আওয়ামী লীগ সেক্রেটারী ওবায়দুল কাদের ও বিএনপি সেক্রেটারী মির্জা ফখরুলের মাঝে সৈয়দপুর না মৈয়দপুরের এয়ারপোর্টে দেখা হয়েছে; তারা পরস্পরের সাথে সালাম বিনিয়ময় করেছেন, ২/৪ বাক্যে কেমন আছেন টাছেন, ইত্যাদি বলেছেন; সেটা এখন দেশের মিডিয়া ও মানুষের জন্য বিরাট খবর; মনে হচ্ছে, যেন এই ২ জনের সামান্য হ্যালো ম্যালো বাংলাদেশকে স্বর্গে পরিণত করবে, বিএনপি ও আওয়ামী লীগের ভয়ংকর সম্পর্ককে ভালোবাসায় পরিণত করবে; আসলে, এগুলো কিছুই না, মানুষ চরম হতাশার মাঝে থাকায়, সামান্য লতাপাতাকেও বৃক্ষ ভেবে নিজকে নিজে শান্ত্বনা দিচ্ছে!
এরা ২ জন জাতিকে কোনভাবে রাজনৈতিক অস্হিরতা থেকে মুক্ত করতে পারবেন না; কারণ, এদের ২ জনের মাঝে ১ জনও রাজনীতিবিদ নন; মনে আছে, ওবায়দুল কাদের সাহেব কোন এক সিভিল ইন্জিনিয়ারকে রাস্তায় সবার সামনে থাপ্পড় মেরেছিলেন? উনি রাজনীতিবিদ হলে, এই ধরণের কাজ কখনো করতেন না; উনি থাপ্পড় মারাতে উনার পদোন্নতি হয়েছে, আওয়ামী লীগের সেক্রেটারী হয়েছেন! মির্জা ফখরুল কখনো রাজনৈতিক একটা বাক্য বলেননি এই জীবনে, উনি বলেছেন আওয়ামী লীগ কি অন্যায় করছে, আর বেগম জিয়া ক্ষমতায় এলে কি করবেন; এগুলো রাজনীতি নয়; রাজনীতি হলো দেশের নাগরিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠার ও জাতির জীবনযাত্রার মানোন্নয়নের জন্য রাজনৈতিক ভাবনা ও রাজনৈতিক পদক্ষেপ নেয়া। ফখরুল সাহেব এত দুর্বল যে, বেগম জিয়া উনাকে সেক্রেটারীর পদে ৫ বছর অস্হায়ী করে রেখেছিলেন।
ওবায়দুল কাদের সাহেব, এয়ারপোর্টে হ্যালো ম্যালো বলার সময় বলেছেন যে, যেহেতু উনারা ২ জনেই রাজনীতি করেন, তাদের মাঝে আলাপ হওয়ার দরকার আছে, এবং হবে।
বিএনপি-আওয়ামী লীগের আলোচনার কথা উঠে, আলোচনা হয় না কেন? আসলে, এই ২ দলের মাঝে আলোচনার 'কোন বিষয় কোনদিন ছিল না, আজও নেই'; দল ২টি'র একেবারে উপরের লেভেলে সম্পর্ক শত্রতার লেভেলে বিদ্যমান, যেখানে আলোচনা কোন সমাধান নয়, পরাজিত করাই একমাত্র উদ্দেশ্য। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি শুধুমাত্র নির্বাচনের আগে আলোচনা করতে চায়, যেটার উদ্দেশ্য হলো, কে কাকে কৌশলে পরাজিত করে, নির্বাচনে জয়ী হতে পারবে। বিপক্ষ দলকে পরাজিত করার ফন্দিই যদি আলোচনার মুল কারণ হয়ে থাকে, এই ২ দলের মাঝে কোন গাধা আছে কিনা, যিনি এই ধরণের আলোচনায় বসবেন, কিংবা আলোচনা চালিয়ে যাবেন?
নির্বাচনের আগে, আওয়ামী-বিএনপি'র আলোচনার কথা প্রথমে আসে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের দেশ সমুহ থেকে; ওরা মনে করেছে যে, এই ২ দল বসে যদি আলোচনা করে, একটি সুস্হ নির্বাচন সম্ভব; কিন্তু তারা জানে না, এরা বসতে চাইবে সমাধানের জন্য নয়, অন্যকে কৌশলে পরাজিত করার জন্য। এরপরে, আলোচনার কথা আসে বাংলাদেশের তথাকথিত "বুদ্ধিজীবিদের" থেকে; আসলে, বাংলাদেশে বুদ্ধিজীবি নেই; যারা এটা সেটা করে কাউয়া থেকে ময়ুর সাজেন, তারা নিজেদের বিজ্ঞতার প্রচার ও নিজেদের দেশ-প্রেমিক সাজাতে এসব কথা বলে থাকেন; তারা জানেন যে, আওয়ামী-বিএনপি বৈঠক হবে না। এরপরে আলোচনার কথা আসে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি হতে, এখানে তারা দেখাতে চায় যে, তারা রাজনীতিবিদ, তারা সমঝোতায় বিশ্বাস করে, শুধু অন্য পক্ষের ষড়যন্ত্রের জন্য বসা সম্ভব হচ্ছে না, ২ দলই এখানে বিজয়ী।
জাতি "আলোচনা" নামক রাজনৈতিক রম্য থেকে বন্চিত হচ্ছেন দীর্ঘদিন; বিএনপি'র রিজভী সাহেব ও আওয়ামী লীগের ড: হাছানের মাঝে প্রথমিক একটা আলোচনা হলে জাতি কিছুদিন রাজনীতিকে মনেপ্রাণে অনুভব করতে পারতেন!
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে নভেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৩০