রিকসা ড্রাইবার থেকে শুরু করে মিলিটারী ড্রাইবার অবধি "দেবশিশুদের" প্রতি সন্মান দেখায়ে, সুন্দরভাবে গাড়ী চালায়েছেন, সাথে ড্রাইভিং'এর কাগজপত্র বহন করেছেন; কাগজপত্র না থাকলে, স্যরি বলেছেন; কিন্তু এসব লোকেরাই পুলিশের কথা কানে নেয়নি কোনদিন, পুলিশের পেছনে পুলিশকে গালি দিয়ে আসছে আজীবন; সরকার এত দেখেশুনে যাদের চাকুরী দেয়, কেহ তাদের সন্মান করে না; তাদের গালি দেয়, সরকারকে গালি দেয়; পুলিশ ও সরকারের লোকদের দক্ষতা এসব দেবশিশুদের চেয়ে অনেক কম!
অভিনেতা ইলিয়াস কান্চন ও ২/৩ টি এনজিও বছরের পর বছর কাজ করেও "নিরাপদ সড়ক" শব্দটা সব বাংগালীর কর্ণকুহর অবধি পৌঁছাতে সক্ষম হয়নি; ইলিয়াস কান্চনের স্ত্রী প্রাণ হারানোর সময় থেকে, সড়কে, এই বছরের মৃত্যুর হার হয়তো কমপক্ষে ৫/১০ গুণ বেশী হবে। ইলিয়াস কান্চন বছরের পর বছর, বাংলাদেশের সেলিব্রিটিদের সমর্থন পেয়েও কিছুই করতে পারেননি; আমাদের "দেবশিশুরা" ৮ দিনে সরকারকে কাঁপিয়ে, ৯ দফা দাবী পুরণ করায়ে নিয়ে, বাংগালী জাতির ইতিহাসে প্রতিবাদের এক ইতিহাস সৃষ্টি করে গেছে।
সবকিছু ভালো; অনেকই স্বীকার করছেন যে, আজকের প্রজন্ম যা করতে পারেনি বাচ্চারা তা করে, সবার চোখে আংগুল দিয়ে দেখায়ে গেছে যে, সবই সম্ভব; আজকের প্রজন্ম, বুড়ো প্রজন্ম এদের দেবশিশু ডাকছেন, পথ-প্রদর্শক ডাকছেন, দিক-নির্দেশক বলছেন, ইঁদুরের গলায় ঘন্টা লাগানোর বীর ডাকছেন।
আমি একটু কৃপণ, আমি কিছু ডাকতে চাচ্ছি না; এদের মা-বাবা আছেন, এরা বাংগালী মা-বাবার সন্তান; এরা দেবতার সন্তান নন, দেবতা নেই; আমি ছোট করে এদের আগামী বাংলাদেশের লংকার হনুমান ডাকতে চাই; কারণ, এরা একবার যখন রাস্তায় নেমেছে, মনটা রাস্তায় রেখে গেছে, এরা পাঠশালায় ফেরত যাবে শিক্ষকদের পড়াতে। এদেরকে রাস্তায় কেন আসতে হয়েছে, সেটা নিয়ে অনেক লজিক্যাল তর্ক করা যেতে পারে; তবে, এরা রাস্তায় এসেছিলো, এরা মনটাকে রাস্তায় রেখে গেছে, এটা আমার ধারণা; এরা এখন রাস্তার রাজা।
এরা এখন জেনেছে যে, তারা যা করেছে, তাদের অগ্রজেরা তা পারেনি; তারা সুপার-কিড, ভুন্ডের-কিড; তারা অবশ্যই তাদের শিক্ষকদের থেকে বেশী জানে, তাদের অগ্রজদের থেকে বেশী জানে! আগামী ২/১ বছরের মাঝে তারা রাস্তায় ফিরে আসবে তাদের রেখে যাওয়া মনটাকে খুঁজতে।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৩৮