ধানমন্ডি থানার ওসি নাইমুল হাসান সাহেবের চোখ মুখ স্বাভাবিক করার চেষ্টা চুড়ান্ত ব্যর্থ হচ্ছে। সামনে বসে থাকা সরকারী গোয়েন্দা সংস্থার একজন তরুন অফিসার অনেকক্ষন ধরে বিথির ফাইলটাতে চোখ বুলিয়ে যাচ্ছে। ছবি গুলো খুটিয়ে খুটিয়ে দেখছে। সামনে রাখা চায়ের কাপ ছুঁয়েও দেখেনি সে। গত ক’সপ্তাহ ধরে চাঞ্চল্যকর বিথি হত্যা মামলা নিয়ে দেশে তোলপাড় হচ্ছে। সাংবাদিকদের যন্ত্রনায় টিকতে পারা যাচ্ছে না। নাইমুল সাহেবের রাতের ঘুম চলে গেছে। খুন হয়েছে যে বিথি সে একজন এমপির ৯ মাস বয়েসি শিশু সন্তান। নিজের বেডরুমে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয় বিথিকে। ঘুমন্ত অবস্থায় কেউ বালিশ চাপা দিয়ে মেরেছে নিস্পাপ শিশুটিকে। এই পৈশাচিক হত্যাকান্ডে হতবাক মানুষ। সবাই এর বিচার চায়। গোদের উপর বিষফোঁড়া, এমপির ছোট মেয়ে সে। ১১ বছর ব্যবধানে এই সন্তান তার। বিথির মার ঘন ঘন হিস্টিরিয়া হচ্ছে। আইসিইউ তে ভর্তি মহিলা। বিথির বাবা নুরুদ্দিন আলি মিডিয়ার সামনে কথা বলছেন না। এই পর্যায়ে থানা থেকে মামলা গোয়েন্দা বিভাগকে দেয়া হয়েছে। ধারনা করা হচ্ছে নুরুদ্দিন আলির সাথে শত্রুতাবসত এই হত্যাকান্ড ঘটানো হয়েছে। রাজনৈতিক কারন আছে কিনা তাও খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে।
গোয়েন্দা বিভাগের তরুন অফিসার রিমু। ভাল নাম সে কাউকে বলেনা। প্রায় ৪ বছর হল সে এখানে যোগ দিয়েছে। বেশ চাঞ্চল্যকর কয়েকটি কেস সল্ভ করে বেশ নামও কামিয়েছে। আজ সকালে থানায় এসে ওসির কাছ থেকে ফাইল নিয়ে পড়ছে সে। তার সামনে চা – নাশতা দিয়ে গেছে। সে তাকায়ওনি। প্রায় এক ঘন্টা ধরে এই অবস্থা। ওসি সাহেব বিরক্ত, কিন্তু এদের কিছু বলা যাবেনা। হঠাত মুখ তুলে চাইল রিমু।
- মারুফা নামে যাকে গ্রেফতার করেছেন, তার আলিবাই তো নড়বড়ে
- কিভাবে স্যার?
- উনি বাজারে গিয়েছিলেন ফিরেছেন ১১টার পরে। দেখেছে ফ্লাটের দারোয়ান, কেয়ারটেকার, সামনের দোকানী এবং দুজন ড্রাইভার, যাদের সবার বক্তব্য মিলে যায়। বিথির ফরেনসিক রিপোর্ট বলে খুন হয়েছে ১০টা নাগাদ। লাশ প্রথম দেখে কাজের মেয়ে ১১.৩০ এর পরে এবং তখন সে মারুফাকে রান্না ঘর থেকে ডেকে আনে। ঠিক?
- কাজের মেয়েকেও গ্রেফতার করেছি স্যার
- কিন্তু কাজের মেয়ের মোটিভ কি ?
