আওয়ামী লীগের সভাপতি দেশের প্রধানমন্ত্রী, সেক্রেটারী মন্ত্রী, সেন্ট্রাল কমিটির প্রায় সবাই মন্ত্রী, একজন প্রেসিডেন্ট; ওয়ার্কিং কমিটির অনেকেই মন্ত্রী; ফলে, কোনটা সরকার, কোনটা আওয়ামী লীগ বুঝা বেশ কস্টকর; মীর্জা ফখরুল যদি আওয়ামী লীগের সেক্রেটারীর সাথে বসতে চায়, উনাকে সরকারের মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফের সাথে বসতে হবে; এটা বিশুদ্ধ রাজনীতি হতে পারে না।পার্টি ও সরকারের মাঝখানে একটা লাইন তো থাকাতে হবে, সরকার তো সবাইকে নাগরিক হিসেবে সমান চোখে দেখার কথা; পার্টির তো সেই দায়িত্ব নেই!
আওয়ামী লীগের জন্ম হয়েছিল বাংগালী জাতীয়তাবাদকে ধারণ করার লক্ষ্যে; বৃটিশ কলোনী থেকে মুক্ত হওয়ার সময়, বাংলাকে ভারত থেকে আলাদা করার জন্য বাংলার মানুষকে মুসলিম লীগ করতে হয়েছিল; পাকিস্তান হওয়ার পর, শুরুটা সঠিক ছিল না; মানুষর আশা ছিল বিরাট, কিন্তু মুসলিম লীগ মানুষকে কোন রোডম্যাপ দেখাতে পারেনি; এবং মুসলিম লীগ অনেকটা পশ্চিম পাকিস্তানীদের পার্টি হিসেবে নিজকে প্রতিস্ঠিত করে।
বৃটিশ থেকে মুক্ত হওয়ার সময় আরেকটা ঐতিহাসিক ঘটনা ঘটেছিল, বৃটিশ দখল করেছিল রাজতান্ত্রিক ভারত, রেখে গেছে গণতান্ত্রিক ভারত ও পাকিস্তান; পাকিস্তানের মুসলিম লীগের নেতারা কোনভাবেই গণতান্ত্রিক পদ্ধতি রপ্ত করার মতো দক্ষ ছিলেন না।
মুসলিম লীগ নতুন দেশে রাজার দলে পরিণত হয়েগিয়েছিল; মওলানা ভাসানী ও উনার সাথীরা মিলে নতুন দল গঠন করেন, প্রথম বাংগালী জাতীয়তাবাদী দল। দলটি দ্রুত জনপ্রিয়তা লাভ করে; আবার দলটিকে সাহায্য করছিলেন শেরে বাংলা ফজলুল হক; আওয়ামী লীগ শেরে বাংলার দল ও আরো ২/১টি ছোট দলের সাথে কোয়ালিশন করে ১৯৫৪ সালে পুর্ব পাকিস্তান এসেম্বলীতে ও ১৯৫৬ সালে পাকিস্তানের সেন্ট্রালে জয়ী হয়।
পাকিস্তান মিলটারী প্রধান আইয়ুব খান ১৯৫৮ সালে দেশের ক্ষমতা দখল করে, আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে ভাটার সৃস্টি করে; যাক, ১৯৬৬ সালে দলের সভাপতি শেখ মুজিবর রহমান পুর্ব পাকিস্তানে আরো বেশী স্বায়ত্ত-শাসনের অধিকারের জন্য ৬ দফা নামে এক এজেন্ডা নিয়ে মাঠে নামেন। আইয়ুব খান ৬ দফাকে দমন করতে গিয়ে শেখ মুজিবর রহমানকে রাস্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে বিচার করেন; বিচারে ফাঁসী রায় আসছিলো; ঠিক সেই মহুর্তে মওলানা ভাসানী শেখ সাহেবকে মুক্ত করার জন্য রাস্তায় নামেন; শেখ সাহেব মুক্ত হন, এবং বাংলার সবচেয়ে শক্তিশালী নেতায় পরিণত হন তিনি।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে জুন, ২০১৬ ভোর ৬:১৬