somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জিসান শা ইকরাম, বাংলা ব্লগকে আপনার রাহুগ্রাস থেকে মুক্তি দিন

৩০ শে এপ্রিল, ২০১২ রাত ৮:০২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমি লিখতে পারি না। কিন্তু এটা জোর গলায়ই বলি যে পাঠক হিসেবে আমি খারাপ না। যখন ব্লগের সাথে পরিচিত ছিলাম না তখন অনেক বই পড়তাম। ব্লগের সন্ধান পাওয়ার পর আরো সুবিধা হলো।
একেবারে ভিন্ন একটা মিডিয়া, ভিন্ন একটা লেখালেখির যায়গা। সত্যি কথা বলতে কী অন্য যে কোন মাধ্যম থেকে এই মাধ্যমকে আমার অনেক বেশি রিচ মনে হয়েছে। হওয়াটাই স্বাভাবিক। অন্য ব্লগাররাও এই যায়গায় নিশ্চয়ই আমার সাথে একমত হবেন।

আমি যতোটুকু জানি সামহোয়্যারইনব্লগই বিশ্বে প্রথমবারের মতো কমিউনিটি ব্লগিং-এর কনসেপ্ট চালু করে। এবং বলা বাহুল্য তাদের এই কনসেপ্ট খুব দ্রুত সফলতা পায়। বাংলা ব্লগের সংখ্যা এখন অনেক। গুগলে বাংলায় কোন কিছু লিখে সার্চ দিলে এখন প্রায় সব রেজাল্টই আসে ব্লগ থেকে।

ব্লগ পড়ছি অনেকদিন যাবত। অনেক ক্যাচাল দেখেছি। অনেক ঝড় ঝাপটা দেখেছি। এই সত্যটা মেনেই নিয়েছি যে ক্যাচাল ব্লগেরই অংশ। এটাকে এড়িয়ে যাবার উপায় নেই। শুধু সামহোয়ার না, অন্য ব্লগগুলোও ক্যাচাল থেকে মুক্ত নয়।

কিন্তু ব্লগ ইতিহাসের সবচেয়ে নোংরা ক্যাচাল মনে হয় এখন চলছে। কেনো এটাকে নোংরা বলছি?
প্রধান কারণ হলো যে মানুষটাকে নিয়ে ক্যাচাল তার নাম জিসান শা ইকরাম। আর তারপরের কারণ হলো ক্যাচালের বিষয়টা হচ্ছে নারী অবমাননা। আরো স্পষ্ট করে বললে ব্লগে ইভ টিজিং।

জিসান শা ইকরাম। ব্লগে লিখছেন ২ বছর ৭ মাস যাবত। তার ব্লগে এতো কমেন্ট, ব্লগে এতো জনপ্রিয়, তাকে নিয়ে এতো আলোচনা!!
কিন্তু কী লিখছেন তিনি? বাংলা ব্লগকে কী দিয়েছেন তিনি? বাংলা ব্লগে তাঁর অবদান কী?

ব্লগার হতে হলেই যে ভালো লিখা জানতে হবে তা বলছি না। কিন্তু ব্লগে আলোচিত হতে হলে নুন্যতম কোয়ালিটি লাগে।
শুনলাম তিনি ব্লগে বিভিন্ন নারী ব্লগারকে ব্লগিং-এর ব্যাপারে পরামর্শ দিতেন। বাহ! জিসান শা ইকরামের মতো ব্লগার দিচ্ছেন ব্লগিং এর পরামর্শ। হাসবো না কাঁদবো বুঝতে পারছি না।

জিসান শা ইকরামের মুল উদ্দ্যেশ্য ছিলো আমার কাছে মনে হয় কয়েকটা।
ব্লগে আধিপত্য বিস্তার করা। সবচেয়ে বড় বাংলা ব্লগকে নিজের কব্জায় আনা। নিজের দলে অনেক ব্লগার জড় করে বড় একটা ব্লগ বাহিনি তৈরী করা। ব্লগকে কাজে লাগিয়ে নারীদের সাথে ভাব জমানো। তাদের সাথে ...