- টাকাপয়সা
- তাহলে সে তো পালাত। বাড়ি খালি ছিল। নুরুদ্দিন সাহেব ছিলেন না। বিথির মা সকালে তার মায়ের বাসায় গিয়েছিলেন। বিথির বোন তিথি ছিল স্কুলে। সে না পালিয়ে রান্নাঘরে কি করছিল? তাছাড়া যে একটা বাচ্চাকে খুন করবে সে সারা রান্নাঘরে তরকারী ছড়িয়ে কুটতে বসবে। ক্রাইমসিন রিপোর্টে তো তাই দেখলাম। লাউ আধাকোটা, সিম কুচানো, চিংড়ি মাছ ধুয়ে রাখা...এসব কেউ খুনের প্ল্যানের সাথে করে?
- কেউ করিয়েছে স্যার। এরা গরিব মানুষতো। টাকার লোভ।
- চট করে সমাধানের আসবেন না নাইমুল সাহেব। এই কেস এতো সোজা না। অবশ্য জটিল ও না।
রিমু সিগারেট ধরালো।
- চা আবার আনতে বলুন। ঠান্ডা হয়ে গেছে।
মনে মনে চৌদ্দগুষ্ঠি উদ্ধার করতে করতে বেল টিপে আবার চায়ের অর্ডার দিলেন ওসি নাইমুল। তিন আঙ্গুলা ছেমড়ার ঢং দেখতে তার ভাল লাগছে না।
- নাইমুল সাহেব
- জ্বি স্যার
- মারুফা আর কাজের মেয়েটার রিমান্ড মঞ্জুর হয়েছে না?
- জ্বি
- আমি জিজ্ঞাসাবাদ করব। আজই
- জ্বি স্যার
চা এসেছে। রিমু চা শেষ করে কাজের মেয়েটিকে নিয়ে বসল। মেয়েটি কেদেই শেষ। সে ৫ বছর ধরে এই পরিবারে আছে। সে জান দিয়ে তিথি বিথিকে ভালবাসে। তিথি তো তার হাতেই মানুষ । তার জানের টুকরাকে সে মারতে পারে? ইত্যাদি ইত্যাদি। রিমু চুপচাপ শুনে গেল। এরপর কয়েকটা প্রশ্ন করল।
- তুমি সকাল কয়টায় উঠেছিলে?
- ৬টায়। আম্মা ডাইকা তুলল। কইলো আব্বায় ডাহার বাইরে যাইব। খানা দিতে।
- তারপর?
- আমি নাশতা বানায়া দিলাম। আব্বা ৭টা বাজে বাইর হইয়া গেল। আম্মা বিথিরে দুধ খাওয়াইয়া ঘুম পাড়াইল। তিথিরে আমি রেডি কইরা দিলাম। তিথিরে নিয়া মারুফা খালাম্মা চইলা গেল স্কুলে।
- কয়টায়?
- ৮টায়
- হুম্ম। তারপর?
- আম্মায় ৯টার দিকে বাইর হইয়া গেলে মারুফা খালাম্মা আমারে নিচে থেইকা ইন্টারকমে ফোন দিয়া কইল সে উপরে উঠবনা, একবারে বাজার নিয়া আসব, কিছু লাগব কিনা জিগাইল। আমি কইলাম রসুন আর আদা আনতে। এরমধ্যে একবার দেইখা আইলাম বিথি আপা ঘুমাইতেছে।
- কোথায়? দোলনায়?
- জ্বি না। বেবী কটে। আম্মার বেডের পাশে।
- আচ্ছা। তারপর?
- মারুফা খালাম্মা ১১টার দিকে আইলো। আমি রান্নাঘর থেইকা উইঠা দরজা খুইলা দিলাম। খালাম্মা কইল শিং মাছ আনছে। হে নিজে কুটব। আমি হেরে থুইয়া কাপড় ধুইতে যামু। খালাম্মা কইল বাজার গুছাইয়া বিথিরে উঠাইতে, গোসল দিব।
- তারপর তুমি গিয়ে বিথিকে মৃত দেখলে?
মেয়েটি হাউমাউ করে কেদে উঠল।
- ভাই। এমন পিচাশ কেডা কন? আমি এমন ফুলের মত শিশুটারে কেন মারুম কন? হায়রে ময়না পাখিটা মাত্র হাঁটা শিখতাছিল।
রিমু হাত নেড়ে ডিউটি অফিসারকে বলল মেয়েটাকে নিয়ে যেতে। এরপর মারুফার পালা। লম্বা ঘোমটা টেনে বসে আছে মহিলা।
- আপনি নুরুদ্দিন সাহেবের কে হন?
