নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, ‘মহিলাগণ পর্দায় থাকবে। কারণ তারা যখন বের হয় তখন শয়তান উঁকি-ঝুঁকি দিতে থাকে কিভাবে তাদের দ্বারা পাপ কাজ সংঘটিত করা যায়।’
গাউছুল আ’যম, সাইয়্যিদুল আউলিয়া হযরত বড়পীর ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মাতা খাছ পর্দা করার কারণেই মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার ঘরে গাউছুল আ’যম, সাইয়্যিদুল আউলিয়া হযরত বড়পীর ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মতো ওলীআল্লাহ উনাকে পাঠিয়েছেন।
যার থেকে সকলকেই ইবরত-নছীহত হাছিল করতে হবে। অর্থাৎ যারা চায় যে, তাদের সন্তান নেককার বা আল্লাহওয়ালা-আল্লাহওয়ালী হোক; তবে তাদের দায়িত্ব-কর্তব্য হচ্ছে, খাছ শরয়ী পর্দা পালন করা।
সাইয়্যিদুল আউলিয়া, গাউছুল আ’যম হযরত বড়পীর ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ছিলেন সেই যামানায় মহান আল্লাহ পাক উনার খাছ লক্ষ্যস্থল। উনার পবিত্র বিলাদত শরীফ থেকে পবিত্র বিছাল শরীফ পর্যন্ত পুরো জীবনেই মুসলমানদের জন্য রয়েছে নছীহত, ইবরত।
সুমহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “হে মহিলাগণ! আপনারা নিজ ঘরে অবস্থান করুন। অর্থাৎ বেপর্দা হবেন না।” গাউছুল আ’যম, সাইয়্যিদুল আউলিয়া হযরত বড়পীর ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মাতা খাছ পর্দা করার কারণেই মহান আল্লাহ পাক উনার ঘরে গাউছুল আ’যম, সাইয়্যিদুল আউলিয়া হযরত বড়পীর ছাহেব শায়েখ সাইয়্যিদ আব্দুল ক্বাদির জিলানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মতো ওলীআল্লাহ উনাকে পাঠিয়েছেন।
উনার পিতা হযরত সাইয়্যিদ আবু ছালেহ মুসা জঙ্গি দোস্ত রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি অত্যন্ত ক্ষুধার্ত অবস্থায় দজলা নদীতে ভেসে আসা একটি আপেল ফল খাওয়ার কাফফারা হিসেবে সেই ফল বাগানে কয়েক বৎসর কাজ করেন।
অতঃপর হযরত সাইয়্যিদ আবু ছালেহ মুসা জঙ্গি দোস্ত রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি সেই বাগানের মালিক হযরত আব্দুল্লাহ সাওমায়ি রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে বললেন, ‘হুযূর! আমার ফলের মূল্য কি এখনও পরিশোধ হয়নি?’ হযরত আব্দুল্লাহ সাওমায়ি রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন, ‘হ্যাঁ হয়েছে। তবে একটি শর্তে আপনাকে মুক্তি দিতে পারি।’ শর্ত হলো- ‘আমার একটি মেয়ে আছে উনাকে বিবাহ করতে হবে। মেয়েটি অন্ধ, বোবা, বধির, খঞ্জ, লুলা, কালো ও কুৎসিত।’ একথা শুনে হযরত সাইয়্যিদ আবু ছালেহ মুসা জঙ্গি দোস্ত রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ভাবলেন, ‘এ ধরনের একটি মেয়েকে বিয়ে করবো! যার কাছ থেকে খিদমত পাওয়ার পরিবর্তে উল্টো তাঁকেই খিদমত করতে হবে।’ কিন্তু পরক্ষণেই চিন্তা করলেন, দুনিয়া ক্ষণস্থায়ী, কাজেই এখন যদি তিনি ক্ষমা না করেন (বিবাহ করা ব্যতীত) তবে মহান আল্লাহ পাক উনার কাছে কি জবাব দিবো ইত্যাদি চিন্তা করে রাজি হয়ে গেলেন।
বিয়ে হয়ে গেলো। হযরত সাইয়্যিদ আবু ছালেহ মুসা জঙ্গি দোস্ত রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বাসর ঘরে প্রবেশ করেই (হযরত আব্দুল্লাহ সাওমায়ি রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি যা বলেছেন তার বিপরীত দেখতে পেয়েই) তাড়াহুড়া করে ঘর থেকে বের হয়ে আসলেন। ঘর থেকে বের হয়েই দেখলেন, সম্মুখের পারিবারিক রাস্তায় হযরত আব্দুল্লাহ সাওমায়ি রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে। তিনি হযরত সাইয়্যিদ আবু ছালেহ মুসা জঙ্গি দোস্ত রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে দেখে বললেন, ‘কি ব্যাপার আপনি বের হয়ে আসলেন কেনো?’ জবাবে হযরত সাইয়্যিদ আবু ছালেহ মুসা জঙ্গি দোস্ত রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন, ‘হুযূর! আপনি যা বলেছিলেন এখন দেখি তার সম্পূর্ণ বিপরীত। তাই আমি বের হয়ে এসেছি।’ হযরত আব্দুল্লাহ সাওমায়ি রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন, (যা তিনি পূর্বেই বুঝতে পেরেছিলেন এমন কিছু ঘটবে) ‘বাবা! উনিই আপনার আহলিয়া। রাত কাটান। সকালে আপনার প্রশ্নের জবাব দেবো।’
