somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নববর্ষের প্যারেড নিয়ে ১৭ কোটী বাংগালীর ৩৪ কোটী মতামত

১৪ ই এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৫:২০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



সকল ব্লগারকে নববর্ষের শুভেচ্ছা; সবাই ভালো থাকুন, সুষ্হ থাকুন!

ষাটের দশকে, আমরা পাকিস্তানের স্বাধীনতা দিবসে প্যারেড (শোভাযাত্রা) করতাম: ঢাকা ট্রাংক রোড ধরে, লাইন করে, আমাদের স্কুল থেকে ১ মাইল উত্তরে যেতাম, আবার ফিরে আসতাম; আমরা শ্লোগান দিতাম: পাকিস্তান জিন্দাবাদ, ১৪ই আগষ্ট জিন্দাবাদ, কায়েদে আজম জিন্দাবাদ, আইয়ুব খান জিন্দাবাদ। রোডের ২ পাশে, মাঠে কর্মরত কৃষকেরা কাজ থামিয়ে আমাদের দেখতেন; স্কুলে ফেরত আসার পর, আমরা মিষ্টি খেতাম; বিল দিতো সরকার। কৃষকদের কোন প্যারেড ছিলো না, তাঁরা সেইদিন কাজ করতেন, তাঁদের জন্য সরকার কোন মিষ্টি দিতো না। আমি জানি না, এখন বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবসে স্কুলগুলোতে কি সেই রকম প্যারেড হয়, সরকার কি দরিদ্রদের মিষ্টিমুখ করে?

পহেলা বৈশাখে, আমাদের বাড়ী থেকে আড়াই মাইল দুরে, হিন্দু গ্রামের মাঠে মেলা বসতো, আমরা যেতাম; আমার কাছে বড় আকর্ষণ ছিলো বলিখেলা (কুস্তিখেলা)। মেলাটি চৈত্র সংক্রান্তির মেলার মত বড়মেলা ছিল, একটি ধনী হিন্দু পরিবার সেটার আয়োজন করতো, তারা ব্যবসায়ী ছিলো। সেখানে প্যারেড হতো বিভিন্ন গ্রামের বলিদের (কুস্তিগীরদের) নিয়ে: যেসব গ্রামের লোকেরা বলি খেলবে, তারা মেলার বাহিরে নিজেদের বলিদের নিয়ে জড়ো হতো, খেলা শুরু হওয়ার আগে, ঢোল সানাই বাজিয়ে প্রতি দলকে খেলার স্হানে আনা হতো, এটা ছিল সেই সময়ের প্যারেড; গ্রামের দরিদ্র মানুষেরা তাঁদের সবচেয়ে ভালো লুংগি, ধুতি, শার্ট, পান্জাবী পরে মেলায় আসতেন; তারপর খেলা শুরু হতো, প্রতি বছর খেলায় ২/৩ বার মারামারি হতো খেলার রেজাল্ট নিয়ে; এটা বলি খেলার আনন্দের অংশ।

মেলার মাঠের পুর্ব পাশের গ্রাম ছিল বিখ্যাত পীর বংশের গ্রাম; মেলার দিন, সেই গ্রামের লোকেরা তাদের গ্রামে ও মেলার মাঠের দক্ষিণ পাশে পাহারা বসাতো, যাতে মুসলমানেরা মেলায় যেতে না পারে। তাই পুর্বের ও দক্ষিণ দিকের মুসলমানেরা অনেক রাস্তা ঘুরে মেলায় যেতেন পশ্চিম ও উত্তর পাশ হয়ে।

ঢাকায় বৈশাখী প্যারেডে পেঁচার ছবি নিয়ে বিশাল প্যাচাল চলছে! কিন্তু বিস্ময়ের বিষয় হলো, ছোটকাল থেকে আমার পছন্দ পাখীদের মাঝে পেঁচাই সবার উপরে। আমাদের একটা পতিত বাড়ীকে আমরা খামার বাড়ী হিসেবে ব্যবহার করতাম; বাড়ীটি ছিল খুবই নির্জন এলাকায়; ফলে, সেখানে শিয়াল,সাপ ও অনেক পাখী থাকতো। সন্ধ্যার সময় অনেকগুলো পেঁচা বেরিয়ে আসতো শিকার ধরার জন্য; এরা আমাকে মোটেই ভয় পেতো না; গাছের নীচের ডাল বসে থাকতো শিকারের আশায়; আমি নীচ দিয়ে যাওয়া আসা করতাম; আমার সুন্দর লাগতো, মনে হতো সাহসী পাখী। আমার অসংখ্য পোষ্টে পেঁচার ছবি আছে, ঢাকার লোকেরা কি আমার থেকেই পেঁচাকে ভালোবাসলো!

বৈশাখের প্যারেড নিয়ে, প্যারেডের নাম নিয়ে, প্যারেডের ক্যারেক্টার নিয়ে দেখলাম প্যাচাল চলছে বছরের পর বছর। এই নিয়ে ১৭ কোটী বাংগালীর ৩৪ কোটী মতামত আছে, মনে হয়! ছোটখাট প্রতিট বিষয় নিয়ে বাংগালীদের অকারণ বিভক্তি খুবই কষ্টকর!
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই এপ্রিল, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:০৪
৪৭টি মন্তব্য ৪৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হালহকিকত

লিখেছেন স্প্যানকড, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:১২

ছবি নেট ।

মগজে বাস করে অস্পষ্ট কিছু শব্দ
কুয়াসায় ঢাকা ভোর
মাফলারে চায়ের সদ্য লেগে থাকা লালচে দাগ
দু:খ একদম কাছের
অনেকটা রক্তের সম্পর্কের আত্মীয় ।

প্রেম... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×