শুরুতে, মানব সভ্যতার সামাজিক মুলশক্তি ছিলো সোস্যালিষ্ট স্বভাবের; মানুষ গোত্রে বসবাস করতো; টিকে থাকার জন্য গোত্রকে ঐক্য বজায় রাখতে হতো, অসম বন্টনে ঐক্য থাকে না, সুসম বন্টন ঐক্য ধরে রাখতে সক্ষম। একজন সচেতন রিকসা ড্রাইভার, গার্মেন্টস'এর মেয়ে, একজন বাস ড্রাইবার, কিংবা জমির মালিক বসুন্ধরার মালিককে পছন্দ করবে না, কিন্তু সালমান রহমানের সাথে বসুন্ধরার মালিকের সম্পর্ক সব সময় ভালো; ইহা অসম বন্টনের ফলাফল।
১ বছর বয়সের ২টি বাচ্ছাকে একত্রে খেলতে দেন, দেখবেন প্রথমে সমস্যা হলেও, ২ জন এক সময় নিজেদের থেকে খেলবে, ২ জন খুশী থাকবে। এরপর, তাদেরকে ২টি ছোট খেলনা দেন; দেখবেন, খেলনাগুলো নিয়ে ২ জনের মাঝে সমস্যা হতে পারে, কোন একজন কিছু সময়ের জন্য হলেও ২টি খেলনার দখল নিবে, সেটা নিয়ে কান্নাকাটিও হতে পারে; একটু পরে ২ জন আবারো খেলবে, খুশী হবে; এটা সুসম বন্টনের উদাহরণ।
রাজতন্ত্রে সম্পদের মালিক ছিলো রাজা; রাজা মানে শক্তি: সেনা বাহিনী, রাজকীয় ডিক্টেটরশীপের আইন, ধর্মীয় আইন; রাজতন্ত্র ছিল অসম বন্টনের ভয়ংকর উৎস। রাজতন্ত্রের সবচেয়ে খারাপ দিক ছিলো, নাগরিক অধিকার ছিলো না; নাগরিক অধিকার না থাকা মানে মানবতার অনুপস্হিতি; মানবতা না থাকলে, সেখানে সুস্হ জীবনের নিশ্চয়তা ছিলো না। রাজতন্ত্রে সম্পদ ও ধন ছিল রাজার; আবার উহার স্হায়িত্ব ছিল শক্তির সামানুপাতিক।
আসল ক্যাপিটেলিজমের জন্ম হয়েছে ফরাসী বিপ্লবের পর; ফরাসী বিপ্লবে যাঁরা ছিলেন সবচেয়ে প্রগ্রেসিভ, উনারা "বাম" হিসেবে পরিচয় লাভ করেন; পরবর্তী সময়ে তাঁরা আজকের ক্যাপিটেলিজমের জন্ম দেন। একই ব্যাপার সম্প্রতি সোভিতেত ইউনিয়নের পতনে, ও চীনের জাতীয়তাবাদী ক্যাপিটেলিজমে দেখা যাচ্ছে, "বাম" থেকে ক্যাপিটেলিষ্ট'এ রূপান্তর।
এখন পশ্চিমে যারা অঢেল সম্পদের পেছেন দৌড়াচ্ছেন, তাঁরা মৃত্যুর আগে তাঁদের বেশীর ভাগ সম্পদ বিভিন্ন প্রকার জনহিতকর ফাউন্ডেশনকে দিয়ে যাচ্ছেন। আমেরিকার নিউজার্সি রাজ্যের একজন ইহুদী মহিলা, খুব সামান্য পরিমাণ ডলারকে ক্যাপিটেলিজমের নিয়ম অনুসরণ করে প্রায় ৭ মিলয়ন ডলার পরিণত করেন; এটা করতে তাঁকে জীবনে বেশ কঠোর হতে হয়েছিল; তিনি সেই সম্পদে কখনো হাত দেননি; মৃত্যুর আগে তিনি উহা সিটি ইউনিভার্সিটিকে দান করেন।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে মে, ২০১৮ রাত ১১:১৭