পরদিন হযরত আব্দুল্লাহ সাওমায়ি রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি হযরত সাইয়্যিদ আবু ছালেহ মুসা জঙ্গি দোস্ত রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে বললেন, ‘বাবা! আমার মেয়েকে আমি অন্ধ বলেছি এই জন্যে যে- আমার মেয়ে কখনও কোনো পর পুরুষকে দেখেননি। বোবা বলেছি এজন্যে যে- তিনি কখনও কোনো পাপের কথা মুখে আনেননি। বধির বলেছি এজন্যে যে- তিনি কখনো পাপের কথা কানে শুনেননি। খঞ্জ ও লুলা বলেছি এজন্যে যে- তিনি কখনও কোনো পাপের পথে পা বাড়াননি এবং কোনো পাপ কাজ স্পর্শ করেননি। কালো ও কুৎসিত বলেছি এজন্যে যে- উনাকে কখনও কোনো পর পুরুষ দেখেনি।’ এই কথা শুনে হযরত সাইয়্যিদ আবু ছালেহ মুসা জঙ্গি দোস্ত রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার শোকরগুজার করলেন। কারণ “পবিত্র সূরা নিসা শরীফ, পবিত্র সূরা নূর শরীফ ও পবিত্র সূরা আহযাব শরীফ” উনাদের পবিত্র সূরা শরীফসমূহে পর্দা করার ব্যাপারে কঠোর আদেশ-নির্দেশ মুবারক করা হয়েছে। যেমন মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র সূরা নূর শরীফ উনার ৩০, ৩১ নম্বর পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন, “(হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!) আপনি মু’মিন উনাদেরকে বলুন, উনারা যেনো উনাদের দৃষ্টিকে অবনত রাখে এবং উনাদের ইজ্জত-আবরু হিফাযত করে। এটা উনাদের জন্য পবিত্রতার কারণ। নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি তারা যা করে তার খবর রাখেন। আর আপনি মু’মিনা উনাদেরকে বলুন, উনারাও যেনো উনাদের দৃষ্টি অবনত রাখে এবং তাদের ইজ্জত-আবরু হিফাযত করে ও উনাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে।”
তিনি বাইহাক্বী শরীফ ও মিশকাত শরীফ কিতাব উনাদের মধ্যে রয়েছে, পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে, হযরত হাসান বছরী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি মুরসাল সূত্রে বর্ণনা করেন, আমার নিকট এই পবিত্র হাদীছ শরীফ পৌঁছেছে, “যে দেখে এবং দেখায় তাদের উভয়ের প্রতি মহান আল্লাহ পাক উনার লা’নত।” অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক উনার কালাম পাক এবং মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র হাদীছ শরীফ দ্বারা সরাসরি পর্দাকে ফরয করে দিয়েছেন। শুধু তাই নয় বরং চোখের দৃষ্টিসহ সমস্ত অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে হিফাযত করে পর্দা করতে বলেছেন।
গাউছুল আ’যম, সাইয়্যিদুল আউলিয়া হযরত বড়পীর ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মাতা তিনি খাছ পর্দা করার কারণেই মহান আল্লাহ পাক উনার ঘরে গাউছুল আ’যম, সাইয়্যিদুল আউলিয়া হযরত বড়পীর ছাহেব শায়েখ সাইয়্যিদ আব্দুল ক্বাদির জিলানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মতো ওলীআল্লাহ উনাকে পাঠিয়েছেন। যার থেকে সকলকেই ইবরত-নছীহত হাছিল করতে হবে।
অর্থাৎ যারা চায় যে, তাদের সন্তান নেককার বা আল্লাহওয়ালা-আল্লাহওয়ালী হোক; তবে তাদের দায়িত্ব-কর্তব্য হচ্ছে, খাছ শরয়ী পর্দা পালন করা। মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদের সকলকে খাছ শরয়ী পর্দা পালন করার তাওফীক দান করুন।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ৩:১১