশে নিষিদ্ধ করে রেখেছে, এর নিন্দা আমিও জানাই।
কিন্তু এর প্রতিবাদে, আমরা যদি ওদের ভালো কিছু গ্রহণ না করি- তাতে ওদের কিছু যাবে-আসবে না। বরং সেই ভালোটা থেকে আমরাই নিজেদের বঞ্চিত করবো।
[sbআমি বলেছি -
সাইফুল ভাই, চমৎকার একটা মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। দারুন কিছু পয়েন্ট উল্লেখ করেছেন।
সবার আগে আন্তরিকতার সাথে ইয়ুথ কে এগিয়ে আস্তে হবে। আমি মনে করি তাদের দ্বারা ভালো কিছু করা সম্ভব। সেই চেতনাটা তাদের মাঝে ঢুকিয়ে দিতে হবে।
আমি ব্যাক্তিগত ভাবে বিকল্পধারার চলচিত্রে আপাতত সাপোর্ট দিবনা। কারন মেইন্সট্রিম বাদ দিয়ে আমি দেশের সাধারন অপামর জনগনের কাছে কিভাবে পৌছুবো? গ্রামের সহজ সরল মানুষগুলা কিন্ত এখনো রাজ্জাক শাবানার আবেগী দৃশ্য দেখলেই কেদে ফেলে।
নায়ক যখন ভিলেন কে মারতে যায় তখন তারাও ভিলেনের প্রতি ক্রোধ অনুভব করে। গানের তালে শিষ দেয় সবাই মলে। এখানেই কিন্ত সিনেমার স্বার্থকতা। এই মানুষগুলাই আমাদের ইন্ডাস্ট্রিকে টিকিয়ে রেখেছে এখনো। তাদের বাদ দিয়ে কিভাবে বাংলা সিনেমা তৈরি করি।
কাজেই সিনেমা হতে হবে গনমানুষের সিনেমা। একটা আর্টফিল্ম পঞ্চাশটা পুরস্কার পাওয়ার চেয়ে একটা ছবি যদি একটা মফস্বলের হলে ১ মাস বেশি চলে সেইটা বরং ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে বেশি অবদান রাখবে।
ঘরে বসে কফি খেতে খেতে আর্টফিল্ম দেখা যায়। তবে হল ভর্তি মানুষের আবেগ ধরতে হলে, ব্লক বাস্টার হিট চাইলে, সিনেমার বাজার ঠিক রাখতে হলে এবং সর্বপোরি দেশের ফিল্ম ইন্ডস্ট্রি টিকিয়ে রাখতে হলে মেইন্সট্রিম কমার্শিয়াল সিনেমার বিকল্প নাই।
তবে ভিন্ন ধারার ফিল্ম বাদ দিয়ে দেয়াআ যাবেনা। সেটা করতে হবে নিজেদের চলচ্চিত্রের ধাপ বিশ্ব দরবারে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য।
সিনেমা হতে হবে আর্ট এবং বিজনেসের সমন্বয়ে। বাংলা ছবির মার্কেট তৈরি করে আসতে হবে।
সেটাই করতে দেয়া হচ্ছেনা এখন ভারতীয় ছবি আমদানীর মধ্য দিয়ে।
তবে
ভারতীয় সিনেমা আমদানির পর যদি এদেশীয় পরিচালকদের মনে প্রতিযোগিতার মনোভাব তৈরি হয় তাহলে অবশ্য ভালো হয়।
ব্লগার নাফিজ মুনতাসির ভাই বলেছেন-
সবার কথাই ভেবে একটি উপযুক্ত সমাধানে যেতে হবে। চলচ্চিত্রের দর্শকখরার দু:সময়েও যেসব হল মালিকরা লোকসান দিয়ে মুভি দেখিয়ে গেছেন তাদের কথা যেমন ভাবতে হবে তেমনি আমাদের চলচ্চিত্র যাতে ধ্বংস না হয়ে যায় সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে।
ব্লগার সাইফুল আমিন ভাই বলেছেন-
আমি বিকল্পধারা বলে কিছু বিশ্বাস করি না। সিনেমা মানেই সিনেমা। এবার সেটা গল্পের প্রয়োজনে যেমন খুশি হোক।
কলকাতার “ইচ্ছে”, “চলো পাল্টাই”, “রঞ্জনা আমি আর আসবো না”- এগুলোতে প্রথাগত কেউ নেই। তাই বলে কি এ সিনেমাগুলোকে আপনি বিকল্পধারার বলবেন?
