somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

স্পিরিচুয়ালিটি - পর্ব একঃ মন

২১ শে মার্চ, ২০১৭ রাত ১১:১৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



ইংরেজী ভাষায় 'mind' শব্দটির অর্থ আসলে একটাই, ‘মন’। কিন্তু স্পিরিচুয়ালিটিতে (স্পেশালী ইয়গিক টার্মিনলজিতে) মাইন্ড এর ১৬টি ডাইমেনশন আছে স্পেসিফিক্যালি যা মাইন্ডের ফাংশনগুলোকে ব্যাখ্যা করে। এই ১৬টি ডাইমেনশনকে বুঝার সুবিধার্তে ৪টি বড় ক্যাটাগরিতে ভাগ করা যেতে পারে।

প্রথম টি হচ্ছে, ‘বুদ্ধি’ বা 'Intellect'।

বর্তমানে আমাদের মডার্ন সোসাইটি বা শিক্ষা “ইন্টেলেক্ট’ ব্যাপারটাকে অনেক গুরুত্বপূর্ন একটি যায়গা দিয়ে রেখেছে। আমরা অনেক বেশি ইনভেস্ট করছি এই বুদ্ধিবৃত্তিক মনোচর্চার উপর। কিন্ত এইটা করতে গিয়ে আমরা ‘মাইন্ড’-এর অন্যান্য ডাইমেনশন কে ইগনোর করে যাচ্ছি। রিয়েলস্টিক এই ওয়ার্ল্ডে ইন্টেলেক্ট হচ্ছে স্কাপেল এর মত। যত শার্প হবে, তত ভালো ডাইসেক্ট করা যাবে। কিন্ত ইন্টেলেকচুয়াল ডাইসেকশন কিছু ব্যাপারে কার্যকরি হলেও, লাইফের সব এস্পেক্ট এ ইহা কার্যকরি নয়। জীবনবোধের ব্যাপারে ইহা কার্যকরি নয়। একটা ব্যাং কে ডাইসেক্ট করে তার এনাটমি সম্পর্কে আইডিয়া নেয়া যেতে পারে, তবে ফ্রেন্ডশীপ বা বন্ধুক্ত বুঝতে হলে বন্ধুকে সাইন্টিফিক ডাইসেক্ট করে কাজ হবে না। মডার্ন সাইন্স ইভল্ভ করেছে ইন্টেলেক্ট এর মাধ্যমেই। কারন সাইন্সকে অনেক ক্ষেত্রেই আমরা আসলে টেকনোলজিক্যাল বেনিফিট দিয়ে বিচার করি। আই ফোন ইউজ করছে বলেই প্রজন্ম আজ বিজ্ঞানের পুজারী বা বিজ্ঞানমনষ্ক, ব্যাপারটা অনেকটাই এমন। যাই হোক, সে অন্য আলোচনা।
মাইন্ড এর দ্বিতীয় ডাইমেনশন হচ্ছে ‘আঙ্কারা’ বা 'Identity'।

ইন্টেলেক্ট কে আইডেন্টিটির দাস বলা যেতে পারে- অন্তত জেনেরিক প্র্যাক্টিসে তাই হচ্ছে। একজন মানুষ যখন একটা পরিচয় ধারন করে, তা সে পুরোপুরি না বুঝলেও ইমোশনালি সে অনেক ইনভল্ভ থাকে তার আইডেন্টিটির সাথে। একটু উদাহরণ দিলে ব্যাপারটা ক্লিয়ার হবে। ধরুন, জাতীয়তাবোধ। সব মানুষই তো কোন না কোন জাতির মানুষ। যেই মূহুর্তে আপনি ভাবা শুরু করবেন, আপনি এই নেশনে বিলং করেন, তখনি সেই নেশনের এমব্লেম, পতাকা বা জাতীয় সঙ্গিত আপনার মধ্যে একটা জেনুইন ইমোশন তৈরি করবে। এবং এই ইমোশন কিন্ত একেবারেই মিথ্যা না। না হলে এত মানুষ নিজের জীবন দিতে পারতো না দেশ বা ভাষার জন্য। একই উদাহরণ ধর্মীয় আইডেন্টিটির ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। এখন কথা হচ্ছে, এই আইডেন্টিটিকে কিন্ত যে কোন সময়ে সুইচ করা যায়। আপনি অন্য কোন একটা দেশের গ্রীন কার্ড পেলেন, সাথে সাথে আপনি সেই দেশ বা জাতির আইডেন্টিটিকে ধারন করা শুরু করলেন। হয়তো ভিউজ বা নর্মের সাথে খাপ খাওয়াতে একটু সময় লাগতে পারে, তবে সেটাই হবে আপনার নতুন আইডেন্টিটি। দেশে থাকতে খোলামেলা পোষাক আপনাকে বিব্রত করলেও, ইউএস বা ইউরোপে যাওয়ার পর আপনি তাতে অভ্যস্ত হয়ে পড়বেন। ঠান্ডা থেকে বাচতে হলেও আপনি এলকোহল কে সাধারন পানি হিসেবেই ট্রিট করা শুরু করবেন। আপনি ধীরে ধীরে অভ্যস্ত হয়ে যাবেন আপনার নতুন জিওগ্রাফিক বা কালচারাল আইডেন্টিটিতে। অর্থাৎ, যেই মূহুর্তে আপনি নতুন কোন আইডেন্টিটি ধারন করবেন, আপনার ইন্টেলেক্ট আপনার আইডেন্টিটিকে প্রোটেক্ট করার চেষ্টা করবে প্রাণপনে। এতদিন আপনি যেই ব্যাপারগুলোকে ট্যাবুর চোখে দেখতেন, সেটাই হয়ে উঠবে আপনার নতুন প্র্যাক্টিস।

