somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

চোরাবালি-
পোষাক তৈরীর কারখানায় মাসিক বেতনে কামলা দেয় মাস শেষে মাইনের আশায়, যে মাইনে দিয়ে চলবে নিজের পরিবার ও সমাজের জন্য কিছু একটা করার প্রচেষ্টা মাত্র। নিতান্তই সাদামাঠা গ্রাম থেকে আসা স্বল্প শিক্ষিত মানুষ।

পুলিশ এবং মানুষ

১৩ ই জুন, ২০১৮ সকাল ১০:০৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ঘটনা ১#
তখন ৫ম বা ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে পড়ি। গ্রামের ছেলে পড়ালেখা মানে ঠনঠন; ঘুরাঘুড়িই সার। যার প্রধান জায়গা হল সিএন্ডবি রোড, দুই ধারে অসংখ্যা বাবলা গাছ রাস্তাকে সর্বদা ছায়া দিয়ে আগলে রাখে। রাস্তা ইট বিছানো হেরিং রাস্তা। ঘোড়ায় চালিত টমটম আর ভ্যানই ভাড়ায় চালিত যাতায়ত মাধ্যম। নিজস্ব বলতে বাইসাইকেল।

একজন টমটম চালক এক নিরহ লোক বিকেল বেলা আছাড়ি (হাতল এর আঞ্চলিক শব্দ) ছাড়া দা নিয়ে অনেক খোজাখুজি করে হাতল যোগ্য একটি মড়া ডাল কাটছে। কিন্তু বিধিবাম, এমন সময় টমটমে চেপে পুলিশ কোথাও থেকে ফিরছিল। টমটম থামিয়ে তাকে গাছ থেকে নামালেন। শুধু হল জেড়া, হাফ প্যান্ট পড়ে দুরে দাড়িয়ে আমি ও আমার বন্ধু ফারুক দেখছি ঘটনা। চড় থাপ্পর, গালিগালজ, শেষে সেই ডাল পাছার দিয়ে বসা শাস্তি মেনে নিয়ে মুক্তি। আজো চোখে ভাসে বেচারার অসহায় আর আপমানিত অশ্রুউজ্জল চোখ। অথচ দিনের আলোয় কত মেম্বার চেয়ারম্যান ও বন বিভাগের লোকদের দেখেছি বেছে বেছে সুন্দর লম্বাগাছগুলি কেটে নিয়ে নিজেদের কাজে লাগাতে ও বিক্রি করতে।

ঘটনা ২#
ঢাকাতে অফিস, বাসা তখন গাজিপুরে। হঠাৎ ডিপার্টমেন্টের আরেক ব্যাপস্থাক ফোন দিলেন ভাই একটু টঙ্গী হাসপাতালে আসেন। সোরসিং এর সফিক রোড একসিডেন্ট এ মারা গেছেন। বুকের কোনায় চির ধরে উঠল, ২বছর চাকুরী জীবনে কখনও মন খারাপ বা হাসি ছাড়া দেখি নাই বা সদা হাস্যউজ্জল ছেলে। হাসপাতালে আসলাম। নিথর দেহ পড়ে আছে ট্রেতে। মাথায় ব্যান্ডেজ। যা হউক হাসপাতালের আনুষ্ঠানিকাত শেষে এ্যামবুলেন্সে এ নেয়া হবে। এরই মধ্যে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানালো যেহেতু দুর্ঘটনায় মৃত্যু পুলিশ ক্লিয়ারেন্স লাগবে। পাশেই টঙ্গী থানা। পুলিশ আসল। এবার শুরু হল জেরা, কোথায় দুর্ঘটনা, কিভাবে দুর্ঘটনা, সাতে কেও ছিল কিনা, খুন কিনা, পোষ্টমর্টেম করতে হবে ইত্যাদি। যাহউক সে ঝামেলাও শেষ হল এবার হল থানা নিয়ে টানা টানি। ঘটনাটি ঘটেছিল এআইবিউএ এর সামনে (সঠিক মনে পড়ছে না নামটি), কামাড়পাড়া, টঙ্গী এলাকায়। টঙ্গী বলে সেটি আমাদের থানা নিয়ন্ত্রণাধীন, আমরা ব্যাপারটা দেখব। উত্তরা থানা খবর পেয়ে এসেছেন তারা বলে দুর্ঘটনার শিকার হয়ে বডি উত্তরা থানায় পরেছে ব্যাপারটা আমাদের। শুরু হল দুই থানার টানাটানি। অবশেষে একজন এমপির হস্তক্ষেপে সমাধান হল। সময় গেল বিকেল ৫টা থেকে রাত ১টা।

ঘটনা ৩#
সেই সিএন্ডবি রোড, বিকেল বেলা দাড়িয়ে; ৩টা ছেলে (একজনার বয়স ৩০/৩২, বাকি দুজন ১৭/১৮) স্যালো মেশিন দিয়ে পানি সেচে মাছ ধরছে। টহল পুলিশ গাড়ি থামিয়ে সেখানে এগিয়ে যায়। বয়ষ্ক ছেলেটি ফোনে কথা বলছিল, পুলিশ দেখে তারাতারি ফোন কেটে দেয়। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশের চড় থাপ্পর, লাথি দিয়ে পানির মধ্যে ফেলে দেয়। - তুই কার সাথে কথা বলছিল, আমরা আসামী ধরতে এসেছি, তুই পালিয়ে যেতে ফোন দিলি-, বেচারা সহজ সরল মানুষ ফোন এগিয়ে দেয় দেখার জন্য। আবারও চর থাপ্পর, ভয়ে পানি সাঁতরে চলে যায় অন্যপ্রান্তে ততক্ষনে ৩জন সেখানে হাজির হয়ে কোমড়ে ধরি বাধে, ভয়ে অন্যছেলেদুটিও পালাতে চায়, তার মধ্য থেকে বড়টাকেও দড়ি বেধে নিয়ে যায় থানায়। সন্ধার সময় ছাড়া পায় তারা বিনিময় ১০হাজার ৪০০টাকা। মাসটি ছিল রমজান তারিখ ২৬। মনে মনে ভাবি আহারে আমাদের মুসলিম শাসক, রমজান মাসে গ্রামের দরিদ্র দুটি পরিবারের ১মাসের আহর কেড়ে নিল। যন্ত্রনায় কিছুদিন কাজ করতে পারবে না। ঈদে হয়তো বাচ্চাদের নুতুন কিছু কিনে দিতে পারবে না; সবাই যখন ঈদের আনন্দ করবে তখন তাকে বিছানায় শুয়ে বুটের লাথির যন্ত্রণা সহ্য করতে হবে। তার বাচ্চা ছেলে মেয়ে হয়তো বায়না ধরবে নতুন কাপড়ের, বেচারা যন্ত্রনায় নিরবে চোখের জল লুকাবে। হয়তো খাবার জুটবে হয়তো জুটবে না।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই জুন, ২০১৮ সকাল ১০:০৮
৪টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×