মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে আমি অনেক লোকের মুখে শেখ সাহেবের ৭ই মার্চের পুরো বক্তৃতা মুখস্হ শুনেছি; অনেকে উনার মত করে, সেই বক্তৃতা দিয়ে মানুষকে যুদ্ধের মাঝে উজ্জীবিত করতেন। এখন বোধ হয়, সেই উৎসাহ আর কেহ দেখাবেন না; যারা মুখস্হ করেছিলেন, তারা হয়তো ভুলেননি; কিন্তু উৎসাহিত হয়ে হয়তো আর শোনাবেন না।
শেখ সাহেব অলিখিত বক্তৃতা দিতেন; তিনি বক্তৃতায় খুবই দক্ষ ছিলেন; কোন পয়েন্ট বাদ যেতো না; সবই ভালো। কিন্তু ৭ই মার্চে উনি যেই পরিস্হিতিতে যাঁদের জন্য বক্তৃতা দিয়েছিলেন, ১৯৭২ সালের ১০ই জানুয়ারী পাকিস্তান থেকে ফেরত আসার পর, সেই একই লোকদের উদ্দেশ্যে সেই রকম কথা আর তিনি বলেননি; এমন কি পরবর্তিতে তিনি ৭ই মার্চের উপস্হিত লোকদের ঐতিহাসিক ভুমিকা নিয়ে কোন কথা কোথায়ও উল্লেখ করেননি। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর, তাঁহার রাজনীতিতে ৭ই মার্চের পরস্হিতির কোন প্রভাব দেখা যায়নি।
১৯৭২, ১৯৭৩ ও ১৯৭৪ সালে মানুষ খুবই উৎসাহের সাহে উনার সেই ঐতিহাসিক বক্তৃতা বাজাতেন; মানুষের সেই উৎসাহের ব্যাপার নিয়ে তিনি কথা বলেছিলেন কিনা আমার জানা নেই।
৭ই মার্চে উপস্হিত ছিলেন খুবই সাধারণ মানুষ; যাদের ব্যবসা বাণিজ্য ছিল, যারা ভালো সরকারী চাকুরী করতেন, সেই ধরণের লোকজন উপস্হিত ছিলো না। শেখ সাহেব যখন ক্ষমতায়, তখন ব্যবসায়ী, সরকারী চাকুরীর লোকেরাই শেখ সাহেবের ঘনিস্ট হয়ে যায়; সাধারণ মানুষের জন্য উনি কোন নির্ধারিত সময় রাখেননি; এমন কি উনি মানুষের সামনে বক্তৃতাও কমায়ে দেন।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই মার্চ, ২০১৫ রাত ৩:৪২