সামহোয়্যার ইন ব্লগে নানা নিকের, নানা আদর্শের, নানা মানসিকতার ব্লগাররাই আসেন, লিখেন, মন্তব্য করেন। যদিও তাদের এই লিখা, মন্তব্য, বিবাদের পিছনে কোন স্বার্থ থাকে না, থাকে না কোন লালসা বা প্রাপ্তির চিন্তা। ব্লগিং নিতান্তই শখের বসে, ভালবাসা থেকে যার হয় শুরু, আর শেষ যার নেশায়। আর এইসব সামু ব্লগারদের জীবনচক্র নিয়েই আজকের লিখাটি। ভার্চুয়াল জগতে এক লিংক থেকে আরেক লিংকে যেতে যেতে(অনেকটা বান্দরের মত এক ডাল থেকে আরেক ডালে লম্ফ দিতে দিতে) বা গুগল সার্চের কল্যাণে অনেকে ঢুকে পড়ে সামুতে, তারপর একের পর এক পোষ্ট, পোষ্ট আর পোষ্টের মজার মজার সব কমেন্ট পড়তে পড়তে প্রেমে পড়ে যায় ব্লগের। মাথায় নেশা ওঠে ব্লগিং এর। আর এই সামু প্রেম বা ভালবাসা থেকেই একজন ভিজিটর রেজিষ্ট্রেশন করে ব্লগার হিসেবে। এর মাধ্যমেই শুরু হয় একজন ব্লগারের জীবনচক্র।
জীবনচক্রের প্রথম দশাঃ watch
মডুর আশ্বাস বাণী অনুসারে এই দশার স্থায়ীত্বকাল ৭ (সাত) দিন হলেও তা কখনও পালন হয় কিনা তা জানা যায় নি। এই দশায় একজন ব্লগার নিজের পোষ্ট লিখা আর নিজের পোষ্টে কমেন্ট করা ছাড়া আর কিছু করতে পারেন না। এই দশা থেকে মুক্তি পেতে একজন ব্লগারকে একের পর এক লেখা পোষ্ট করতে হয়। যে লেখার পাঠক মডু, লেখক এবং ঈশ্বর। অবশেষে ঈশ্বরের কৃপায় মডুর দয়া হলে watch দশার সমাপ্তি ঘটে পরবর্তী দশা general এ উন্নীত হয়।
জীবনচক্রের দ্বিতীয় দশাঃ general
এই দশায় একজন ব্লগার অন্যের ব্লগে কমেন্ট করার অধিকার অর্জন করেন। তার লিখা ক্রমানুসারে পোষ্ট পাতায় প্রকাশিত হয়, কিন্তু সংকলিত পাতায় প্রকাশের ক্ষেত্রে মডুর কৃপার দরকার পড়ে। জীবন চক্রের এই দশায় একজন ব্লগার অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে পরবর্তী দশা safe এ উন্নীত হবার জন্য।
জীবনচক্রের তৃতীয় বা পরিণত দশাঃ safe
একজন ব্লগারের পূর্ণাঙ্গতা প্রাপ্তি ঘটে এই দশার মাধ্যমে। এ দশায় উন্নীত হবার পর যে যার মেধা, আদর্শ, চিন্তা চেতনার প্রতিফলন ঘটাতে থাকে তাদের পোষ্টের মাধ্যমে। অনেকে ব্লগীয় নিয়ম কানুন ভুলতে বসে জড়িয়ে পড়ে ছাগু-ভাদা, আস্তিক-নাস্তিক ইত্যাদি ইত্যাদি নানা বিতর্কে। আক্রমণ- পালটা আক্রমণে ব্লগ হয় রণক্ষেত্র। আবার অনেকে প্রাপ্ত বয়স্ক(১৮+) পোষ্টের খেলায় মাতে। রাত্রিতে মডারেশনের অনুপস্থিতিতে ব্লগকে অস্থিতিশীল করার খেলায় মত্ত হয় অনেক ব্লগার। আর এসব বিশৃঙ্খল ব্লগাররা উপনীত হয় পরবর্তী দশায়, যার নাম ব্যান।
জীবনচক্রের শেষ দশাঃ ব্যান
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে মডুরা জেনারেল, ওয়াচ এসব শাস্তির পর একজন ব্লগারকে চুড়ান্ত শাস্তি ব্লগীয় মৃত্যুদন্ড " ব্যান " প্রদান করে। আর এর মাধ্যমেই একজন ব্লগারের ব্লগিং এর ইতি ঘটে।
ব্যাতিক্রম দশাঃ পূণর্জাগরণ দশা
ব্যানড ব্লগার ব্লগিং এ মাত্রারিক্ত নেশাগ্রস্ত হলে পূণঃ নতুন নিক রেজিষ্ট্রেশনের মাধ্যমে তার পূণর্জাগরণ ঘটে। কিন্তু এক্ষেত্রে তার স্বভাব চরিত্র অপরিবর্তিত থাকে।
উৎসর্গঃ সব সেইফ ব্লগারদের (কারণ আমি জেনারেল চাঁদ আমার পকেটে)