মাইন্ড এর তৃতীয় ডাইমেনশন হচ্ছে ‘মানস’-যা আসলে শরীরের স্পেসিফিক কোন জিনিস না।

মানস হচ্ছে আপনার এন্টায়ার বডি। এটাকে আপনি ‘সাইলো অফ হিউজ মেমরি’ও বলতে পারেন। ক্ষেত্রবিশেষে এটা আপনার ব্রেইনের চেয়েও অনেক বেশি পাওয়ারফুল। আপনার ব্রেইনে যে পরিমান স্মৃতি জমা আছে, আপনার বডিতে আছে তারচেয়েও অনেক অনেক বেশী। আপনার ব্রেইন বলতে পারবে না আপনার চার বা পাচ জেনারেশন আগে দাদার দাদা কেমন ছিলো। কিন্ত আপনার বডি কিন্ত ঠিকই তার বৈশিষ্টকে ধারন করে রেখেছে। অবশ্যই এইটা বিয়ন্ড দ্যা ক্যাপাবিলিটিস অফ ইওর ব্রেইন। কাজেই ‘মানস’ হচ্ছে সেই ফেনমেনাল বডি। বডির প্রতিটা সেল, ডিএনএ, আরএনএ বা অর্গানিজম হচ্ছে এর অংশ, যা বিশাল একটা মেমরি ব্যাঙ্ক। সৃষ্টির শুরু থেকে সকল ইভোলিউশন এর ধারক বা বাহক হচ্ছে ‘মানস’ ( মাণিকের ‘প্রাগোইতিহাসিক’ গল্পটির কথা মনে পড়ে গেলো)। যাই হোক, আসল কথা হচ্ছে, মেমরি ব্যাতিত আপনার ইন্টেলেক্ট বা বুদ্ধিবৃত্তি কখনই পরিপূর্ণ হতে পারে না, অনেক টা ফুয়েলবিহীন গাড়ির মত। বিকজ অফ দ্যা মেমরি, ইওর ইন্টেলেক্ট ইজ অন। মেমরি আপনার আইডেন্টিটির হাত ধরেই প্রবাহিত হয়। মেমরি আপনার আইডেন্টিটির কালার ধারন করে এবং সেই অনুযায়ি ফাংশনড হয়। ইন্টারেস্টিং না ?
মাইন্ডের চতুর্থ ডাইমেনশন হচ্ছে- ‘চিত্ত’ বা 'Intelligence'।

চিত্ত হচ্ছে আনসালিড বাই মেমরি। ধরুন কোন মেমরি দ্বারা আপনি প্রভাবিত না, পিওর ইন্টেলিজেন্স। পিওর ইন্টেলিজেন্স বলতে বুঝাচ্ছি, মাইন্ডের এমন একটা স্টেট, যেইটা ব্রেইনও পারসিভ করতে পারে না। যখনি আপনি আপনার সমস্ত আইডেন্টিটি বা সোসাইটির শিক্ষা বা আপনার অভিজ্ঞতা ভুলে গিয়ে কোন কিছু দেখতে পারবেন, উইদাউট এনি প্রি-পারসেপশন, দ্যাট ইজ ইন্টেলিজেন্স বা চিত্ত। মানুষ কোন না কোন সময়ে আনইনটেনশনালি এই ইন্টেলিজেন্স কে টাচ করে ফেলে, এবং ম্যাজিল্যাল কোন ঘটনা ঘটে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, কেমন করে চিত্তকে কনশাসলি আপনি টাচ করতে পারবেন, সেখানে স্টে করতে পারবেন। সেটা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনায় পরে কখনো করব। সাধারন বিজ্ঞানের থিওরিতে সমস্ত কিছু ব্রেইন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হলেও, স্পিরিচুয়ালি মাইন্ড এর গুরুত্ব অনেক। এবং এতক্ষনের আলোচনাতে বুঝা গেলো যে, মাইন্ড এবং ব্রেইন আসলে একই জিনিস না। মাইন্ড হচ্ছে একটা এন্টায়ার সিস্টেম।
কি মনে হচ্ছে আপনাদের ? ব্যাপারটা কি আন্ডার্স্ট্যান্ডেবল ?