- বোন
- ছোট না বড়?
- ১ বছরের ছোট
- এখানে কেন এসেছেন?
- বেড়াতে
- কতদিনের জন্য?
- প্রায় ১ মাস ছিলাম। আরো কিছুদিন থাকব ভেবেছিলাম
- আপনার স্বামী কি করেন?
- ব্যবসা
- কিসের?
- দোকান আছে।
- কিসের দোকান?
- জেনারেল স্টোর।
- কোথায়?
- খুলনা শহরে
রিমু সিগারেট ধরাল।
- আপনি এ বাসায় প্রায়ই আসেন?
- না
- কত বছর পর এলেন?
- ৭/৮ বছর পর হবে
- কেন এই বিরতি?
- এমনি । আমরা গরিব। ভাই ব্যস্ত থাকে। মেয়েটা হল তাই দেখতে এলাম।
- মেয়েতো আগেও একটা আছে তাকে দেখতে আসেননি?
মারুফা চট করে রিমুর দিকে তাকিয়ে মাথা নামিয়ে নিল। রিমু সিগারেট এ লম্বা টান দিল।
- তিথি আপনার মেয়ে। না?
নিরবতা।
- বলুন তিথি আপনার মেয়ে?
- না
- মিথ্যা কথা বলবেন না। আমি সব খোজ করে। পেপার ওয়ার্ক করে এই কেস এ নেমেছি। আমি আমার টার্গেটের খুব কাছে। বলুন আপনি অপরাধিকে বাচাতে পারবেন না। আর আপনি নিজে অপরাধী হলেও মুক্তি নেই। বলুন । স্বীকার করুন। তিথি আপনার মেয়ে?
- (চোখে পানি, গলা জড়িয়ে গেল) হ্যাঁ
- কেন দিয়েছেন মেয়েকে?
- আমার ৪টা মেয়ে। ভাবীর বাচ্চা হচ্ছিলনা। তাই ছোটটাকে ভাই নিয়ে যায়। বদলে দোকান করে দেয়।
- মেয়ে বিক্রি করেছেন? বাহ
মারুফা চোখ মুছেন।
- মেয়ের বয়স তখন কত?
- ৪ মাস
- তারমানে মেয়ে জানে না
- না
- আমি যদি বলি জানে
- না। জানে না
- আমি যদি বলি, আপনি তাকে বলেছেন
- না । বলিনি
- স্বীকার করুন
- না। বলিনি
- বলেছেন। এবং এও বলেছেন এখন আর তাকে কেউ আদর করবে না কারন বিথি জন্মেছে। তাদের নিজেদের মেয়ে। আপনি তিথিকে খুলনা নিয়ে যাবেন বলেছেন। তাই না?
- না না।
মারুফা কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। রিমু তৃপ্তির সাথে আরেকটা সিগারেট ধরায়। ওসির ধারনা সে কিছু না জেনেই এসেছে। আসলে সে অনেক খোঁজ খবর করে এই কেস হাতে নিয়েছে। কেসটা শুরুতে তার যতটা জটিল মনে হয়েছিল তা নয়। এখন অনেক সহজ হয়ে গেছে।
- মারুফা ম্যাডাম
- জ্বি
- আপনি অনেক বড় একটা ভুল করেছেন । তা কি আপনি বুঝতে পারছেন?
- হ্যাঁ পারছি
- আমি দুঃখিত আমি আপনাকে সাহায্য করতে পারছিনা
- একথা কেন বলছেন?
- কারন আপনি এখন বলবেন আপনার মেয়েকে বাঁচাতে
মারুফা চুপ করে রইল। রিমু হাতের ইশারা দিতে ডিউটি অফিসার মারুফাকে নিয়ে গেল। ওসি নাইমুল হতভম্ব হয়ে বসেছিলেন এতক্ষন। কিছুই তার মাথায় ঢুকছিলনা। রিমু তার দিকে তাকিয়ে মোলায়েম করে হাসল।
- কি নাইমুল সাহেব। সব পরিষ্কার হল?
