নারীরা কেমন স্বামী পছন্দ করে এই কথার উত্তর অবস্যই এক কথায় শেষ করা যাবেনা কারণ নারীদের চাওয়া হচ্ছে অফুরন্ত । তাদের প্রত্যাশা স্বামী যেন বহু গুনের অধিকারী হয় পক্ষান্তরে পুরুষদের চাওয়া নারীদের ন্যায় বিশাল না হলেও এই উপমহাদেশসহ সমগ্র মধ্যপ্রাচ্যের মুসলীম পুরুষেরা মনে প্রানে কামনা করে তার হবু প্রিয়তমা স্ত্রী যেন সতীত্বপূর্ন, কুমারী, বনলতাবিশেষ রমনীর গুনে গুনান্বিত হয়। আর তখুনি একজন ভাল মুসলীম স্বামীর জন্য হতাশা ও দুঃখজনক বিষয় হয়ে দাঁড়ায় যখন এক সতীত্ব বিসর্জন দেয়া নারী বাসর রাতে কুমারী নারীর ভান করে স্বামীকে ধোঁকা দেয়, তার সাথে প্রতারণা করে।
আজকাল মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে স্ত্রীরোগ চিকিৎসা সংক্রান্ত ক্লিনিকে হাইমেনোপ্লাস্টি বা সতিচ্ছদ সংক্রান্ত চিকিৎসা দেয়া হয়। চিকিৎসা বিজ্ঞানের অন্যান্য চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানগুলোর ন্যায় এটিও সেখানে একটি লাভজনক ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান। এ সকল ক্লিনিকে শৈলচিকিৎসক অস্ত্রপাচারের মাধ্যমে মানব দেহে ঝিল্লি পুনস্হাপন বা পূর্নগঠন করে থাকে। সাধারনত এ সমস্ত অস্ত্রপাচারের জন্য রোগীর ৩০ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত ব্যয় হয়।
এ যবত মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর প্রতিদ্বন্দ্বী বিহীন এই বাজারটিতে ক্লিনিকগুলো একচেটিয়া রমরমা ব্যাবসা চলিয়ে আসছিল। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক বাজারে অপ্রতিরুদ্ধ প্রতিদ্বন্দ্বী সম্প্রসারনবাদী চীন মধ্যপ্রাচ্যের প্লাস্টিক সার্জারীর বাজারে প্রবেশ করে এবং লোভজনক এই ব্যাবসার সাথে জড়িত ক্লিনিকগুলোর অস্তিত্ব সংকটের মধ্যে ফেলে দেয়। ইতিমধ্যে চিনের " জিজিমো" কোম্পানী তাদের আকর্ষনীয় বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে কম খরচে " কৃতিম কুমারী সতিচ্ছদ " উৎসর্গ করার ঘোষনা দেয়। জিজিমো কোম্পানী তাদের ওয়েব সাইটেও বিক্রয় প্রস্তাবটি জনসাধারন্যে, ব্যাপকভাবে প্রচার করা হয়। " সতীত্ব হারানোর ভয়ে ভীত হবার কারণ নেই , কৃতিম কুমারী সতিচ্ছদ এর কৃপায়, যখনই তুমি চাও মাত্র দুই হাজার টাকার বিনিময়ে অতীত জীবনের বাসর রাত পুনরায় যাপন করতে পারবে ।
চিনের জিজিমো কোম্পানীর পক্ষ থেকে ঢালাও ভাবে দেয়া হিমেন বিষয়ক বিজ্ঞাপনটি মধ্যপ্রাচ্যের মুসলীম সমাজে বিশেষ করে ইসলামী আলেম সমাজে ব্যাপক প্রতিক্রয়ার সৃস্টি করে এবংএর ফলশ্রুতিতে মিশরের ইসলামী আলেম সমাজ চীনের তৈরী কলসরঞ্জাম আমদানীর বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে উঠে । চিরচারিত ঐতিহ্য ভঙ্গ করে সতীত্ব বিসর্জন দেয়া নারী তার গচ্ছিত অর্থের বিনিময়ে হাইমেন সেলাই করে বা উদ্ভাবিত বস্তুর প্রয়োগ করে বাসর রাতে কুমারী নারীর বেশে স্বামীর বিস্বাসের উপর আঘাত হানতে না পারে কিংবা প্রতারণা করতে না পারে সেই লক্ষে মিশরের ইসলামী গবেষনা কেন্দ্রের সদস্য ড. মোয়াতি বায়োমী ফতোয়া জারীর মাধ্যমে চীনের তৈরী সকল কল সরঞ্জাম আমদানী বন্ধের ঘোষনা দেন। তিনি আমদানীকারকদের অভিযুক্ত করে বলেন, মেয়েরা তাদের সতিত্ব পুনরুদ্ধার করতে পারবে এরকম ভ্রান্ত আস্বাস দিয়ে তাদেরকে অবৈধ যৌন সম্পর্ক সৃস্টিতে উৎসাহিত করা হচ্ছে। ইসলামী গবেষনা কেন্দ্রের অপর এক প্রভাবশালী নেতা ইমাম ইউসুফ বাদাবী আমদানীকারক সহ এই ব্যাবসায় জড়িত সকলকে ধরে বেঁধে চাবুক মেরে দেশ থেকে বহিস্কারের দাবী জানান।
অপরদিকে নারীর সতীত্ব নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে পাকিস্তানী নারী দার্শনিক রাফিয়া জাকারিয়া কুমারীত্ব বিসর্জন দেয়া নারীদের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন। মুসলীম নারী অধিকার সংস্হার সাথে জড়িত এই পাকিস্তানী নারী দার্শনিক দুঃখের সাথে বলেন, অসতি বা কুমারীত্ব হারানো নারী সমাজে অপয়া , নোংরা, অপবিত্র এবং বিবাহের অযোগ্য এই ধরনের পৌরনিক, অবাস্তব চিন্তাকে সমাজে চিরস্হায়ী করা হয়েছে। প্রসঙ্গ ক্রমে তিনি ইসলামের ইতিহাস স্মরণ করে বলেন, আমাদের অবস্যই স্মরণ রাখতে হবে যে, আমাদের নবী হযরত মহাম্মদ স. এর প্রথম স্ত্রী বিবি খাদিজা ছিলেন একজন বিধবা।