রোহিংগারা পুরোপুরি অশিক্ষিত, এখন তাঁদের দেশ নেই, জীবন নেই, এখন তাঁদের একমাত্র চেস্টা প্রানে বেঁচে থাকা; আমাদের জাতির দুই তৃতীয়াংশের উচ্চ শিক্ষা নেই, দেশ আছে, চেস্টা করছে দারিদ্রতা থেকে কোনভাবে বেঁচে থাকার জন্য। ইহুদীরা বেশ কয়েকবার রোহিংগাদের মতো, বা বাংগালীদের মতো অবস্হায় পড়েছিল; কিন্ত প্রতিবারেই তারা সংকট কাটিয়ে উঠতে সমর্থ হয়েছে, এবং প্রতিবারেই অন্যদের চেয়ে ভালো করেছে; তাদের সিক্রেট হলো শিক্ষা। বর্তমান পৃথিবীতে শিক্ষাহীন মানুষ সভ্যতার ক্রীতদাস মাত্র।
১৯৭৯ সালে, যখন বার্মার সামরিক সরকার রোহিংগাদের জাতীয় মৌলিকাধিকারগুলো কেড়ে নেয়, রোহিংগারা সেই ভয়ানক অবস্হাকে সঠিভাবে অনুধাবন করতে পারেনি; তাদের সামান্য শিক্ষিত অংশ তাদের ভবিষ্যতকে অনুমান করতে পারেনি; সেদিন যদি তাদের মক্তবগুলোতে প্রয়োজনীয় শিক্ষা চালু করতে পারতো নিজেরা, মানুষকে দরকারী বিষয়সমূহে দক্ষ করে তুলতে পারতো, আজকে তাদের অবস্হা এত বেশী খারাপ হতো না।
বৃটিশ উপনিবেশ শক্তি শেষের দিকে মানুষকে সীমিতভাবে শিক্ষার সুযোগ দিয়েছে, যাদের আর্থিক সামর্থ আছে, শুধু তারাই পড়বে; তারা কিছু পরিমাণ স্কুল, কলেজ, ইউনিভার্সিটি করেছিল; তাতে তাদের ব্যবসায়িক স্বার্থও যুক্ত ছিল। পাকিস্তানী আমলে, সরকারগুলো বৃটিশকে অনুসরণ করে, তারা নতুনভাবে শিক্ষা নিয়ে তেমন ভাবেনি।
পাকিস্তান আমলে দেশ চলেছে মোটামুটি বৃটিশের উপনিবেশের মতোই, শুধু উপনিবেশের কর্মকর্তারা বদলেছিল; বাংলার মানুষ রক্ত দিয়ে সেই উপনিবেশ থেকে বেরিয়ে এসেছিল; আজকের শিক্ষা ব্যবস্হা দেখেন, পুরোপুরি ব্যবসায় পরিণত করেছে; বৃটিশও শিক্ষা ব্যবস্হাকে এত বেশী ব্যবসা হিসেবে নেয়নি, যেইভাবে বাংগালীরা নিয়েছে।
বাংলাদেশের শুরুতে ১৯৭২ সালে, জাতির যেই পরিমান রিসোর্স ছিলো তার সামান্য অংশ ব্যবহার করে ৫ বছরের উপরের সব শিশুকে স্কুলে পাঠানো সম্ভব ছিলো, ও প্রতিটি অশিক্ষিত তরুণ ও যুবাদের কোন একটা বিষয়ে ট্রেনিং দিয়ে দক্ষ করে তোলা সম্ভব ছিলো। ১৯৭২ সালে, জাতির বিরাট অংশকে শিক্ষার অধীনে আনা হয়নি; সেদিন যারা শিক্ষার সুযোগ পেয়েছিল, তারাই আজকে জাতির শিক্ষাকে ব্যবসা কেন্দ্র বানিয়ে ছেড়েছে!
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৫:৪১