- না স্যার
- কেন? কেস তো সলভড
- কিভাবে?
- হুম্ম। তাহলে শুনুন। তিথি মারুফার ছোট মেয়ে। অর্থাভাবে ভাইয়ের কাছে মেয়েকে দিয়ে দেয় মারুফা ৪ মাস বয়েসে কারন নুরুদ্দিন সাহেবের সন্তান ছিলনা। তিথি বড় হয় তাদের মেয়ে হিসেবে। একমাত্র নুরুদ্দিন সাহেব, তার স্ত্রী, মারুফা ও তার স্বামী এই ৪ জন ছাড়া এটা কেউ জানত না। এমনকি তিথিও না। ১১ বছর পর নুরুদ্দিন সাহেবে দম্পতির একটি সন্তান হল। নাম রাখা হল বড় মেয়ের সাথে মিলিয়ে বিথি। এরমধ্যে তিথির আসল বাবা মায়ের অবস্থা উন্নতি হয়েছে। তারা চাইল নিজেদের মেয়েকে ফিরিয়ে আনতে কারন নুরুদ্দিন সাহেবের নিজের একটি সন্তান এখন আছে। সেই উদ্দেশ্যে মারুফা ঢাকায় এলেন। ইনিয়ে বিনিয়ে ভাই ভাবীকে একথা বলতেই তারা রেগে গেলেন।
রিমু দম নেবার জন্য থামল। ওসি নাইমুল আগ্রহ নিয়ে জিজ্ঞেস করল
- তাহলে প্রতিহিংসায় মারুফাই...
- না মারুফা না
- তাহলে?
- গল্পটা আগে শেষ করতে দিন। ভাই ভাবী না করলেও মারুফা হাল ছাড়লেন না। প্রতিরাতে গল্পের ছলে, ঘুম পাড়াবার ছলে তিথিকে সব জানালেন। এও বললেন এখন আর তিথির আদর থাকবে না এখানে কারন তারা আপন মেয়েকেই বেশী আদর করবেন। তিথিকে খুলনা নিয়ে যাবার কথাও বললেন তিনি।
রিমু চুপ করে গেল। নাইমুল আগ্রহ নিয়ে তাকিয়ে আছেন।
- তারপর কি হল স্যার?
- এখানে মারুফার একটু ভুল হল। তিথি অতিরিক্ত আদর পাওয়া একটি মেয়ে। নিজের জিদ মেটাতে সে অভ্যস্ত। বাবা মায়ের নতুন সন্তানের আগমনে সে এমনিতেই একটু বিরক্ত ছিল। এরমধ্যে উটকো ঝামেলার মত জুটল মারুফা। বলল সে এদের মেয়ে না। তার মেয়ে। খুলনা নিয়ে যেতে চাইল। বাবা মায়ের সাথে এই মহিলার কথা কাটাকাটি ও দেখল সে। আতংকিত হয়ে সে ভাবল, হয়ত সত্যি তার আদর কমে যাবে, হয়ত তার গাড়ি বাড়ি ঢাকা ছেড়ে খুলনা চলে যেতে হবে। সে চিন্তা করে দেখল, সব সমস্যার সমধান এই আপদ বিদায় করা। প্রায় প্রতিদিন ইংলিশ মুভি দেখে তিথি। একটা বাচ্চা মেয়ের জন্য আইডিয়া পাওয়া কোন ব্যাপার না। সে সেইদিন মারুফার সাথে স্কুলে গেল। মারুফা চলে যাবার পর গেট দিয়ে বের হয়ে রিকশা করে বাসায় এসে ডুপ্লিকেট চাবি দিয়ে বাসা খুলে ঢুকল। তখন কাজের মেয়েটি রান্না ঘরে। মায়ের বেডরুমে ঢুকে বিথিকে বালিশ চাপা দিয়ে মারতে সে খুব বেশী সময় নেয়নি। তারপর আবার স্কুলে চলে গেছে। ড্রাইভার, দারোয়ান, কেয়ারটেকার সব চোখ এড়িয়ে প্রায়ই সে বাইরে খেলতে যায়, কাজেই তাকে ওইদিনেও কেউ দেখেনি।
ওসি নাইমুল স্তব্ধ। একটু স্বাভাবিক হয়ে জিজ্ঞেস করল
- আপনার কাছে প্রুফ আছে স্যার
- হ্যাঁ। তিথির স্কুলের দারোয়ান বলেছে, সে হোম-ওয়ার্ক ফেলে এসেছে বলে বেড়িয়ে ছিল এবং তার স্কুলে রিপোর্টিং টাইম ৪০ মিনিট পড়ে। আরো আছে। ওইদিন তিথির কমিউনিকেটিভ ক্লাস ছিল। কোন হোম-ওয়ার্ক ছিলনা। তারমানে সে মিথ্যা বলেছে।
- মারুফার ব্যাপারটা?
