নগর জীবনে মশা আজ একটি মারাত্মক হুমকি। প্রতিনিয়তই মশা বাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে নগর বাসি। সম্প্রতি -এডিস মশার প্রজনন ক্ষেত্র পেলে জেল-জরিমানা- নিয়ে বেশ হাস্য রহস্য ও আলোচনা সমালোচনাও কম হচ্ছে না। এখানে আমার প্রশ্ন হচ্ছে সিটি কর্পোরেশনের পক্ষে কি একা সম্ভব মশা নিয়ন্ত্রণ করা? না সাথে জনসচেতনাও প্রয়োজন? আর আমরা যেহেতু সভ্যতার আগে সম্পদশালী তা হলে জেল জরিমানা ছাড়াকি আমরা সায়েস্তা হওয়ার মানুষ?
# উদহরণ দেয়া যাক ঢাকা শহরে ২০হাজার টাকা যার মাসিক ফ্লাট ভাড়া প্রদান করেন তারা অবশ্যই শিক্ষিতের কাতারে ও ভদ্র লোক বটে তা না হরে তার পক্ষে ২লাখ ৪০হাজার টাকা বাৎসরিক ভাড়া প্রদান করে থাকা সম্ভব নয়। ২০১৬ এ সুবিধে মত বাসা না পেয়ে বাধ্য হয়ে নিচতলার বাসা নিতে হল। বাসার বারান্দা দিয়ে বিড়াল প্রবেশ ঠেকাতে বাইরে নেট লাগাতে গিয়ে এক ভয়াবহ পরিস্থিতির স্বীকার। মাছ, রান্না ঘরের ময়লা সহ দাম্পত্য জীবনে ব্যাবহৃত প্লাষ্টিক পর্যন্ত নিচে দেখে কর্মী কাজ করতে অস্বীকৃতি জানালো। বাড়ী ওয়ালাকে বললে উনি ঐ সাইডের সমস্ত ভাড়াটিয়াদের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ভাষায় গালিগালাজ করলেন সাথে শতর্ক করলেন। ক্লিনার দিয়ে পরিষ্কার করিয়ে দিলেন। ঠিক ৪মাস পড়ে যখন বাসা বদলাতে গেলাম ঠিক আগের পরিস্থিতি।
# বাসার সামনের একজনার কিছুটা অব্যবহৃত জায়গা সেটিতে ময়লা ফেলতে ফেলতে আবর্জার স্তুপ আর দুর্গন্ধে রাস্তায় টেকা দায়। জায়গার মালিক এসে বিভিন্ন রকম গালিগালজ করতেন নোয়াখালির ভাষায় বাংলার সাথে আরবী মিশিয়ে। তাতে কোন কাজ হয়েছে বলে মনে হয়নি কখনও।
# বাথরুমে বা রান্ন ঘরের হাউজে সপ্তাহে অনন্ত একদিন ব্লিলিচিং পাওয়ার ব্যবহার কররেল একদিকে যেমন জীবাণু মুক্ত হবে অন্যদিকে সেই পানি ড্রেনে জমা হলে বা ড্রেন দিয়ে প্রবাহিত হলে মশা তথা জীবনু ধ্বংশ হবে। নগর জীবনে ব্লিচিং পাউডার কি অধিকাংশ লোক চিনেনই না। এটা আমাদের সমাজের ভাড়াটিয়াদের চরিত্র।
# বাড়ির মালিক হিসেবে তার দায়িত্ব বাড়ীর আশেপাশে পরিষ্কার রাখা এবং জীবাণু নাশক স্প্রে করা। এদেশে অধিকাংশ বাড়ীতে যেখানে কোন কেয়ারটেকার নাই সেখানে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নই হয় না সেখানে জীবাণু নাশক স্প্রে করা তো স্বপ্ন। যদিও মাঝে মধ্যে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করেন তারা গিয়ে ময়লাগুলি ফেলে আসে রাস্তার উপর। সেই ময়লা আর ধুলি কনা আকারে প্রতিটি ভাড়াটিয়ার ঘরে পৌছে যায়। বাসার সামানে দিয়ে বয়ে যাওয়া ড্রেনে সপ্তাহে না হউক মাসে অনস্ত কিছু বিলিচিং পাওডার প্রয়োগ করলে মশার উপদ্রপও যেমন কমবে তেমনি দুর্গন্ধও কম হয়। আর এটা অবশ্যই সম্মিলিত ভাবে করতে হবে। আমাদের চরিত্রটা এমন যে কোরবাণীর সময় সিটি কর্পোরেশন থেকে সরবরাহ করা বিলিচিং পাউডারই ঘরে রাখা হয় না সিটিয়ে সেখানে আবার নিজেরা কিনে!!!!
# রাস্তার ঝালমুড়িওয়ালা দেদারছে ঝালমুড়ি বিক্রি করে যাচ্ছে আর ব্যবহৃত কাগজ আর ময়লা গুলি রাস্তায় ফেলে ময়লা করছেন গণতান্ত্রিক দেশে এটা তার অধিকার। আর ডাব বিক্রেতা তার তো কোন ভ্রুক্ষেপই নেই। সারাদিন বিক্রি করে সন্ধ্যায় রাস্তার কোন এক কোনায় ফেলে চলে যায়।
এভাবে আমাদের নিজেদের মাঝে হাজারো অসংগতি সেখানে সিটি কর্পোরেশনের কিইবা করার আছে। ৬মাসে একদিন মশার ওষুধ স্প্রে করে কি আদৌও মশা নিয়ন্ত্রণ সম্ভব? আর সেখানেও তো আমাদের মত মানুষই।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে মার্চ, ২০১৮ সকাল ১০:৩৩