somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রূপার কাছে হিমুর চিঠি। ১৬+

০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:২৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

৫ সেপ্টেম্বার, ২০১৩।

প্রিয় রূপা,
উপন্যাসের হিসেবে হিমুরা, রুপাদের কাছে চির কূট পাঠায়। আমি চিঠি পাঠাই। আমি তো নকল হিমু তাই। আসল হিমু হতে এই দুষ্টু সমাজ আমায় দেয় নি। যাই হোক, আতলামি বাদ, এবার কাজের কথায় আসি।

জানি সেই অনেক আগে লিখা গল্প গুলোর মতো, বারান্দার নীল শাড়ী পড়ে তুমি দাঁড়িয়ে নেই। সেটা থাকার কথাও নয়। উপন্যাস আর বাস্তবতা তো আর এক নয়। বোতাম ছেড়া, পকেটবিহীন পাঞ্জাবী আর জুতো ছাড়া এ শহরে হাটা মানুষের সংখ্যা নেহাৎই কম নয়। বরংচ বেশ বেশিই। তবে বাস্তবতাকে মেনে না নিয়ে কেউ এখানে হিমু হতে আসে নি। এরা সবাই সমাজের এলিট শ্রেনীর মানুষ। সাধারণ নিন্ম মধ্যবিত্ত আর মধ্যবিত্তের কাছে হিমু তথা মহামানব হওয়াটা পহেলে ফাগুনের ফ্যশান অথবা ভেক হতে পারে, তবে জীবন বাস্তবতা নয় কখনোই।

দেখো, ভালোবাসা কি জিনিষ তা আমি নিজেও জানি না। বিজ্ঞানীরা বলেন যৌনাকাঙ্খার অপর নাম ই ভালোবাসা। তবে যদি তাই হতো, তবে আমাদের আর পাশুর মাঝে পার্থক্য কোথায়? মানুষ আর পশুর মাঝে পার্থক্য গড়ে দেয়, মানুষের শিল্পবোধ আর মনন। আর সেখানেই মানুষের ভালোবাসার সাথে পশু পাখিদের ভালোবাসার মূল পার্থক্য গড়ে ওঠে। মানুষ ই এক মাত্র প্রানী যে কিনা অনুষ্ঠান করে বিয়ে করে। কি অদ্ভুত তাই না। এ জন্যই মানুষ এতো অসাধারণ। ভালোবাসার সংজ্ঞা নিরুপন করতে আমি আজ বসি নি। এটা করাও আমার কাজ নয়। আমি সামান্য কবি অথবা জ্বরের ঘোরে প্রলাপ বকিয়ে একজন যা তুমি ভাবো না কেন? তবে ভালোবাসার কথা যখন তুলেছিই তখন রবি ঠাকুরের কিছু লাইন না বললেই নয়।

সখী, ভাবনা কাহারে বলে। সখী, যাতনা কাহারে বলে ।
তোমরা যে বলো দিবস-রজনী ‘ভালোবাসা’ ‘ভালোবাসা’—
সখী, ভালোবাসা কারে কয় ! সে কি কেবলই যাতনাময় ।
সে কি কেবলই চোখের জল ? সে কি কেবলই দুখের শ্বাস ?
লোকে তবে করে কী সুখেরই তরে এমন দুখের আশ ।

আমি একজন হয়তোবা উপন্যাসে বর্নিত হিমুর মতো কিছুটা বন্ধনহীন মানুষ, আমাকে বেধে রাখা টা বেশ কঠিন, কারণ আমি স্রোতের মতোই গভীর। আর আমাকে বেধে রাখার এই দায় তো আজ তোমার ই। আমার নয়। যদি মুখ ফিরিয়ে নাও তা হলে প্রিয় রুদ্র মোহাম্মদ শহীদুল্লাহর মতো বলতে হয়,

ভালবাসার সময় তো নেই
ব্যস্ত ভীষন কাজে,
হাত রেখো না বুকের গাড় ভাজে।
ঘামের জলে ভিজে সাবাড়
করাল রৌদ্দুরে,
কাছএ পাই না, হৃদয়- রোদ দূরে।
কাজের মাঝে দিন কেটে যায়
কাজের কোলাহল
তৃষ্নাকে ছোয় ঘড়ায় তোলা জল।
নদী আমার বয় না পাশে
স্রোতের দেখা নেই,
আটকে রাখে গেরস্থালির লেই।
তোমার দিকে ফিরবো কখন
বন্দী আমার চোখ
পাহারা দেয় খল সামাজিক নখ।

আমি যেহেতু একজন প্রকৌশলী, সেহেতু, সাধারণ ভাবেই একজন অসামাজিক মানুষ। এটা তোমার বুঝতে হবে, যদিও আমি আসল হিমু নই। তার পর ও মহামানব নয়, নাগরিক হিমু হবার চেষ্টা করে যাচ্ছি নিরন্তর। তুমি কি পাশে থাকবে?

আমি জানি এই চিঠির একটা লাইন ও তুমি বুঝবে না, সব কথা গুলোকে মনে হবে অসংলগ্ন প্রলাপ অথবা হিব্রু ভাষায় লিখা ওল টেস্টামেন্টের কিছু ধর্মীয় বানী। কিন্তু মনে রেখো, যে দিন আমার শারীরিক অস্তিত্ব আর এই পৃথিবিতে থাকবে না, সেদিন যদি সত্যিই আমায় ভালোবাসো, এই চিঠি গুলো তোমাইয় কিছুটা হলেও স্বান্তনা দেবে। সেদিন হয়তো এই লিখার পাঠোধ্যার করতে পারবে তুমিও। ভালো থেকো সকালের ঘাসে, সন্ধ্যার শিশিরে। ভালো থেকো।

-হিমাদ্রি হিমু।
৫টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না ********************

লিখেছেন মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩৫

যখন প্রথম পড়তে শিখেছি তখন যেখানেই কোন লেখা পেতাম পড়ার চেষ্টা করতাম। সেই সময় দোকানে কোন কিছু কিনতে গেলে সেই দোকানের লেখাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তাম। সচরাচর দোকানে যে তিনটি বাক্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×