একই কারণে, মনপুরা কিংবা প্রজাপতি-তে, শাকিব খান বা অপু বিশ্বাস নেই বলে, এ দুটোকেও আমি বিকল্প শেণিতে ফেলতে রাজি নই। বিশেষ করে, প্রজাপতি-তে রাজ যে ক্যামেরার কাজ দেখিয়েছেন, তাঁর গল্প অনুযায়ী সে চেষ্টাকে আপনি সাধুবাধ জানাতেই পারেন।
ভাই-বেরাদার দলের হয়েও, ওদের গুরু ফারুকীকে রাজ ছাড়িয়ে গেছে। ফারুকীর “খাইতেছি-যাইতেছি” মার্কা সিনেমার ট্যাক থেকে রাজ বেরিয়ে আসতে পেরেছে- কারণ, সে তরুণ।
তাই, সবশেষ সেই একই কথা- তারুণ্য ছাড়া কিছুই সম্ভব নয়।
ভিন্নধারা, ভিন্ন চিন্তা- এটা নতুনদের দিয়েই হবে।
ভারতীয় সিনেমাকে আসতে দিন। বাংলাদেশের সিনেমা হল মালিকদের টিকে থাকেতে না দিলে, আপনারা সিনেমা বানিয়ে দেখাবেন কই?
সে ক্ষেত্রে তো, হয় স্টেডিয়াম ভাড়া করতে হবে; আর নয়তো, সিনেমা বানানোর পূর্ব শর্ত থাকবে- একটা সিনেমা হলও বানাতে হবে।
প্রতিযোগিতা চলতে থাকলে, একটা সময় ভালো কিছু বেরিয়ে আসবেই। আসতে বাধ্য।
ব্লগার নাফিজ মুনতাসির ভাই বলেছেন-
ঢালাওভাবে সিনেমা আমদানী না করে প্রতিমাসে ১টি করে মোট ১২টি মুভির অনুমতি দেয়া যেতে পারে....তাহলে কিছুটা প্রতিদন্ধিতার মাঝে পড়েও আমাদের সিনেমা কিছুটা উন্নতি করতে পারবে......কলকাতার দিকে তাকিয়ে দেখেছেন!!!!! বেশীদিন আগের কথা না....আমাদের থেকেও নিচুমানের মুভি বানাতো ওরা.....দেখেন আজ কোথায় চলে গেছে?????? স্যাটালাইট চ্যানেলগুলোর প্রতিযোগীতার মাঝে আমাদের বর্তমান নাটকগুলো কি অসাধারণ উন্নতি করেছে দেখেছেন??? বিশ্বমানের নাটক তৈরী হয় আজ আমাদের দেশে। বিদেশের অনেক চ্যানেলের মাঝে আমাদের নাটকগুলো পথ হারিয়ে ফেলেছিলো.......কিন্তু নিজেদের প্রস্তুত করে আজ নাটকগুলো কোথায় এসে দাড়িয়েছে দেখেছেন??? আমাদের নাটক দেখে উৎসাহী হয়ে কেউ আমাদের গুটিকয়েক মুভি ছাড়া বাকি মুভিগুলো দেখতে বসলে বিরাট ধোকা খাবে...............
ব্লগার কাঊসার রুশো ভাই বলেছেন-
chomotkar bolechen...
