আবহমান বাংলায়, বাংগালী কিশোর কিশোরী, তরুণ তরুণী হৃদয়ে ভালোবাসা অনুভব করলে, বুক ফুলায়ে কারো সামনে এসে বলেনি, "আমি ভালোবাসি, আমি ভালো বাসি"; জীবনের এই বিশাল অনুভুতিকে গভীর সমুদ্রের ঝিনুকের মত নিজের বুকের মাঝে, মুক্তোর মত যতনে লুকিয়ে লালন করেছে, ধারণ করেছে; দিনে দিনে সেই মুক্তা স্বাাস্হ্যবান ও রূপময় হয়ে উঠেছে; এক সময় সেই মুক্তার আলোক উদ্ভাসিত হয়ে হয়তো অন্যদের চোখে লেগেছে!
বাংগালী তরুণরা ভালোবাসার নারীকে তাতার তরুণের মত জোর করে ঘোড়ায় তুলে নিয়ে এসে বিয়ে করেনি কোনদিন, কিংবা কামাখ্যার নারীর মতো ভালোবাসার পাত্রকে ঘরের কোণে আটকায়ে রাখনি; বাংগালীর নিজস্ব সমাজে, নিজস্ব পরিবেশে ভালোবেসেছে; তাতে রোমান্টিকতার অভাব হয়নি কোনদিন, তাতে ফুল ফুটেছে, স্বাস্হ্যবান ফল হয়েছে।
আজকে জাতির অনেক কিশোর কিশোরী, তরুণ তরুণীরা আমাদের নিজস্ব স্বকীয়তা নিয়ে কেমন যেন সন্তষ্ট নয়, তারা হলিউডের মুভির রংগীন কাহিনীর নায়কদের মতো, কিংবা বলিউডের বানর-নর্তক, নর্তকীদের মতো হরমোন-বাণে আক্রান্ত হয়ে, কিংবা ঋতুমত্ত হস্তিনীর মতো উন্মত্ত হয়ে, মগজ হারিয়ে কামুক-কামিনী হয়ে, সামাজের সামনে নিজকে হেয় করে, ভালোবাসা ভালোবাসা করে মানুষজনকে, পরিবারের লোকদের ভীতসন্ত্রস্ত করে তুলছে।
ঝিনুকে আজকাল কৃত্রিম মুক্তো হচ্ছে, হরমোণে অকালে মুরগী ডিম দিচ্ছে, এগুলো অস্বাস্হ্যকর; অকাল বর্ষায় চাষী চাষ করে না, অথিতি পাখী বাসা বাঁধে না; ফুল, উপহার মানুষকে সামান্য সময়ের জন্য কৃতজ্ঞ করে, এগুলো ভালোবাসা মুল উাদান নয়।
বাংলার সমাজ, সংস্কৃতি, বাংলার প্রকৃতি এখনো তার নিজস্ব আমেজে, নিজস্ব পরিবেশে মানুষের মনের ভালোবাসার অনুভুতিকে লালন করছে, ধারণ করছে; অকারণে বিদেশী হরমোণের কৃত্রিম দুর্বল রীতিনীতিকে এই সুসম সমাজে টেনে আনলে উহা অস্বাস্হ্যকর মুক্তোর জন্ম দেবে; সেই মুক্তো মালায় স্হান পাবে না; একটা অস্বাস্হ্যকর অনুভুতির জন্ম দেবে মাত্র।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ৮:৪১