somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিডিআর বাহিনীতে অফিসার ও সৈনিকদের মাঝে সম্পর্ক

২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৫৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



পাকিস্তান আমল থেকে, সীমান্ত পাহাদার বাহিনীর অফিসার ও সৈনিকদের মাঝে ভালো সম্পর্ক ছিলো না; পাকিস্তান আমলে, বাহিনীর নাম ছিল ইপিআর(ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস)। সৈনিকদের নিজস্ব অফিসার ছিলো না, পাকিস্তান মিলিটারী থেকে অফিসারেরা ডেপুটেশানে আসতো; কমান্ডিং'এ অন্য বাহিনী থেকে আসার ফলে, সৈনিক ও অফিসারদের মাঝে বিরাট একটা দুরত্ব আপনা থেকেই থাকতো; আবার ইপিআর বাহিনী মুল মিলিটারী বাহিনীর অংশ না হওয়ায়, অফিসারেরা হয়তো মানসিকভাবে ইপিআর'দের নীচু মানের বাহিনী হিসেবে গণ্য করতো। এই সমস্যা ব্যতিত আরো অনেক সমস্যা বিদ্যমান ছিলো।

একটা বাড়তি সমস্যা ছিলো, আইয়ুব খান ১৯৫৮ সালে পাকিস্তানের ক্ষমতা দখলে পর, পাকিস্তান মিলিটারীর অফিসারেরা মোটামুটি আচারে, ব্যবহারে ও স্বভাবে রাজ কুমারদের মতো ছিল; এটি শুধু ইপিআর'এর জন্য সমস্যা ছিলো না, পুরো জাতির জন্য সমস্যা ছিলো।

১৯৭১ সালে, মুক্তিযুদ্ধে ইপিআর বিশাল ভুমিকা রাখেন, খুবই বিশাল ভুমিকা; যুদ্ধের ৯ মাসে অফিসারেরা ও ইপিআর সৈনিকেরা প্রথমবার যুদ্ধের কমরেডে পরিণত হন। যুদ্ধশেষে, তাজুদ্দিন সাহেব ও শেখ সাহেব বিরাট ভুল করেন; বিজয়ী বাহিনীর মিলিটারী অংশকে দেশের মিলিটারী বানান, ইপিআর বাহীির সদস্যরা আবার বর্ডারে ফেরত যায়; এখানেই শেখ সাহেব ও তাজুদ্দিন সাহেব নিজেদের পতনের বীজ বপন করেন। ৯ মাসের যুদ্ধ-ক্লান্ত জাতীয় বীরদের এই ক্ষুদ্র দায়িত্ব দেয়া ছিল ভয়ংকর নির্বুদ্ধিতার কাজ; এই বিজয়ী বাহিনীর বিশাল মনোভাবকে জাতি গঠণে ব্যবহার করার দরকার ছিলো; কমপক্ষে, বিজয়ী এই ভলনটিয়ার বাহিনীকে অবসরে যেতে দেয়ার দরকার ছিলো।

বাংলাদেশ সরকার, একশত ভাগ পাকিস্তানী আমলের মতো করে স্বাধীন দেশে আবারো বর্ডার বাহিনী চালু করেন; শুধু নাম বদলায়ে রাখা হলো বিডিয়ার; ফিরে এলো সেই পুরনো অফিসার-সৈনিক সমস্যা।

২০০০ সাল নাগাদ, মুক্তিযো্দ্ধা অফিসার ও মুক্তিযোদ্ধা ইপিআর সম্ভবত: বাহিনীতে থাকার কথা নয়; ২০০৯ সালে, বিডিআর বাহিনী ঠিক পাকিস্তানী ইপিআর বাহিনীর মতো; অফিসার ও সৈনিকদের মাঝে সমস্যা টাইম বোমার মতো বিস্ফোরণের জন্য অপেক্ষা করছিল; এই সমস্যা সমাধান করার দায়িত্ব কা'দের ছিলো, অফিসারদের, নাকি সৈনিকদের?

২০০৯ সালে, আমাদের মিলিটারীর কথা ভেবে দেখেন, তারা ২ বছর দেশ চালায়েছেন; সেই ২ বছরে দেশে যে বিশাল পরিবর্তন এসেছিল, তা বাংলাদেশের ইতিহাসে এক বিশাল অধ্যায়; এই অধ্যায়ের মাঝে বিডিআর'এর অফিসার-সৈনিক সমস্যা আরো বেড়েছে; অফিসারেরা সমস্যার ওজন বুঝতে সক্ষম হননি; কমপক্ষে, এই ভয়ানক সমস্যা থেকে উদ্ভুত কোন পরিস্হিতিকে মোকাবেলা করার জন্য কোন পদক্ষেপ নেননি, এটা ভয়ংকর ধরণের সামরিক ভুল।

মিলিটারী ট্রেনিং'এর সবচেয়ে বড় ট্রেনিং হলো 'বেঁচে থাকার' ট্রেনিং; একজন সৈনিককে বুঝতে হয়, এই প্রফেশানে এলে, মৃত্যু তার প্রতিদিনের সাথী; দেশ রক্ষা করতে মারতেও হতে পারে, মরতেও হতে পারে।

আজকের বিজেপি'র মাঝে আবারো সেই খারাপ সম্পর্ক ফিরে আসার কথা, এবং উহা আছে!
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ১১:১২
৩৪টি মন্তব্য ৩০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×