তিস্তা চুক্তি না হওয়া মানে বাংলাদেশের জন্য মোটামুটি একটা অর্থনৈতিক পরাজয়, একটা প্রাদেশিক চীফ মিনিস্টার বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে খালি হাতে ফেরত দিয়েছেন; সাথে সাথে ১৭ কোটী মানুষকে তাদের ন্যায্য পাওনা থেকে বন্চিত করেছেন। শেখ হাসিনা কতটুকু হতাশ হয়েছেন, সেটা বুঝা যায়নি; কারণ, খালি হাতে ফেরার পর, ব্যাপারটি নিয়ে তিনি মানুষের সাথে নিজের রিএ্যাকশন শেয়ার করেননি। তবে, হোঁচট খেয়েছেন, বুঝা গেছে, সেদিন হিন্দিতে নাকি কিসব ফানি কথা বলেছেন!
যাক, তিস্তা উনার ও বাংগালী জাতির ইমেজ সম্পর্কে একটা বড় ধারনা দিয়েছে; এটা উনার কাছে পরিস্কার হওয়ার দরকার আছে। মমতা থেকে মোদী সবাই জানে, বাংগালীরা ৪৬ বছরে কতটুকু করেছে: সৌদীতে তারা কি করে, মালয়েশিয়ায় তারা কি করে, বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়ে কি হয়, সীমান্তে বাংগালীরা কি ব্যবসা করে, পড়ালেখার কি অবস্হা, দেশ কারা চালায়, ব্যুরোক্রেটরা কি করে, পার্লামেন্টে কি হয়; সবকিছু ওদের কাছে পরিস্কার; ওরা সবকিছু মিলিয়ে ওদের মনের ভেতর আমাদের সম্পর্কে একটা প্রোফাইল রেখেছে; এবং সেই প্রোফাইলটার উপর নির্ভর করে ওরা ব্যবস্হা নিচ্ছে।
জাতির ইমেজ বদলানোর সময় হয়েছে; যেভাবে চলছি, এতে ইমেজ আরো খারাপ হবে; 'প্রশ্ন ফাঁস' জেনারেশন যখন দেশের স্নায়ুতে ঢুকবে, এটা সুদান, সোমালিয়া হয়ে যাবে, এরা জাতি মাতি এসব ধারণা বুঝবেও না, ওরা নিজের জন্য বাঁচার চেস্টা করবে।
শেখ হাসিনা যেভাবে সরকার চালচ্ছেন, এটার পেছনে কিছু ঐতিহাসিক কারণও আছে, এটা শুধু রাজনৈতিক নয়, এখানে ব্যক্তিগত ব্যাপারও আছে। তবে, এখন সময় হয়েছে, জাতিকে নিয়ে নতুন করে ভাবার; জাতির সবাইকে সুযোগ দিতে হবে, সবাই যেন বেড়ে উঠতে পারে; এক হাজার সালমান রহমান, ১০০ বসুন্ধরা, ৫০ টি আলম ব্রাদার্স, ২টি খুলনা পাওয়ার, ২০ হাজার লতিফুর রহমান বাংলাদেশের ইমেজ গড়তে পারবে না; ইমেজ গড়তে দরকার কোটী কোটী সুস্হ, সুখী, স্বচ্ছল পরিবার।
সকালবেলা কাজে যেতে বাসে উঠার জন্য যুদ্ধ করলে, ঈদে বাড়ী যেতে ট্রেনের ছাদে উঠলে, প্রশ্ন ফাঁস হলে, ছাত্ররা যদি বিশ্ব বিদ্যালয়ের ভর্তি ও হল ব্যবসা করে, সোদীতে যদি রাস্তায় ঝাড়ু দেয়, কলিকাতায় যদি বিয়ের বাজার করতে যায়, সীমান্ত হয়ে যদি গরু কিনতে যায়, কেহ সন্মান করবে না, কেহ গণ্য করবে না; তিস্তা সেটাই বলছে!
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই এপ্রিল, ২০১৭ রাত ৮:২৯