বিপ্লব ভাই বলেছেন-
ওরেব্বাস রে একেবারে ফাটা-ফাটি লেখা হইছে ভাই।
আমার মায়ের কাছে ১৯৮৩ সালের একটা =তারোকালোক= আছে সেখানে কলকাতার মুভির যে কে দুরবস্থা তা উল্লেখ করা হয়েছে। অথচ আজ ৩০ বছর পরে গুটি সম্পূর্নই উল্টে গেছে।
অবশ্য আমি একটা বিষয় দেখেছি যে, আমাদের ফিল্ম ই ইন্ডাস্ট্রি এর দুরবস্থা অতিরিক্ত মাত্রায় শুরূ হয়েছে ২০০০ এর পর থেকেই, জানিনা সবাই একমত হবেন কিনা।
- তার মানে কি মূর্খ সব পরিচালক আর প্রযোজকে ভরে গেছে FDC ?
Nafeez Moontasir Robin ভাই ভাল বলেছেন “প্রতিমাসে ১টি করে মোট ১২টি মুভির অনুমতি দেয়া যেতে পারে...."
আল-আমিন ভাই বলেছেন-
আমার মনে হয় আমাদের পরিচালকরা জানেনা যে এখনকার সমাজ কি ধরনের ছবি দেখতে চায়। তবে তরুন পরিচালকেরা অনেক চেষ্টা করে যাচ্ছে হয়ত। আমাদের চলচিত্র জগতে ভেতরের রাজনীতি তাকে আরও পঙ্গু করে দিচ্ছে বলে আমার বিশ্বাস। হয়ত তাই নতুন কিছু আসছে না বা আসলেও তাকে দাবিয়ে রাখা হচ্ছে। চলচিএর যুগের কথা বলে কিন্তু তা যদি সে না বলে তবে আমরা কেন ওই ছবিটি দেখব? আমার মতে এই গ্লোবালাইজেশনের যুগে কেই কারু থেকে কম না আর তাই সবার সাথে যুদ্ধ করেই আমাদের চলচিএকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।
বাজেটের কথা যদি বলতে হয় আমাদের দেশের মুভিতে বাজেট কম হয়ত তাই মুভি ভালো হয় না। আমি তা মানতে রাজী নই। ছবির একটি ভাল গল্প ভাল উপস্থাপনা ছবিকে অনেক উচ্চতায় স্থান দিতে পারে। দর্শকের কাছে পাবে গ্রহন যোগ্যতা। একজন সাধারন দর্শক হিসেবে আমি কোন একটি মুভির গল্প ও তার চিত্রনাট্য আর উপস্থাপনকেই বেশি গুরুত্ব দেই। যেমন "Search-খোজ" মুভিটি উপস্থাপনা ভাল হলেও তার গল্প ছিল বেশ নড়বড়ে। আর এই সব কিছু মিলিয়ে একটি ভাল মুভি একটি দেখার মত মুভি তৈরী হয়। উপস্থাপনা হল অভিনয় আর সম্পাদনার মিলিত রুপ। ভারতীয় ছবির অনুপ্রবেশ হল নিজের পায়ে নিজে কুড়াল মারার মত কিন্তু সত্যি কথা বলতে কি নিজেদের চলচিত্র উন্নতি না করলে শত চেষ্টা করলেও সারাদুনিয়ার মুভি দেখা বন্ধ করলেও কোন লাভ হবে না।
---------------------------------------------
এ বিষয়ে পড়তে পারেন অন্যান্য লেখা।
ব্লগার দারাশিকোর লেখা -কেন আমি ভারতীয় সিনেমা আমদানীর বিরোধিতা করি?
দ্রোহ ব্লগের একটি পোস্ট-ভারতীয় চলচ্চিত্র আমদানি বিতর্ক।
এখন সামুর অন্যান্য ব্লগারদের সুচিন্তিত মতামত চাই।