সবুজের খরা যুক্ত এই কংক্রিটের শহরের কোণে এক শিউলি গাছ ছিল। তার ডালে বাসা বেধেছিল এক টুনটুনি পাখি। খুব ভাব হয় শিউলি ফুল আর টুনটুনি পাখির। হৃদয়ের লেনাদেনাও হয় দিনে দিনে।
শিউলি -ফুড়ুৎ ফুড়ুৎ উড়ে চলে যাও। উপেক্ষার বেড়ী পরাও। বোঝ?
টুনটুনি - ছি ছি! উপেক্ষা হবে কেন? ব্যস্ততা ।
- তোমার বুকে করে আমায় সমুদ্র দেখাবে? পাহাড় দেখাবে? নদী দেখাবে?
- এখন ব্যস্ত যে।
-আচ্ছা, আমায় ‘ভালবাস’ তুমি?
- ও শব্দের অর্থ জানি না। তবে বুকের ভেতর যে মায়ার নদী আছে, তার দুকূল ছাপিয়ে পড়ে তোমার জন্য। ইচ্ছে করে আমার কুঁড়ে ঘরে তোমাকে পূর্ণিমার চাঁদ করে রাখি। আর সে চাঁদের জ্যোৎস্নায় ডুবে, কাটিয়ে দেয় একটা টুনটুনি জীবন। শিশির বুকে তোমাকে দেখলে আমার ঘোর লাগে!
- সারারাত কান্নার জল জমে থাকে বুকে। আর তুমি তাকে শিশির বল!
-তাহলে তোমার কান্নাই আমাকে মুগ্ধ করে।
- হাসালে!! আচ্ছা, একে কি ভালবাসা বলে?
- বাসা বুনছি। এখন ব্যস্ত!
-প্রয়োজন কি বাসার! তুমি না বলেছ আমার আখির অতলে স্বেচ্ছা নির্বাসন নেবে। আমার চোখের তারা হয়ে বসত কোরো না হয়?
- তোমার ঘ্রাণ আমায় মাতাল করে!!
- ক্ষণজীবী শিউলি আমি। হারানোর ভয় করে না?
- এখন আমি ব্যস্ত।
-আমাকে স্বপ্ন দেখাবে? সুখতারা ছোঁয়ার স্বপ্ন?
-এখন আমি ব্যস্ত।
এক অশুভ বিকেলে নির্দয় দমকা হাওয়ার ধাক্কায় শিউলি ঝরে যায়। গোধূলির রক্ত আভা মুছে গেলে, সবুজ ঘাসের ভীড়ে টুনটুনি আর শিউলিকে খুঁজে পায় না।
ঝরে যাওয়ার আগে শিউলি চিৎকার করে বলে যায়! টুনটুনি, পরজন্মে আমি ব্যস্ততা হব। তখন আমায় নিয়ে ঘর বেধ তুমি!
ছবি সূত্রঃ view this link
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে অক্টোবর, ২০১৭ রাত ৯:১০