ব্লগে আধিপত্য বিস্তার করতে জিসান যা যা করা দরকার সবই করেছেন। কেবল ব্লগ আড্ডায় যোগ দেয়ার জন্য ঢাকায় যেতেন তিনি। শুধু ব্লগ আড্ডাই না। ব্লগ পিকনিক সহ অন্যান্য ইভেন্টেও তিনি ছিলেন সক্রিয়।
তার ফেসবুকে ছিলাম অনেকদিন। তার ১০ টা স্ট্যাটাসের ৯ টা থাকতো ব্লগ নিয়ে। যেনো বাংলা ব্লগের ভালো মন্দ দেখার দায়ীত্ব উনার ঘাড়ে।

আমি যতোটুকু জানি উনি ঈদ পুজা সহ অন্যান্য ইভেন্টে চেনা অচেনা ব্লগারদের এস এম এস করতেন। একজন মানুষ কতোটা ব্লগ কেন্দ্রিক হয়ে পড়লে এমনটা করেন।

উনার বিপক্ষে অভিযোগ উঠেছে অনেকগুলো নিক চালাতেন। আমি এটাকে কোন অপরাধ বলবো না। একাধিন নিক নেই এমন ব্লগার ব্লগে কমই আছেন। কিন্তু যখন অন্য নিকটা বিশেষ উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয় তখব প্রশ্ন না তুলে পারা যায়না।
ঐ নিকগুলো থেকে তিনি রেজওয়ানা সহ অন্যান্য ব্লগারের বিপক্ষে প্রপাগান্ডা চালাতেন।


কিছুদিন আগে তার নিকবাজি, সিন্ডিকেটিং, দলপাকানো ইত্যাদি নিয়ে একবার ব্লগে ঝড় বয়ে গিয়েছিলো। ধুর্ত জিশান তখন একেবারে চুপ হয়ে গেলেন। নিজের বিপক্ষে আসা একটা অভিযোগও খন্ডাতে পারলেন না। যদিও তখন বলেছিলেন পোস্ট দিয়ে সব জানাবেন।
ঐ ক্যাচালের পর যখন ব্লগ আবার শান্ত হলো তখন তিনি ব্লগে ফিরলেন। উনার বিপক্ষে আসা অভিযোগ বেমালুম ভুলে গেলেন। ভুলে গেলেন উনার সবকিছুর ব্যাক্ষা করে পোস্ট দেবার কথা ছিলো।


মজার ব্যাপার হলো এবার যখন আবার উনার অপকর্ম নিয়ে ব্লগ আবার গরম হয়ে উঠলো তিনি তখন আবার গুম হয়ে গেলেন। পোস্ট স্টিকি হলো।
গুম থেকে ফিরে ফেসবুকে ঘোষণা দিলেন
আজ সামুতে সব শেষ পোস্ট টা দেব। জানি ওই পোষ্টের কারনে আজ ব্যান হবো । কোন সমস্যা নেই ।
হ্যা। পোস্ট উনি দিয়েছেন। কী পোস্ট? নিজের বিপক্ষে আসা কোন অভিযোগই খন্ডন করতে পারেন নি।
উনার আশেপাশে যতোজন নারী ব্লগার ছিলেন সবার অভিযোগ উনাকে নিয়ে। সবার অভিযোগ তো মিথ্যা হতে পারেনা।
কী এমন কাজ তিনি করতেন যার জন্য সবাই বিপক্ষে কথা বললো।

ব্লগাররা গাধা না। আরজুপনি, রেজওয়ানার মতো মেধাবী ব্লগার তার বিপক্ষে বলেছেন। "মাঝরাতে পোস্ট দিবা না" এটা কোন অর্থে বললে আরজুপনির মতো ব্লগার অভিযোগ জানাতে পারেন তা আমরা বুঝি।

আরো অনেক ঘটনাই আছে।
অন্যের গার্লফ্রেন্ডকে আপত্তিকর মেসেজ দেয়া।
অন্যের নামে কুৎসা রটানো।
ব্লগে রাজনীতি করা ইত্যাদি ইত্যা্দি


