আজকের আম চোর আগামী দিনের ডাকাত-
গতকালের পোষ্টের অধিকাংশই এই চুরির পক্ষে। কেও বলেছেন ডাকাত হতে পারি নাই; যাকগে সেসব কথা; মূল বিষয় নৈতিকতা শিক্ষা। ছোট থেকে যদি নৈতিকতা শিক্ষা না পায় তা হলে বড় হলে সে যে ঘরেরই হউক না কেন সে ডাকাতই হয়। পড়া লেখা শিখে হয় কলমের মাধ্যমে ডাকাত আর না শিখলে হয় ছুরি ধরে ডাকাত। ছুরি ধরে ডাকাতির চেয়ে কলম ধরে ডাকাতি বহুগুন ভয়ংকর তা আমরা আজ টেরপাচ্ছি হারে হারে অবশ্য যারা বোঝার ক্ষমতা রাখে। এই গার্মেন্টস ট্রেডে কামলা খাটতে এসে বহু ধরনের ডাকাত, ছিনতাইকারীর কবলে প্রতিনিয়ত পরতে হয়।
২০০৪/৫ সালের দিকের কথা; কামলা খাটি সাভারে। ঠিক আসরের আগে স্বাক্ষর করাতে উঠলাম কাস্টমস কার্যালয়ে; সফেদ দাড়ি; রুপেও মাশাল্লাহ, দেখলেই শ্রদ্ধা হওয়ার মত চেহারা; নামাজ পড়তে যাবেন বলে ওজু করা অবস্থায় স্বাক্ষর করলেন; ইতস্তঃ করছি তার সম্মানী নামের ঘুষটা দিব কি দিব না (ঝামেলা এড়াতে প্রতি স্বাক্ষরে রেট বাধা); ইতস্তঃতা দেখে নিজেই বলে বসল, তারাতাড়ি করেন নমাজে যাব; টাকাটা বের কের দিয়ে আল্লাহর কাছে মাফ চাওয়া ছাড়া আর কিছুই করার নাই।
২০০৫ একটা সমস্যা নিয়ে কাস্টমস্ কার্যালয়ে; শুক্রবারে ফোনে কথা বললে শনিবারে সময় দিলেন। তো শনিবারদিন দীর্ঘ সময় সমস্যাটা নিয়ে আলাপ করলে উনি আস্বস্ত করলেন যে সমাধান করে দিবেন। কথার ফাকে যে হারে আল্লাহ খোদার নাম নিলেন আমি তো ভয়ই পেয়ে গেলাম; পরে আমার ইতস্ততা দেখে সরাসরিই বলে বসল- রেট, যা হউক উপায় নাই, সেটেল করেই বের হতে হল।
মহানগর গোধুলিতে টিট ইনচার্জ একজন আছেন কালো চেহারার স্বাস্থ্য ভালো; চট্টগ্রাম থেকে মহানগর গধুলিতে প্রায়শই দেখতে পাওয়া যায়। মাস চারেক আগে, কিছু যাত্রির সাথে অবৈধ টাকা নেওয়া নিয়ে কথা লেগে গেল; কেবিনের রো'তে টাকা নিয়ে লোক দাড়ি করিয়ে রেখেছেন; কোন এক যাত্রি বলেছে আপনারাতো টাকা নিয়ে অবৈধ ভাবে যাত্রি দাড় করিয়েছেন। দাপটের সঙ্গে উত্তর করল- ঘুষ নিব না কি করব; যত ইচ্ছে নিব যা পারেন করেন; ছেলেকে চাকরি দিতে ২৫লাখ গেছে; আমাকে ঘুষ নিতে হবে না। সেটাকা কোথা থেকে আসবে।
চট্টগ্রাম বন্দরে এক নতুন অফিসার এসেছেন, কোন নিয়মনীতি বুঝিনা প্রতি কনটেইনারে ২০হাজার দিলেই স্বাক্ষর হবে না হলে হাজারও সমস্যায় ইমপোর্টারের অবস্থা কাহিল। বাধ্য হয়ে মাথানত কিছু করার নেই।
এরকম হাজারও সমস্যা প্রতিনিয়ত কাধে নিয়েই পথ চলি; এদের কাছে কোনকিছুই আজ চুরি না; সম্মানী, অনেকে তো বলে বসে "হক" বা অধিকার। ছোটবেলার দুরন্তপনায় চুরি আর আজ আভিযাত্যের টানে ডাকাতি। শুধু ছুরি ধরে ডাকাতি আমাদের নজরে আসে; এসবকিচু আড়ালেই থেকে যায় কারণ তারা ভদ্রপোষাক পড়ে, রংকরা বাড়ীতে থাকে, ঠান্ডা বাতাসের গাড়ীতে চড়ে। এদের ডাকাত অথবা ছিনতাইকারী বলার কোন সুযোগ নাই। যে যাই বলুক আমি বলব ছোটবেলা থেকে নৈতিকতা শিক্ষার অভাবেই আজ তাদের এই দুরাবস্থা।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৪:৪২