আচ্ছা, একটু অন্যভাবে চিন্তা করি আসেন। আন্ডার্স্ট্যান্ডেবল মানে কি ? কখন একটা ব্যাপার আন্ডার্স্ট্যান্ডেবল হয় ? তখনই কোন ব্যাপারকে আপনি বুঝবেন, যখন আপনি তাকে লজিক বা যুক্তির প্যারামিটারে ফেলে বিচার করেন, তাই না ? আমরা আমদের জীবনের সকল ডাইমেনশনকেই আসলে যুক্তির প্যারামিটারে ফেলে বিচার করি। এটাই সাইন্টিফিক ওয়ে। ইশ্বরের অস্তিত্ব নিয়ে আমাদের নানান থিওরি আছে। এই থিওরিগুলো এ কারনেই এসেছে কারণ আমরা সৃষ্টিতত্ব বা সৃষ্টিকর্তা, কোনটার ব্যাপারেই সম্পুর্ন জানিনা। এবং আমরা স্বীকারও করতে চাইনা, যে আমরা জানিনা। যেহেতু আমরা হিউম্যান বিং, তাই আমরা ধরে নিয়েছি আমাদের চেয়েও বড় কোন হিউম্যান বিং ইজ সিটিং অন দ্যা স্কাই এন্ড ক্রিয়েটিং, কন্ট্রোলিং অল দ্যা ইউনিভার্স। কেমন করে সম্ভব ? নিশ্চই তার হাত দশটা, কিংবা তার একটা শব্দ উচ্চারনেই কাজ হয়ে যায়, বা সে অবতার রুপে পৃথিবীতে এসে সরেজমিনে সব দেখে যায়, ইত্যাদি ইত্যাদি এক্সপ্লেনেশন তোইরিই হয়েছে আমাদের না জানার এবং এই ল্যাক অফ নলেজের ডিনায়েল এর কারনে। একটা বাচ্চাকে বুঝানোর জন্য হয়তো ঠিক ই আছে, বাট এসেনশিয়ালি সৃষ্টি রহস্য বুঝতে হলে আমাদের সাইন্স এবং ফিলসফি দুইটা পয়েন্টেই দেখতে হবে। সো, স্পিরিচুয়ালিটি যা বলে, তা হচ্ছে, সৃষ্টির যে কোন একটা সোর্স নাও। ডাজেন্ট ম্যাটার, আমি কি বললাম, ডাজেন্ট ম্যাটার হলি বুক কি বললো, জাস্ট পে এটেনশন। একটা ফুল নাও, ফুলের পাপড়ি দেখো, এর কালার দেখো, কম্পোজিশন দেখো, এর লাইফ স্প্যান, শুরু থেকে শেষ দেখো। সেখানেই খুঁজে পাওয়া যাবে ফেনোমেনাল ইন্টেলিজন্স, পিওর ইন্টেলিজেন্স। আমরা কি আসলে এভাবে ভাবি ? যে ইন্টেলিজেন্স ই হচ্ছে গড ? যা কিছু জানার আছে, তা আসলে পুরো ইউনিভার্স বা পিওর সাইন্সে খুঁজে লাভ নাই আদার দেন দ্যা টেকনজিক্যাল বেনিফিটস। খুজতে হবে যে কোন একটা সোর্স অফ ক্রিয়েশনে, নেচারে।

যাই হোক, আজ এই পর্যন্তই থাকুক। অন্য কোন দিন অন্য কোন ব্যাপার নিয়ে আলোচনা করা যাবে। টিল দেন- বি স্পিরিচুয়াল, বি হ্যাপি
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে মার্চ, ২০১৭ রাত ১১:১৫
৫টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেঘ ভাসে - বৃষ্টি নামে

লিখেছেন লাইলী আরজুমান খানম লায়লা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩১

সেই ছোট বেলার কথা। চৈত্রের দাবানলে আমাদের বিরাট পুকুর প্রায় শুকিয়ে যায় যায় অবস্থা। আশেপাশের জমিজমা শুকিয়ে ফেটে চৌচির। গরমে আমাদের শীতল কুয়া হঠাৎই অশীতল হয়ে উঠলো। আম, জাম, কাঁঠাল,... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×