- সে প্রথম থেকেই সন্দেহ করেছে। কিন্তু নিজের মেয়েকে বাঁচাতে মুখ খোলেনি।
- এখন কি করবেন স্যার?
- করা হয়ে গেছে
- মানে?
- তিথিকে গোয়েন্দা অফিসে আনার জন্য সাদা পোশাকে মহিলা অফিসার গেছে। ওর বাবাকেও খবর দেয়া হয়েছে।
৩ ঘন্টা পর
রিমু টেবিলের এক কোনায় বসা। তিথি হাতে ডল নিয়ে বসে আছে অন্য প্রান্তে। দুপাশে দুজন সাদা পোশাকের মহিলা অফিসার এবং এক কোনায় ওসি নাইমুল। তিথি এদিক ওদিক চেয়ে বলল
- বাবা কই?
- আসবে
- আচ্ছা
- তুমি বিথিকে পছন্দ করতেনা তিথি
- না
- কেন
- খালি কাঁদে
- এখন তো আর কাঁদবে না
- না
- কেন?
- মেরে ফেলেছি যে
ওসি নাইমুল হতভম্ব হয়ে রিমুর দিকে তাকালেন। কথা বার্তা রেকর্ড হচ্ছে।
- কেন মারলে?
- ও থাকলে বাবা মা আমাকে খুলনা পাঠিয়ে দেবে। আমি আমার ফ্রেন্ডদের মিস করব
১১ বছরের একটি মেয়ের অর্থহীন কথা। কেমন বেনী দুলিয়ে কিসব বলছে। রিমু দীর্ঘশ্বাস ফেলল। তারপর ওসির দিকে তাকিয়ে বলল।
- ওকে আপাতত আশ্রয় কেন্দ্রে রাখুন। আমরা রিপোর্ট দেই । তারপর দেখা যাক।
তিথিকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। রিমু সিগারেট ধরিয়ে থানার বারান্দায় এসে দাড়াল। পেছনে ওসি নাইমুল খুক করে কেশে উঠল।
- কিছু বলবেন ওসি সাহেব?
- আচ্ছা স্যার । আপনি কিভাবে এই বাচ্চা মেয়েটাকে সন্দেহ করলেন? আমাদের তো মাথায় আসেনি কারও।
- আমার ক্লু ছিল একটাই।
- কি?
- বাচ্চাটা সবসময় ঘুমায় বেবীকটে। তার মা বা কাজের মেয়ে খাওয়াতে হলে শুধু তাকে বিছানায় নিয়ে আসেন। সেদিনও সে বেবীকটে ঘুমাচ্ছিল। কিন্তু তার লাশ পাওয়া যায় বিছানায়। এর মানে একটাই, এমন কেউ কাজটা করেছে, যে বেবীকটে বালিশ চাপা দিতে পারবেনা। বেবীকট ৪ ফিট উঁচু। তাই যে কাজটা করেছে সে বেবীকট থেকে বিথিকে তুলে বিছানায় শুইয়ে তারপর করেছে। এমন কেউ যে ৪ ফিটের কম বা সমান। এরকম একজনই আছে ওখানে। তিথি।