যারা সঠিক মতো ইহুদীদের ইতিহাস জানেন, বুঝেন, লজিক্যালী এনালাইসিস করতে পারেন, তাদের কাছে একটা বিষয় স্পষ্ট যে, ইহুদীরা প্রাচীনকাল থেকে শিক্ষিত ছিলেন; হযরত মুসা শিক্ষিত ছিলেন, এবং তাদের শিক্ষা ও কালচার তাদেরকে ৩৫০০ বছর অন্যদের থেকে ভালোভাবে থাকতে সাহায্য করে আসছে। আজকের উন্নত বিশ্বের জীবনযাত্রার মান উপরে নিয়েছে শিক্ষা, বিজ্ঞান, টেকনোলোজী, অর্থনীতি, ফাইন্যান্স ও সুশাসন; এই সবগুলোতে ইহুদীদের শক্ত উপস্হিতি আছ। ইহুদীদের মাঝে বিল গেইটস নেই, গৃহহীন নেই, বেকার নেই, নিরক্ষর নেই, অনৈক্য নেই, নি:স্ব নেই, ড্রাগে আসক্ত নেই, ডিবোর্সও তেমন নেই।
ব্লগে ইহুদীদের এই অবস্হাকে যদি কেহ ব্যাখ্যা করেন যে, স্বয়ং আল্লাহ চেয়েছেন তাদেরকে "পৃথিবীতে ধনদৌলত দেয়া হবে, কিন্তু পরকাল থেকে বন্চিত করা হবে"; এই ধরণের ব্যাখ্যা কি লজিক্যালী সঠিক? এটা যদি সঠিক হয়, তা'হলে এটা সঠিক যে, মুসলমানদের জন্য বিশাল পরকাল রাখা হয়েছে, তারা এই জীবনে ধন দৌলত পাবে না; তারা আফগানিস্তান, ইথিওপিয়া, ইয়েমেন, বাংলাদেশের বস্তীর মানুষের মত জীবন যাপন করবেন।
খৃ্ষ্টান ধর্মের প্রচারক, ঈসা(আ: ) ইহুদী পরিবারের সন্তান ছিলেন; তিনি লেখাপড়ার সুযোগ পেয়েছিলেন; উনার ১২ জন এপোস্টেপল (সাহাবী) লেখাপড়া জানতেন; এসব সাহাবীরাই উনার বাণীকে লিপিবদ্ধ করেছেন হিব্রু, আরামিক ও গ্রীক ভাষায়; লিপিবদ্ধ থাকার কারণেই খৃষ্টান ধর্ম সহজেই ইউরোপে প্রচার লাভ করে। ইউরোপিয়ানরা যেই ধর্মেই থাকুক, তারা কঠিন প্ররিশ্রমী, তারা বিশ্বে সবার আগে আধুনিক বিশ্ব বিদ্যালয় স্হাপন করে, জ্ঞানের বিকাশ ঘটায়; জ্ঞানই সম্পদ সৃষ্টি করেছে, সুশাসন কায়েমের পথ খুলেছে, মানুষের জন্য সুযোগ সৃষ্টি করেছে।
শিক্ষা ও অর্থনৈতিক কারণে, ইউরোপে গত শতাব্দী থেকে চাকরাণী প্রথা বিলুপ্ত হয়ে গেছে; আজকে তাদের উৎকর্ষ, শিক্ষা, জ্ঞানবিজ্ঞান, টেকনোলোজী, অর্থনীতি, শ্রম, ও সংকৃতি সবকিছুতে নারী পুরুষ সমান অবদান রাখছেন; ফলে, মানুষ উন্নত জীবন যাপন করছেন; অন্য মহাদেশের দরিদ্র ও পেছনে-পড়া মানুষকে সাহায্য করছেন; এখন, কিছু মুসলমান ইউরোপের উন্নতির ব্যাখ্যা দিচ্ছে যে, সৃষ্টিকর্তা তাদেরকে এ দুনিয়ায় ধনদৌলত দিচ্ছেন, কারণ পরের জীবনে তারা কিছু পাবে না; যারা পরিশ্রম করছেন, জ্ঞান অর্জন করছেন, সৃষ্টিকর্তা তাদেরকে পছন্দ করেন না; কিন্তু চাকরাণী হিসেবে নিয়ে, অন্যের মেয়ের উপর নির্যাতনকারী সৌদী মুসলমানদের জন্য বিশাল পুরস্কারের ব্যবস্হা করে রেখেছেন পরকালে? এগুলো কি লজিক্যাল?
ইসলাম ধর্ম এশিয়ার ও আফ্রিকার যেসব অন্চলে প্রচারিত হয়েছে, গত কয়েক শতাব্দী এরা জ্ঞান বিজ্ঞানে ভয়ংকর পেছনে; ইউরোপের ইহুদী ও খৃষ্টানরা যখন বিশাল বিশাল ইউনিভার্সিটি করেছেন, তখন এসব অন্চলে সর্বাধিক সামান্য মক্তব মাদ্রাসা স্হাপন করা হয়েছে। অটোম্যানদের পরিবারে পড়ালেখার ভার ছিল খৃষ্টান ও ইহুদী শিক্ষকদের হাতে; নাগরিকদের জন্য পড়ালেখা ছিল মক্তবে। আপনারা যারা স্কুল-কলেজে, ইউনিভার্সিটিতে পড়েছেন, তারা কি বিশ্বাস করেন যে, আপনাদের সময়ে মাদ্রাসায় যারা পড়েছেন, তারা আপনাদের চেয়ে বেশী জানেন? তারা ইহুদী ও খৃষ্টানদের উন্নতি, উৎকর্ষ, সুখী জীবন সম্পর্কে যে ব্যাখ্যা দিচ্ছেন, উহা কি লজিক্যাল?
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:৫৩