somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাংগালীদের কাছে বিশ্বের সবচেয়ে ঘৃণিত ব্যক্তি, বার্মার আং সান সুচি

১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৪৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



বর্তমানে বার্মার সরকারে আং সান সুচির (জন্ম ১৯শে জন, ১৯৪৫) রাস্ট্রীয় পদ হচ্ছে, "ফার্স্ট কাউনসেলার অফ মায়ানমার"; মনে হয়, সরকারে বেশ বড় ধরণের পোস্ট; তা'ছাড়া তিনি বিরোধীদল প্রধান, এবং নিজ রাজনৈতিক দল, ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসীর সভাপতি।
সুচির বাবা, আং সান বৃটিশ মিলিটারীতে বড় পদে ছিলেন, এবং ১৯৪৭ সালে বার্মার স্বাধীনতা অর্জনে নেতৃত্ব দেন; এবং সেই বছর মিলিটারীর ষড়যন্ত্রে নিহত হন। সুচির মা, খিনচি ১৯৬০ সালে ভারত ও নেপালের রাস্ট্রদুত নিযুক্ত হন; সুচি ১৯৬৪ সালে দিল্লীতে পলিটিক্যাল সায়েন্সে ব্যাচেলর ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৬৭ সালে সুচি অক্সফোর্ড থেকে পলিটিক্যাল সায়েন্স, ইকোনোমি ও ফিলোসফিতে ব্যাচেলর ডিগ্রি পান। পরের বছর তিনি পলিটিক্যাল সায়েন্সে মাস্টার্স ডিগ্রি নেন অক্সফোর্ড থেকে। এরপর, তিনি নিউইয়র্ক আসেন ও ৩ বছর জাতিসংঘে ইকোনোমিস্ট হিসেবে চাকুরী করেন। ১৯৭২ সালে তিনি বৃটিশ নাগরিক মাইকেল এরিসকে বিয়ে করেন; বিয়ের পর লন্ডন চলে যান।
১৯৭৭ সালের মাঝে সুচির ২ ছেলের জন্ম হয়; ১৯৮৫-১৯৮৭ সালগুলোতে তিনি লন্ডনে পড়াশোনা করেন, এমফিল ডিগ্রি নেন। এরপর তিনি ভারতের সিমলা ইউনিভার্সিটিতে ফেলো হিসেবে যোগদান করেন, একই সাথে বার্মা সরকারের হয়ে ডিপ্লমেটিক ধরণের কাজকর্ম করেন।
১৯৮৮ সালে সুচি বার্মায় ফিরে আসেন ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনে যোগদান করেন; ১৯৬২ সাল থেকে মিলিটারী বার্মার ক্ষমতা দখল করে রেখেছিল।১৯৮৯ সালের জুলাই মাসে মিলিটারী সরকার সুচি'কে গৃবন্দী করে। গৃহবন্দী অবস্হায় ১৯৯১ সালে শান্তির জন্য নোবেল পুরস্কার পান।
১৯৯৫ সাল অবধি সুচির স্বামী বার্মা এসেছিল, এরপর তাকে আর বার্মার ভিসা দেয়া হয়নি; ১৯৯৭ সালে, এরিসের প্রষ্টেট ক্যানসার ধরা পড়ে, ১৯৯৯ সালে এরিসের মৃত্যু হয়; ছেলেরা লন্ডনে। সুচির স্বামীকে দেখার জন্য মিলিটারী তাকে লন্ডন যাবার সুযোগ দেয়, কিন্তু সুচি যায়নি ভয়ে, তিনি ভয় পেয়েছিলেন যে, তাকে আর ফিরে আসতে দেবে না মিলিটারী; তিনি ১৯৮৯ সাল থেকে ২০১০ সাল সময়ের মাঝে ১৫ বছর গৃহবন্দী ছিলেন।

১৯৯০ সালে সুচির গৃবন্দী অবস্হায় বার্মায় ভোট হয়, উনাকে ভোট দাঁড়াতে দেয়া হয়নি; দল শতকরা ৬০ ভাগ পদ পেয়ে জয়ী হয়; কিন্ত মিলিটারী ভোটকে নাকচ করে দেয়। দেশে বিদেশে এ নিয়ে তুমুল আন্দোলন হয়; বাংলাদেশে সুচির পক্ষে বড় বড় মিছিল হয়, বার্মার এমবেসী ঘেরাও হয়।

আন্তর্জাতিক ও জনতার চাপে ২০১০ সালের নভেম্বরে সুচিকে গৃহবন্দী থেকে মুক্তি দেয় মিলিটারী। ২০১২ সালে, পার্লামেন্টের এক শুন্যপদে ভোট করে সুচি জিতে যান। ২০১২ সালে রোহিংগা হত্যা ও তাদের অধিকারে সুচির অবস্হান জানতে চাইলে সুচি রোহিংগাদের পক্ষে কথা বলেনি।

২০১৫ সালের প্রেসিডেন্ট ভোটে দাঁড়াতে চান সুচি, কিন্তু বিদেশী বিয়ে করাতে ও সন্তানদের বিদেশী নাগরিকত্ব থাকায় তিনি বাদ পড়েন। ২০১৫ সালে সুচির দল বার্মার ২ পরিষদেই জয়ী হয়; কিন্তু তাকে একই কারণে প্রেসিডেন্ট হতে দেয়নি, মিলিটারীদের থেকে প্রেসিডেন্ট হয়, সুচির জন্য নতুন পদের সৃস্টি করা হয়, "ফার্স্ট কাউনসেলার অফ মায়ানমার"; তিনি এখন সেই পদে আছেন। ২০১৫ সালে, সুচির বিজয়ের পর, রোহিংগারা আশা করেছিল যে, তাদের নাগরিক অধিকার তারা পাবেন; তা ঘটেনি।

সর্বশেষ এডিট : ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ১:১৯
৬৩টি মন্তব্য ৬২টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

×