এই পোস্ট লিখতাম না।
দুর্যোধনের পোস্টে জিসান অবশেষে মুখ খুলেছেন। তার কমেন্ট দেখে এই পোস্ট লিখতে হলো। কী লিখেছেন আসুন দেখা যাকঃ
আপনার পোষ্ট এবং এর প্রায় সব মন্তব্য এবং জবাব পড়লাম। ৪৮৪ নং মন্তব্যের জবাবে পড়তে গিয়ে এখানে চোখ আটকে গেল > জিসানের মতন ভামের পক্ষ নিয়ে বলেছেন ......... আপনার প্রতি অনেক কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ যে , আপনি আমাকে খাঙ্কির পোলা , মাদার চোদ , জাউরা , বাবা- মায়ের প্রাক বিবাহ পূর্ব লিলা খেলার অবৈধ সন্তান , মৌজ মিয়ার মৌজের ফসল , জোলা এমনি ভাবে বলেননি। যদিও এসব শব্দ খুবই আপত্তিকর , কিন্তু এই সামুতে এসব বিশেষণ জিসান শা ইকরাম কে দিলে , সামুর কোন ধারা লঙ্ঘন হয় না। আমি জানি আপনি এই শব্দ গুলো আমার মতই অপছন্দ করেন।


জিসান শা ইকরাম,
এইসব পিছলাপিছলি কমেন্ট আর আবেগের কথা কেউ খাবে না। বাংলা ব্লগ খুব নিষ্ঠুর যায়গা। এখানে টিকে থাকে ভালোরাই। আপনার মতো লোকজনকে কথা শুনতেই হবে। কোন উপায় নেই।

একটা উপায় অবশ্য আছে। নিজের বিপক্ষে আসা অভিযোগগুলো মিথ্যা প্রমান করুন।
আপনি যা করছেন তা হলো ত্যানা প্যাচানি। এসব বাদ দিন। কিছু বলতে না পারলে ব্লগ ছেড়ে দিন। আপনি বাংলা ব্লগের অনেক ক্ষতি করেছেন।

ব্লগে আগেও ক্যাচাল হতো। গঠনমুলক ক্যাচাল। ক্যাচাল করতেন ফিউশন ফাইভ, দ্রোহী, হাসিব মাহমুদ, অমি রহমান পিয়াল এরা। আর এখন করছে জিসান শা ইকরামের মতো মানহীন ব্লগার। ব্লগের সবচেয়ে আলোচিত ব্লগার হোন জিসান। এটা সামুরই লজ্জা।


ব্লগে এই ক্যাচাল শেষ হবে। ব্লগ শান্ত হবে। আমার ধারনা জিশান তখন আবার হাজির হবেন। আবার শুরু কবে উনার কাজকর্ম।

অন্যান্য ব্লগের অবস্থা আর সামুর অবস্থা দেখলে করুনা হয়। দুই দিন আগে আসা ব্লগের প্রথম পাতা আর সামুর প্রথম পাতার মাঝে আকাশ পাতাল পার্থক্য। পাতার পর পাতা উলটালে সামুতে একটা ভালো লেখা পাওয়া যায়না এখন। প্রথম পাতায় শুধু জিসান আর লুলামী।
স্টিকি পোস্টের আলোচনা গিয়ে থামে জিশান ইস্যুতে। লজ্জা লজ্জা!


জিসান শা ইকরাম, আপনাকে গালি দেবো না। আপনার প্রতি অনুরুধ, আপনি বিদায় হোন।
বাংলা ব্লগকে অনেক কলংক দিয়েছেন। আর না। ব্লগকে মুক্তি দিন। ব্লগারদের মুক্তি দিন।

২৮টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মেঘ ভাসে - বৃষ্টি নামে

লিখেছেন লাইলী আরজুমান খানম লায়লা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩১

সেই ছোট বেলার কথা। চৈত্রের দাবানলে আমাদের বিরাট পুকুর প্রায় শুকিয়ে যায় যায় অবস্থা। আশেপাশের জমিজমা শুকিয়ে ফেটে চৌচির। গরমে আমাদের শীতল কুয়া হঠাৎই অশীতল হয়ে উঠলো। আম, জাম, কাঁঠাল,... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনের গল্প

লিখেছেন ঢাকার লোক, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৩৫

মাত্র মাস দুই আগে আমার এক আত্মীয়ের সাথে দেখা আমার এক বোনের বাড়ি। তার স্ত্রী মারা গেছেন তার সপ্তাহ দুই আগে। মক্কায় উমরাহ করতে গিয়ে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিমান

লিখেছেন জিনাত নাজিয়া, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:১২

" অভিমান "

তোমার ঠোঁটে বোল শিখেছি
তুমি আমার মা, কেমন করে
ভুলছ আমায় বলতে
পারিনা। এমন করে চলে
গেলে, ফিরে ও এলেনা। হয়তো
তোমার সুখেই কাটছে দিন,
আমায় ভাবছ না।

আমি এখন সাগর... ...বাকিটুকু পড়ুন

×