Tragic death of a child without any treatment
তানহা নামের ৭ বছরের একটি মেয়ে ঢাকায় নানীর সাথে থেকে পড়ালেখা করতো, ডেংগুতে গত শনিবার (আগষ্ট, ১৭) তানহা মৃত্যুবরণ করেছে; সে কবি নজরুল ইসলাম স্কুলের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী ছিলো; তানহা তার নানীর সাথে জুরাইনে বাস করতো; তানহাদের গ্রামের বাড়ি মুন্সীগঞ্জের লৌহজং থানায়; মনে হচ্ছে, ওর পরিবার গ্রামে থাকে।
বাচ্চাটি গত মংগলবার(আগষ্ট, ১৩) জ্বরে আক্রান্ত হয়, নানী তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে আসে, রক্ত পরীক্ষায় ডেংগু ধরা পড়ে। কর্তব্যরত ডাক্তার বাচ্চাটিকে হাসপাতালে ভর্তি না করায়ে বাড়ী পাঠিয়ে দেয়; নানী ডাক্তারকে অনুরোধ করেছিলো মেয়েটিকে হাসপাতালে ভর্তি করানোর জন্য; কিন্তু ডাক্তার তাকে ভর্তি করায়নি।
এই বাচ্চাটির বেলায়, ৭ বছরের শিশু'র যদি ডেংগু ধরা পড়ে, তাকে হাসপাতালে ভর্তি করানোর দায়িত্ব কার, ডাক্তারের, নানীর, নাকি হাসপাতালে ডেংগুর দায়িত্বে থাকা কোন এডমিনিষ্ট্রেটরের? আমাদের ডাক্তারদের সুখ্যাতি পুরো জাতি জানেন! একজন সাধরণ নানী, দাদী আপানাদের সবার আছেন, কিংবা ছিলো; এঁদের কয়জন সাজেদা চৌধুরী, সাহারা খাতুন, মতিয়া চৌধুরী, কিংবা দীপুমনি?
দীপুমনির স্বামী অসুস্হ, উনাকে এয়ার এম্বুলেন্সে ভারত নেয়া হয়েছে, যথাসম্ভব; দীপুমনি ভুক্তভোগী; উনার মাথায় কি ছাত্রদের ডেংগুর কথা একবারও এলো না? উনি কি মিনিষ্টার হিসবে অর্ডার দিতে পারতো না, ডেংগু আক্রান্ত প্রতিটি ছাত্রকে হাসপাতালে ভর্তি করতেই হবে, এবং মিনিষ্ট্র অব এডুকেশন উহার দায়িত্ব নেবে?
মেয়েটির ডেংগু ধরা পড়ার পর, হাসপাতালের দায়িত্বরত ডাক্তার ছাড়াও, অন্য আরো কোন কোন ব্যক্তি সেটা জানার কথা আছে কিনা? ঢাকা মেডিক্যালে যদি সেই ধরণের ব্যবস্হা থাকতো, যে ডেংগু ধরা পড়লে, রিপোর্টের ১ কপি কোন 'স্পেশালী নিযুক্ত ব্যক্তির' কাছেও যাবে! প্যাথোলোজী থেকে যদি স্পেশালী নিযুক্ত ব্যক্তিকে রিপোর্টের ১ম কপি দেয়া হয়, এবং সেই ব্যক্তিই যদি রোগী ও অভিবাবকের সাথে কথা বলে, ডাক্তার দেখায়ে, বাচ্চাটিকে হাসপাতালে ভর্তি করাতো, ব্যাপাারটা কেমন হতো? ডেংগু ইমারজেন্সীর বেলায় এসব পদক্ষেপের দরকার ছিলো; এগুলো কমনসেন্স, হাসপাতাল এই ব্যবস্হা নিতে পারতো, হেলথ মিনিষ্ট্র নিতে পারতো, দেশের প্রেসিডেন্ট, প্রাইম মিনিষ্টার নিতে পারতো।
কিন্তু কেহ ডেংগু'র বর্তমান মহামারীতেও এই পদক্ষেপগুলো নেয়নি; ঢাকা শহরে সাধরণ একজন মহিলাকে যদি ডাক্তার, বা কোন এডমিনিষ্ট্রেটর সাহায্য না করে, কি করে সে ৭ বছরের একটা ছোট বাচ্চাকে হাসপাতালে ভর্তি করাবে?
দেশে কোন বিষয়ে ইমারজেন্সী দেখা দিলে, সাথে সাথে কিছু পদক্ষেপ নিতে হয়; সেগুলোর জন্য সাথে সাথে প্ল্যান করতে হয়; এসব কাজের জন্য বেশ দক্ষ মানুষের দরকার হয়। বাংলাদেশে লাখ লাখ বেকার আছে, ইউভার্সিটির ছেলেমেয়েরা আছে, যারা ভলনটিয়ার হিসেবে এসব কাজ করবে; কোন টাকা পয়সার দরকার নেই; প্রেসিডেন্ট বা প্রাইম মিনিষ্টার এইধরণের ভলনটিয়ার চাইলে হাজার হাজার ছেলেমেয়ে ভলনটিয়ার হয়ে কাজ করতো; কিন্তু আমাদের প্রেসিডেন্ট, প্রাইম মিনিষ্টারেরও ভাবনাশক্তি খুবই সীমিত। আমার দেখা মতে, আমেরিকার একটা সাধারণ স্কুলের ১০ম শ্রেণীর বাচ্চা এদের থেকে অধিক দক্ষ।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে আগস্ট, ২০১৯ রাত ৯:৩৬