খুব ভোরে, সকাল ৫টার দিকে যদি আপনি শুনতেন যে, দেশের মিলিটারী শেখ সাহেবকে স্বপরিবারে মেরে ফেলেছে, এবং আপনি যদি তাজুদ্দিন সাহেব হতেন, আপনি কি করতেন? আপনি কি করতেন, সেটা আপনি জানেন; আমার ধরণা, আমাদের আসল তাজুদ্দিন সাহেবের দরকার ছিল, সাথে সাথে পালিয়ে যাওয়া। যারা শেখ সাহেবকে হত্যা করেছে, তাদের লিষ্টে আরও নাম থাকার কথা; শেখ সাহেবের পরের নামটা নিশ্চয় তাজুদ্দিন সাহেবের ছিলো।
যুদ্ধের মাঝে তাজুদ্দিন সাহবে সম্পর্কে আমরা জানতাম যে, উনি আমাদের সরকারের প্রাইম মিনিষ্টার, তিনি দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন অফিসে বসে; ভলনটিয়ার সৈন্যদের নিয়ে গঠিত সেনাবাহিনীর যুদ্ধ পরিচালনা করছেন, বিশ্বের সাথে যোগাযোগ করছেন, আমাদের মুল সাপোর্টার ভারত ও রাশিয়ার সাথে কাজ করছেন বিশ্বের সাপোর্ট পেতে।
প্রবাসে ৯ মাসের সরকার তিনি কিভাবে চালিয়েছেন, আমরা অনুমানে জেনেছি, উনাকে কখনো দেখিনি আমরা; আমরা ত্রিপুরার কাছেই ছিলাম, আমরা ব্যস্ত ছিলাম, তিনিও ব্যস্ত ছিলেন; এরপরও যদি উনি সময় করে এসে আমাদের দেখে যেতেন, উনার অনেক অভিজ্ঞা হতো, মুক্তিযোদ্ধারা উনাকে নিজের মানুষ হিসেবে পেতেন, জানতেন, পরিচয় হতো। যুদ্ধের পরেও, ১ লাখের এই ভলনটিয়ার বাহিনীর সাথে উনি দেখা করেননি কোনদিন; দেখা সাক্ষাতের আগেই সবাইকে ঘরে ফিরায়ে দিয়েছেন; ৯ মাসের যুদ্ধের পর, সৈনিকদের বাড়ী পাঠানোর আগে, একবার কি ধন্যবাদও বলার দরকার ছিলো না? মানুষ চলে গেছেন নিজের বাড়ীতে, উনাকে ভুলে গেছেন মানুষ!
যাঁদের বেতন দিতে হতো না, যাঁদের থাকা খাওয়া নিয়ে উনাকে ১দিনও ভাবতে হয়নি, তাঁদেরকে দেশের কাজ না দিয়ে বাড়ী কেন তিনি পাঠালেন? এটা ছিলো ভয়ংকর ভুল; ওঁরা যদি সরকারের সাথে থাকতো সেদিন, কেহ শেখ সাহেব কিংবা তাজুদ্দিন সাহবের কোন ক্ষতি করতে পারতো না।
উনাকে গ্রেফতার করার পর, কেহ উনাকে উদ্ধার করার চেস্টা করেননি; যেই ১ লক্ষ মানুষ উনার সরকারের ভলনটিয়ার সৈন্য ছিলো, যদি তাদের সাথে উনার সম্পর্ক থাকতো, উনাকে কি কেহ আটকিয়ে রাখতে পারতো? আমার মনে হয় না, উনাকে আটকিয়ে রাখার মতো বাংগালী এই বাংলায় থাকার কথা নয়।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা নভেম্বর, ২০১৭ রাত ১০:০৫