ব্লাসফেমী ইংরেজী শব্দ, বাংলায় ধর্ম অবমাননা; মুসলিম দেশগুলোর মাঝে ধর্ম অবমাননা নিয়ে বেশী সমস্যায় আছে আফগানিস্তান, পাকিস্তান ও বাংলাদেশ; আজকের এই মহুর্তে ধর্ম অবমাননার জন্য অবরোধ চলছে পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদে, পুরো নগরী ও সেক্রেটারিয়েটগুলো আক্রমণের হুমকির সন্মুখে; পাকিস্তানের ইসলামিক দল তাহরিক-ই-লাবাইক এই অবরোধ চালিয়ে যাচ্ছে; ব্লাসফেমী করেছে দেশের পুরো সংসদ: সাংসদদের শপথনামার ভেতরে রাসুল (স: )এর দোয়া চাওয়া হয়নি, শুধু নাম উল্লেখ করা হয়েছে; মিলিটারী প্রস্তুতি নিচ্ছে, অবরোধকারীরা যদি সরকারী ভবন আক্রমণ করে, মিলিটারী বল প্রয়োগ করবে; অবস্হা বুঝতেছেন নিশ্চয়।
বাংলাদেশের সর্বশেষ ঘটনা রংপুরে, ১ টি হিন্দু গ্রাম মাটিতে মিশিয়ে দিয়েছে; এক, বা একাধিক জন শহীদ হয়েছে, ধরপাকড় অব্যাহত আছে; টিটু গরীব মানুষ, গার্মেন্টস'এ চাকুরী করতো, এখন তাকেও গ্রেফতার করা হয়েছে; এই ঘটনায়ও রাসুল(স: )'কে অপমাণিত করা হয়েছে।
গতমাসে কাবুলে, গাড়ী থেকে নামার সময় কলেজ শিক্ষিকার কাপড় সরে গিয়ে পায়ের নীচের অংশ দেখা যায়, পাশে দাঁড়ানো ছাত্র শিক্ষিকার গায়ে একমুঠো বালি ছুঁড়ে মারে; গাড়ীর ড্রাইবার ছাত্রকে আক্রমণ করে; ছাত্র রাসুল(স: )'এর নামে শপথ করে যে, ড্রাইবারকে হত্যা করবে; ড্রাইবার ছেলে ও রাসুল(স: )'কে একত্রে গালী দেয়; এতে আশেপাশের ছাত্ররা ড্রাইবারকে পিটিয়ে পংগু করে ফলেছে।
এগুলো এই ৩ দেশের জন্য সমস্যা; আসলে, এই তিন দেশে কোন সমস্যা নেই? লেবানন, মিশর, জর্ডানে প্রচুর খৃষ্টান এখনো বাস করছে; গির্জায় যাচ্ছে, এবং নিয়মিতভাবে বলছে যে, যীশুর পরে আর কোন নবীই নেই; ওখানে ব্লাসফেমী নেই কেন? ওখানে গ্রাম পোড়ানো হচ্ছে না, রাজধানী অবরোধ হচ্ছে না, কাউকে মেরে ফেল হচ্ছে না, পংগু করা হচ্ছে না!
জর্ডান, মিশর, লেবাননে ব্লাসফেমীর জন্য কাউকে প্রান দিতে হচ্ছে না; কারণ, সেখানে মানুষ নিজের ধর্মটা পালন করেন, অন্যেরটা নিয়ে মাথা ঘমান না; তাদের অর্থনীতি বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে ভালো, পড়ালেখার মান উন্নত, মানুষের সংস্কৃতি ভালো।
এসব ঘটনাকে ব্লাসফেমী হিসেবে নিলে, বাংলার মৌলানা, মৌলভীরা হিন্দু ধর্ম নিয়ে যা বলে থাকেন, বেশীর ভাগই ব্লাসফেমী; নাকি ব্লাসফেমী শুধু ইসলাম ধর্মে আছে?
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই নভেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৫:২০